রহমত নিউজ ডেস্ক 03 February, 2023 07:08 PM
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, শিক্ষা সিলেবাসের অসঙ্গতি, ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে আমরা ধারাবাহিকভাবে দীর্ঘদিন যাবৎ আন্দোলন করে আসছি। আমাদের এ ধারাবাহিক কার্যক্রমকে শিক্ষামন্ত্রী ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে মিথ্যাশ্রয়ী সাব্যস্ত করার চেষ্টা করেছিলো। এখন শিক্ষামন্ত্রীই মিথ্যুক প্রমাণিত হয়েছেন। এখন আবার পাঠ্যবই নিয়ে আন্দোলনকারীদের প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষামন্ত্রী। আমরা বলে দিতে চাই, শিক্ষামন্ত্রী নিজেই প্রতিহত হয়ে যাবে। অতএব শিক্ষামন্ত্রী এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে পারেন না।
আজ (৩ ফেব্রুয়ারী) শুক্রবার বাদ জুমা রাজধানীর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে ডেনমার্ক ও সুইডেনে পবিত্র কোরআনে অগ্নিসংযোগ এবং পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িক উস্কানি, তথ্য ও ইতিহাস বিকৃতি, ধর্ম বিরোধী মতবাদের অনুপ্রবেশ, বিজাতীয় সংস্কৃতির আধিপত্য ও ইসলামকে হেয় করার প্রতিবাদ এবং পাঠ্যপুস্তক সংশোধন করার দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ ইমতিয়াজ আলম, কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, ঢাকা মহানগর উত্তর সেক্রেটারি মাওলানা আরিফুল ইসলাম, দক্ষিণ সেক্রেটারী ডা. শহিদুল ইসলাম, হাফেজ জয়নুল আবেদীন, কেএম শরীয়াতুল্লাহ, মুফতী ফরিদুল ইসলাম প্রমুখ। বিক্ষোভ শেষে রাজধানীতে একটি বিশাল মিছিল বায়তুল মোকাররম থেকে পল্টন হয়ে বিজয়নগরে সমাপ্ত হয়।
মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে অগ্নিসংযোগ করে তাবৎ আল্লাহদ্রোহী শক্তিগুলো বিশ্বব্যাপী অশান্তির দাবানল জ্বালিয়ে দিয়েছে। সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে এবং ডেনমার্কে পবিত্র কুরআন পোড়ানোর এ ঘটনা সারাবিশ্বের মুসলমানদের মনে আঘাত দিয়েছে। কুরআন অবমাননাকারী গোষ্ঠী বিশ্বশান্তির জন্য মারাত্মক হুমকির। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিকে জবাবদিহিতার আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সেই সাথে বাংলাদেশ সরকারকে সংসদে নিন্দাপ্রস্তাব পাশ করতে হবে এবং রাষ্ট্রদূতদের ডেকে প্রতিবাদ জানাতে হবে।
তিনি বলেন, ২০২৩ এর মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তকে জনগণের বোধ-বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও জাতীয় স্বার্থকে উপেক্ষা করে সাম্প্রদায়িক উস্কানি, তথ্য ও ইতিহাস বিকৃতি, বিতর্কিত ও অবৈজ্ঞানিক মানব সৃষ্টিতত্ত্ব অনুপ্রবেশ, ট্রান্সজেন্ডার, পৌত্তলিক ও ব্রাক্ষণ্যবাদী সংস্কৃতির আধিপত্য, ইসলামকে ভিনদেশি সাব্যস্ত করা এবং প্লেজারিজমের মত নিন্দনীয় কাজের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে; যা জাতি হিসাবে আমাদের জন্য উদ্বেগ ও হতাশার। যারা বিশ্বাস করবে মানুষ আদমের সন্তান নয়, বরং কোন জীব-জানোয়ার বা অন্যান্য কিছু থেকে সৃষ্টি তাহলে তারা কাফের। কাজেই এই নাস্তিক্যবাদী শিক্ষা সিলেবাস এদেশে চলতে পারে না, এর পরিবর্তন করতে হবে। শিক্ষামন্ত্রী যৌন শিক্ষাকে ছড়িয়ে দিয়ে তিনি যৌনশিক্ষা মন্ত্রী খ্যাতি অর্জন করেছেন।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের ডিকশনারীতে মিথ্যা বলে কোন শব্দ নেই, তারা যা বলে তাই সত্য। অন্যসব মিথ্যা। এজন্য তারা মিথ্যায় পারদর্শি। অন্যদের সত্য তারা মিথ্যা বলে মনে করে। কারো ধর্মীয় বিশ্বাসকে অপমান করার অধিকার কারও নেই। শিক্ষা সিলেবাসে আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে। ইসলামী শিক্ষাকে সিলেবাস থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ডারউইনের নাস্তিক্যবাদী শিক্ষা শেখানো হচ্ছে কোমলমতি শিশুদের। ছাত্রছাত্রীদের নাস্তিক বানানোর গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। ইসলামবিরোধী যে কোনো ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত থেকে সরকারকে ফিরে আসার আহ্বান জানাই। অন্যথায় সারা দেশে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।