রহমত নিউজ 13 February, 2023 07:14 PM
তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে দেশে প্রতিদিন প্রায় ৪৫০ জন মানুষ মারা যাচ্ছেন বলে জানিয়ে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন-বিএমএর নেতারা বলছেন— হৃদরোগ, ক্যানসার, বক্ষব্যাধি ও অন্যান্য অসংখ্য প্রতিরোধযোগ্য রোগ এবং মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হলো তামাক। এ অবস্থায় স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের বিকল্প নেই। কারণ বিদ্যমান আইনে কিছু দুর্বলতা রয়েছে। তাই, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে হবে।
আজ (১৩ ফেব্রুয়ারি) সোমবাররাজধানীর তোপখানা রোডের বিএমএ ভবনের শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলন সভাকক্ষে বিএমএ ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত ‘প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জন: তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে অগ্রগতি ও পরবর্তী করণীয়’ শীর্ষক সভায় এ কথা জানান বক্তারা। বিএমএ’র ঢাকা মহানগরের সহ-সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার সভাপতিত্বে ও দপ্তর সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মোহা. শেখ শহীদ উল্লাহ’র সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন, বিএমএ'র কার্যকরী পরিষদের সদস্য ডা. মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন চৌধুরী, ডা. মো. জামাল উদ্দিন খলিফা, ডা. এএইচ এম জহুরুল হক, ডা. মো. আবু রায়হান, ডা. মো. মাহবুবুর রহমান, বিএসএমএমইউ’র অধ্যাপক ডা. মোস্তফা জামান প্রমুখ।
সভায় মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের এপিডেমিওলোজি অ্যান্ড রিসার্চের বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে প্রায় পৌনে চার কোটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। কর্মক্ষেত্রসহ পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন ৩ কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। তামাকজাত দ্রব্যের বহুল ব্যবহারে হৃদরোগ, ক্যানসার, বক্ষব্যাধি ও অসংখ্য প্রতিরোধযোগ্য রোগ এবং মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। তামাকের এসব ক্ষতি থেকে জনস্বাস্থ্যকে রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করা প্রয়োজন।
বিএমএ সভাপতি ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, তামাক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বিষয়টি সবাই জানেন। তারপরও মানুষ তামাক ব্যবহার করছেন। তাই সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে তামাকবিরোধী প্রচার-প্রচারণা আরও জোরদার করতে হবে। সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে তামাকবিরোধী প্রচারণা পৌঁছে দিতে হবে।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. খন্দকার আব্দুল আউয়াল (রিজভী) বলেন, বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করতে হবে। এতে অবশ্য অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ তামাকবিরোধী কাজ করে যাচ্ছে। এবার ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বিদ্যমান আইনের ছয়টি দুর্বলতা চিহ্নিত করে সেগুলো সংশোধনের দাবি জানানো হয়েছে। দাবিগুলো হলো— পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান নিষিদ্ধ করা, তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়স্থলে তামাকজাত পণ্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির যে কোনো ধরনের সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেটের মতো এমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্ট নিষিদ্ধ করা, তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট, মোড়ক, কার্টন বা কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা ও বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা, মোড়কবিহীন বিক্রি নিষিদ্ধ করা।