মূল পাতা আন্তর্জাতিক ইউরোপ ইউরোপে অবৈধভাবে আসা ৩৩ হাজার ৭২৯ বাংলাদেশির আবেদন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক 27 February, 2023 09:45 PM
২০২২ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় ১০ লাখ অভিবাসী ইউরোপীয় ইউনিয়ন-ইইউর দেশগুলোতে আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। ২০১৬ সালের পর যা সর্বোচ্চ। ২০০৮ সাল থেকে পাওয়া হিসাবে সর্বোচ্চ আশ্রয় আবেদনের রেকর্ড গড়েছেন বাংলাদেশিরাও। ডয়চে ভেলের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। গত বছর ইইউ প্লাস (ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ দেশ, নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ড) দেশগুলোতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ৯ লাখ ৬৬ হাজার অভিবাসী আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। ২০২১ সালের বছরের চেয়ে ৫০ শতাংশ বেশি। আর গত ৬ বছরের মধ্যে তা সবচেয়ে বেশি।
গত বুধবার ইইউতে আশ্রয় আবেদন সংক্রান্ত সংস্থা-ইইউএএ এই পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। ২০২২ সালে প্রায় ৪০ লাখ ইউক্রেনীয় সাময়িক সুরক্ষার আওতায় ইউরোপে বসবাসের অনুমতি পেয়েছেন। তাদের সুরক্ষা দিতে গোটা আশ্রয় আবেদন প্রক্রিয়ায় চাপ পড়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে নতুন আগত লোকজনকে জায়গা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
অনিয়মিতভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্তে প্রবেশের পর সংশ্লিষ্ট দেশে আশ্রয়ের আবেদন করতে পারেন অভিবাসীরা। প্রথমবার তা প্রত্যাখ্যান হলে পুনর্বিবেচনার আবেদন করতে পারেন তারা। ২০২২ সালে ৮ লাখ ৮৫ হাজার মানুষ প্রথমবার আশ্রয়ের আবেদন জমা দিয়েছেন। পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছেন প্রায় ৮০ হাজার জন। এদের মধ্যে প্রায় ৪৩ হাজার মানুষই অভিভাবকহীন অপ্রাপ্তবয়স্ক। ২০১৫ সালের পর যা সর্বোচ্চ। গত বছর আশ্রয় চাওয়া ব্যক্তিদের দুই-তৃতীয়াংশই সিরীয় (১ লাখ ৩২ হাজার) এবং আফগানরা (১ লাখ ২৯ হাজার)। ২০১৬ সালের পর দেশ দুটির নাগরিকদের আবেদনের সংখ্যা সর্বোচ্চ। তৃতীয় স্থানে আছেন তুরস্কের মানুষ। ৫৫ হাজার আবেদনকারী ছিলেন ইইউ‘র সীমান্তবর্তী দেশটির। চতুর্থ ও পঞ্চম অবস্থানে লাতিন আমেরিকার ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার মানুষ। দেশ দুটির আশ্রয় আবেদনকারীর সংখ্যা যথাক্রমে ৫১ হাজার এবং ৪৩ হাজার।
২০২১ সালে ২০ হাজার বাংলাদেশি ইইউ প্লাস দেশগুলোতে আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন। এবার এই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। ২০২২ সালে অবৈধভাবে আসা ৩৩ হাজার ৭২৯ বাংলাদেশির আবেদন করেছেন। পাকিস্তানের নাগরিকদের পর যা সপ্তম। ইইউএএ‘র তথ্য অনুযায়ী- ২০০৮ সালের পর তুর্কি, ভেনেজুয়েলান, কলম্বিয়ান, বাংলাদেশি ও জর্জিয়ানদের আবেদন সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। সাধারণত, আবেদনের পর সিদ্ধান্ত পেতে অভিবাসীদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় করতে হয়। তবে ২০২২ সালে ৬ লাখ ৩২ হাজার আবেদনেরই সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। যার মধ্যে ৩ লাখ ৭৯ হাজার বা প্রায় অর্ধেক আবেদনই প্রত্যাখ্যান করেছে কর্তৃপক্ষ৷ এছাড়া ১ লাখ ৪৭ হাজার শরণার্থী হিসেবে এবং ১ লাখ ৬ হাজার সাবসিডিয়ারি প্রটেকশন বা সহায়ক সুরক্ষার আওতায় থাকার অনুমতি পেয়েছেন।
উল্লেখ্য, নিজ দেশে বর্ণ, ধর্ম, জাতীয়তা, রাজনৈতিক কারণে নির্যাতনের শিকার কিংবা জীবন হুমকির মুখে পড়লে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ইউরোপের দেশগুলোতে সুরক্ষা চেয়ে আবেদন করতে পারেন তিনি।