রহমত নিউজ 29 March, 2023 03:55 PM
গত ছয় মাসে একটি পরিবারের খরচ বা ব্যয় বেড়েছে ১৩.১ শতাংশ। যার মধ্যে গ্রাম এলাকায় ১২.৪ শতাংশ এবং শহর এলাকায় ১৩.৯ শতাংশ।
আজ (২৯ মার্চ) বুধবার রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত ‘কেমন আছেন নিম্ন আয়ের মানুষ? সানেমের জরিপের ফলাফল’ শিরোনামের অনুষ্ঠানে জরিপের ফলাফলের এসব তথ্য উপস্থাপন ও বিশ্লেষণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান। অনুষ্ঠানে সানেমের গবেষণা পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশাসহ সানেমের গবেষকরা উপস্থিত ছিলেন।
ড. সেলিম রায়হান আরো বলেন, এ বেড়ে যাওয়া খরচ এসব মানুষদের বিভিন্নভাবে অ্যাডজাস্ট করতে হয়েছে। এসময় খাদ্যে জাতীয়ভাবে খরচ বেড়েছে ১৭.২ শতাংশ। এছাড়া শহর অঞ্চলে এ খরচ বেড়েছে ১৯ শতাংশ এবং গ্রামাঞ্চলে বেড়েছে ১৫.৫ শতাংশ। এ পরিস্থিতি মোকাবেলা করছেন কিভাবে এমন প্রশ্ন করেছিলাম আমরা ওইসব সাধারণ মানুষদের। প্রশ্নের জবাবে ৯০.২ শতাংশ পরিবার বলেছে তারা তাদের খাদ্যভাসে পরিবর্তন এনেছেন। ধার করেছেন ৭৩.৮ শতাংশ, ৫৫.৯ শতাংশ বলেছে নন ফুড আইটেমে খরচ কমিয়ে এনেছেন। সঞ্চয় করার সুযোগ কমিয়ে এনেছেন ৫৫.৫ শতাংশ, ওভার টাইম কাজ করছেন ৩৯.৩ শতাংশ, ৩৫.৩ শতাংশ তাদের সঞ্চয় যা ছিল তা থেকে অতিরিক্ত খরচ করছেন। নিম্ন আয়ের মানুষের সঞ্চয়ের সুযোগ এমনিতেই কম তার ওপর তাদের এ টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে বর্তমান পরিস্থিতিতে। অন্যদিকে শহর এবং গ্রামের মধ্যে বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় খাদ্য পরিবর্তন করেছেন ৯৪.৪ শতাংশ আর গ্রামে সেটা ৮৬ শতাংশ। অন্যদিকে, পরিস্থিতি মোকাবেলায় ধার করেছেন শহরের ৭৩.৮ শতাংশ এবং গ্রামের ৭৩.৮ শতাংশ।
আয়োজকরা জানান, বৈশ্বিক ও জাতীয় বিভিন্ন বিষয়ে বিগত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ জীবন ও জীবিকা নির্বাহ করতে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছেন। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য এ চ্যালেঞ্জ আরও বেশি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে ব্যয় বৃদ্ধি, যাতায়াতের বর্ধিত খরচ ইত্যাদি বিষয় নিম্ন আয়ের মানুষদের দুর্দশা বাড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে স্বল্প আয়ের পরিবার বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করছেন। এ পরিস্থিতি বাংলাদেশের নিম্ন আয়ের মানুষ কীভাবে মোকাবেলা করছেন এবং সামনের দিনগুলোর বিষয়ে তাদের ভাবনা কী- তা বিশদভাবে বোঝার জন্য সানেম নিম্ন আয়ের থানাগুলোর ওপর একটি জরিপ পরিচালনা করেছে। ২০২৩ সালের মার্চ মাসের ৯ তারিখ থেকে ১৮ তারিখ পর্যন্ত পরিচালিত এ জরিপে ১৬০০ থানার নিকট থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। বাংলাদেশের আটটি বিভাগীয় জেলা ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, রাজশাহী, রংপুর, বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রামে এ জরিপটি পরিচালনা করা হয়েছে।