রহমত নিউজ ডেস্ক 06 May, 2023 09:43 PM
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র সহ্য করা হবে না, তিস্তা আমার নদী, আমাদের নদী। তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন আমাদের সবার দাবি, এটা আমাদের প্রাণের দাবি। এর মধ্যে যারা নিরাপত্তা, ভূ-রাজনীতি ও চীন-ভারতের সম্পর্কের প্রশ্ন খুঁজে, আমি তাদের বলব এই খেলা আমাদের নিয়ে লেখবেন না। তিস্তা মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন নিয়ে নতুন কোনো চক্রান্ত, বাধা আমরা মানব না। আগামী জাতীয় বাজেট অধিবেশন আমরা সংসদেও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য অর্থ বরাদ্দ চাইব।
আজ (৬ মে) শনিবার বিকালে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন, তিস্তা চুক্তি সই ও রংপুর বিভাগের উন্নয়ন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ আয়েজিত গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। গণসমাবেশে তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শফিয়ার রহমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য গেরিলা লিডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম কানু প্রমুখ। গণসমাবেশের উদ্বোধক রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।
উত্তর জনপদের মানুষের জীবন-জীবিকা, কৃষি ও প্রকৃতি বাঁচাতে দ্রুত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে মেনন বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজেই উদ্যোগ নিয়েছিলেন। আমরা তার উদ্যোগে আনন্দিত হয়েছিলাম। কিন্তু আফসোস সেই তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে আজ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি। আজ তিস্তা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। চরের ওপর চর পড়েছে। আর ভাঙনের পর ভাঙনে তিস্তাপাড়ের মানুষ আজ নিঃস্ব। বৈষম্য দূরীকরণ, দারিদ্রতার হার কমানোসহ নদী নির্ভর উত্তরাঞ্চলকে মরুকরণ থেকে বাঁচাতে তিস্তা চুক্তির পাশাপাশি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ছাড়া বিকল্প কোনো পথ খোলা নেই। এবার জাতীয় বাজেটে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে অর্থ বরাদ্দের জন্য জোর দাবি জানান তিনি।
তিস্তা নদীর সুরক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কথা শুনে আসছি। আজ পর্যন্ত তার বাস্তবায়ন শুরু হয়নি। অর্থ বরাদ্দ হয়নি। আর কিছুদিন পর ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপিত হবে। মাত্র সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার জন্য তিস্তা মহাপরিকল্পনা আলোর মুখ দেখবে না, এটা আমরা বিশ্বাস করি না। তিস্তার সঙ্গে রংপুর অঞ্চলের কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িত। আমরা চীন-ভারত বুঝি না। নিজস্ব অর্থায়নে এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে আসন্ন বাজেটে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে। যদি এটি করা না হয় তাহলে অচিরেই বৃহত্তর আন্দোলন ও সংগ্রামের কর্মসূচি দেওয়া হবে। এছাড়া তিস্তা নদী বেষ্টিত রংপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও গাইবান্ধা জেলা থেকে আগত তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দের পাশাপাশি সংহতি প্রকাশ করে বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এবং রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
গণসমাবেশ থেকে আগামী মাসের পহেলা জুন রংপুর বিভাগীয় শহরসহ তিস্তা বেষ্টিত পাঁচ জেলায় তিস্তা মহাপরিকল্পনাসহ ছয় দফা বাস্তবায়নের দাবিতে সকাল দশটায় ৫ মিনিট স্তব্ধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এছাড়া দাবি আদায়ের সপক্ষে জনমত সৃষ্টিতে প্রতিটি জেলায় সভা-সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
এই এলাকার অন্যান্য সংবাদ দেখতে ক্লিক করুন: রংপুর