রহমত নিউজ ডেস্ক 05 February, 2023 10:15 PM
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, তাহলে এ অপপ্রচারগুলো নৌকার বিরুদ্ধে, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সারা জীবনই ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ তার জন্মলগ্নে বলেছিল, আওয়ামী লীগ কুরআন সুন্নাহ্ বিরোধী কোনো কিছু করবে না। আজও আওয়ামী লীগ সেই ঠিক একই জায়গায় আছে, কুরআন সুন্নাহ বিরোধী কোনোদিন কোনকিছু করেনি, করবেও না। যেহেতু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ, যেহেতু শেখ হাসিনার সরকারকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেবার অনেক রকমের চেষ্টার পরও কিছুই হচ্ছে না। তাই আজকে এই অপশক্তি আবার বইয়ের ওপর সওয়ার হয়েছেন। বইয়ের ওপর সওয়ার হয়ে তারা সরকার বিরোধী অপতৎপরতায় নেমেছেন।
আজ (৫ ফেব্রুয়ারি) রবিবার বিকালে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার পিয়ার আলী কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ ও নবীনবরণ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পিয়ার আলী কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে গাজীপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি, কলেজের পরিচালনা পর্ষদের বিদ্যুৎসাহী সদস্য অ্যাড. মোশারফ হোসেন ভুঁইয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন সবুজ। এসময় নানা দিক তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন কলেজের অধ্যক্ষ আবুল খায়ের।
শিক্ষমন্ত্রী বলেন, একটা গোষ্ঠী আছে নষ্ট করে ফেলল, ধ্বংস করে ফেলল। ৫০ এর দশকের ৫৪ এর নির্বাচনের সময় বলা হয়েছিল নৌকায় ভোট দিলে বিবি তালাক হয়ে যাবে। আপনাদের জানা আছে কারও বিবি তালাক হয়েছিল? একজনেরও বিবি তালাক হয় নাই, নৌকায় ভোট দেওয়ার কারণে। ৯০ এর দশকে বলেছিল নৌকায় ভোট দিলে ফেনী পর্যন্ত ভারত হয়ে যাবে, মসজিদে নাকি উলু ধ্বনি উঠবে। আজকে যারা ফেনীতে থাকেন, তারা কি ভারতের নাগরিক না বাংলাদেশের নাগরিক? নাকি বাংলাদেশের নাগরিক? তারা সকলেই এখন স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলাদেশের নাগরিক।
তিনি বলেন, একদম প্রথম অভিযোগ উঠল নবম-দশম শ্রেণির ইতিহাস বইতে ভুল। একটা তথ্যগত ভুল ছিল, সঙ্গে সঙ্গে আমরা সংশোধন করেছি। আরও কয়েকটি বলা হয়েছিল ভুল। সঙ্গে সঙ্গে সেগুলোও সংশোধনীতে চলে গিয়েছে। নবম দশম শ্রেণির বইগুলো কিন্তু ২০১৩ সালের বই। এই বইগুলো ১০ বছরে আমাদের নিশ্চয়ই নজরে আসার উচিত ছিল কারও নজরে আসেনি। আসলে কোনো শ্রেণির বই লেখক এবং সম্পাদক তারা ছাড়া আর শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী ছাড়া আর তো কেউ পড়ে না। আর এবার সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাই। এবার সবাই বই পড়ছেন। বই পড়ে খুঁজে খুঁজে খুঁজে ভুলটুল সব বের করছেন। আপনাদের প্রতি আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা। বইয়ে যা নেই আপনারা বললেন তা আছে, মিথ্যাচার করলেন। বইয়ে কোথাও বলা নেই বানর থেকে মানুষ হয়েছে, বরং বলা আছে যে বানর থেকে মানুষ হয়েছে এ কথা ঠিক নয়, তিনবার বলা আছে একবার নয়। আরও অনেক প্রশ্ন তুললেন। সবগুলোই মনগড়া। কি কারণে, কেন হঠাৎ করে নতুন শিক্ষাক্রমের ওপরে আপনাদের এই আগ্রাসন।
তিনি আরো বলেন, আমাদের মূল চেষ্টা যেইটি, আমাদের সমাজের শিক্ষার্থীদের চিন্তা করতে নিরুৎসাহিত করা হতো। প্রশ্ন করতে নিরুৎসাহিত করা হতো, আমরা গণতন্ত্রের কথা বলি সারাক্ষণ আর ঘরের মধ্যেই গণতন্ত্রকে জায়গা দেই না, শ্রেণিকক্ষে গণতন্ত্রকে জায়গা দেই না। বাচ্চাদের প্রশ্ন করতে দেই না, এক প্রশ্নের পরে দুই প্রশ্ন করলে আমরা বড়রা বলি বেশি কথা বলে, এত প্রশ্ন কেন বলে। আমরা নতুন শিক্ষাক্রমে বলেছি শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন করবে যত প্রশ্ন করবে তত বেশি শিখবে। তার অনুসন্ধিৎসু মন যেটাকে উস্কে দিতে হবে, সে শিখবে সব জায়গা থেকে শিখবে। এখন জ্ঞানের উৎস শুধুমাত্র একজন শিক্ষক নন। এখন চতুর দিকে জ্ঞানের বহু উৎস আছে। সামনে ফুল আছে,পাতা আছে, গাছ আছে সে সব কিছু থেকে শিক্ষা নেবে।