রহমত নিউজ ডেস্ক 19 December, 2022 09:59 PM
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, রাষ্ট্রদূতকে রাস্তায় ধরে স্মারকলিপি দেওয়ার কোনো সংস্কৃতি আছে কি না, সেটা জানা নেই, তবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে রাজধানীর শাহীনবাগে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে আতঙ্কিত না হতে ওয়াশিংটকে বার্তা দিয়েছে ঢাকা। বাংলাদেশে কোনো রাষ্ট্রদূতকে মাইরা ফেলেছে শুনেছেন? একবার হয়েছিল সেই ২০০৪ সালে। ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত গিয়েছিলেন সিলেটে। তাকে তখন বোমা মেরেছিল। উনি তখন একটু আহত হয়েছিলেন। বিএনপি সরকার ছাড়া অন্য সময়ে কোনো দূতাবাসে (কূটনীতিকদের ওপর) আক্রমণ হয়নি। সুতরাং আওয়ামী সরকার সব কূটনীতিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে পূর্ণ নিশ্চয়তা দিচ্ছে।
আজ (১৯ ডিসেম্বর) সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে, গত বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিখোঁজ বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের শাহীনবাগের বাসায় যান। সকাল ৯টা ৫ মিনিটে সুমনের বাসায় প্রবেশ করেন তিনি। প্রায় ২৫ মিনিট তিনি সেখানে অবস্থান করেন। এরপর তিনি ওই বাসা থেকে বেরিয়ে যান। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার সময় প্রায় ৪৫ বছর আগের গুমের ঘটনা ও সামরিক শাসনামলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে রাষ্ট্রদূতের কাছে স্মারকলিপি দেয় ‘মায়ের কান্না’ নামে একটি সংগঠন। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওইদিন দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক করেন পিটার হাস। বৈঠকে রাষ্ট্রদূত তার ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়ার কথা উল্লেখ করে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন। সেসময় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের শাহীনবাগে যাওয়ার খবর কে প্রচার করল, সেটি রাষ্ট্রদূতের কাছে জানতে চান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। পাশাপাশি তিনি রাষ্ট্রদূতকে বলেছিলেন, রাষ্ট্রদূত বা দূতাবাসের কর্মকর্তারা চাইলে আরও অধিক নিরাপত্তা দেবে সরকার। পিটার হাসের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার পরদিন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানের সঙ্গে আলোচনা করেন মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক মার্কিন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত যে সেখানে যাবেন আমাদের কোনো আইডিয়া ছিল না। রাষ্ট্রদূতকে রাস্তায় ধরে আপনি স্মারকলিপি দেবেন এটা কোনো কালচার আছে কি না, আমি জানি না। মায়ের কান্না নামের সংগঠন কেন মার্কিন দূতাবাসে যোগাযোগ না করে ওখানে স্মারকলিপি দিতে গেল? এটা জানা দরকার। আমরা যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণে বিশ্বাস করি এবং তাতে উৎসাহিত করি। এভাবে স্মারকলিপি দেওয়ার চেষ্টাকে আমরা উৎসাহিত করি না। রাষ্ট্রদূতের ঘটনায় নিশ্চয়ই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে খারাপ প্রভাব পড়বে না। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের বহুপাক্ষিক সম্পর্ক। এটা ছোটোখাটো ঘটনা, তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ব্যাপ্তি অনেক বিস্তৃত এবং গভীর। আমাদের রাষ্ট্রদূত কয়েকদিন যাবৎ রুটিন অনুযায়ী স্টেট ডিপাটমেন্টে সাক্ষাৎ করতে চাচ্ছিলেন। ওরা তারিখও দিয়েছিল। পরে ওরা ফোন করার কথা ছিল। এর মধ্যে ওরা ফোনে জানাল আপনি চলে আসেন। এটা তলব ছিল না। দ্বিপাক্ষিক ইস্যু আর ঢাকা থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা নিয়ে তারা কিছুটা আতঙ্কিত। তখন আমাদের রাষ্ট্রদূত বলেছিলেন, ওনার আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। অবশ্য ঘটনা ঘটার পর আমরা আমাদের রাষ্ট্রদূতকে জানিয়েছিলাম।