মূল পাতা রাজনীতি আওয়ামী লীগ ‘জোরপূর্বক ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে বিএনপির জন্ম’
রহমত ডেস্ক 22 August, 2022 04:24 PM
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গণতান্ত্রিক অধিকার ও মূল্যবোধের প্রতি দায় সমান্তরালভাবে এগিয়ে চলে। বিএনপি গণতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে কখনো হৃদয়ে ধারণ এবং রাজনৈতিক কার্যক্রমে তা চর্চা করে না। তারা কখনোই প্রথাসিদ্ধ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের যে দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে তা পালন করেনি। সংবিধান লঙ্ঘন করে বন্দুকের নলের মুখে অবৈধভাবে জোরপূর্বক ক্ষমতা দখলের মধ্য দিয়ে বিএনপির জন্মই হয়েছে। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ইতিহাসের নিষ্ঠুর স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান নিজেকে অবৈধভাবে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিল। জিয়াউর রহমান একই সাথে সেনাপ্রধান, প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত থেকে বিএনপি নামক রাজনৈতিক দল সৃষ্টি করেছিল। কারফিউ মার্কা গণতন্ত্রের প্রবর্তন করে এবং সামরিক শাসন বলবৎ রেখেই একাধিক প্রহসনের নির্বাচন করেছিল। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর থেকে গণতন্ত্র, মানবিক মুক্তি ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের পথে এদেশের মুক্তিকামী মানুষকে যে সকল সঙ্কটের সম্মুখীন হতে হয়েছে বিএনপিই সে সকল সঙ্কটের প্রেক্ষাপট সৃষ্টি করেছে। এই অপরাজনীতির কারণে বিএনপি যখন জনরোষের মুখে নিজেদের অস্তিত্ব বিপন্ন মনে করেছে, তখনই তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে দেশবিরোধী ষড়ন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। এমনকি ক্ষমতায় থাকাকালীন জনরোষের মুখে তাদেরকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। আজ (২২ আগষ্ট) সোমবার বিএনপি নেতাদের দূরভিসন্ধিমূলক মিথ্যা-অপপ্রচারের নিন্দা ও প্রতিবাদে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনা মহামারি এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে বিশ^ব্যাপী অর্থনীতিতে যখন একটি অনাকাক্সিক্ষত সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে- তখন এই বৈশ্বিক সঙ্কটকে পুঁজি করে, জাতীয় রাজনীতিতে সঙ্কট সৃষ্টির গভীর ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। আর এই ষড়যন্ত্রের মূলে রয়েছে, একুশে আগস্টের মাস্টারমাইন্ড খুনি তারেক রহমান ও তার দল বিএনপি। গণমানুষের সংগঠন আওয়ামী লীগের একমাত্র শক্তির উৎস হলো এদেশের জনগণ, জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা ও গণস্বার্থকে কেন্দ্র করেই পরিচালিত হয় আওয়ামী লীগের সকল রাজনৈতিক কার্যক্রম। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির জন্ম হয়েছে- স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই দীর্ঘ স্বৈরশাসনের নাগপাশ থেকে মুক্তি পেয়েছে এদেশের জনগণ। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই চরম দারিদ্র্যতা, মঙ্গা-খরা ও দুর্ভিক্ষ জর্জরিত অর্থনৈতিক অনিশ্চিয়তার নির্মম অভিঘাত থেকে মুক্ত হয়ে উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির অভিযাত্রায় অদম্য আজকের বাংলাদেশ। এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা, স্বার্থ সংরক্ষণ ও মুক্তির প্রশ্নে আওয়ামী লীগ সর্বদা অটল-অবিচল। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সমুন্নত রাখতে বদ্ধপরিকর।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে বিশে^র সকল গণতন্ত্রকামী ও মুক্তিকামী মানুষ ও রাষ্ট্রের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পবিত্র সংবিধানে পররাষ্ট্র নীতির মূলমন্ত্র হলো ‘সকলের সাথে বন্ধুত্বÑকারো সাথে বৈরীতা নয়।’ শান্তি, নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের এই নীতির যে কোনো বিকল্প নেই, বর্তমান বৈশি^ক বাস্তবতায় তা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। অসাম্প্রদায়িক-প্রগতিশীল শান্তিপূর্ণ ও কল্যাণকর বাংলাদেশ বিনির্মাণে অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান সরকার। আমরা প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহের সাথে পারস্পরিক ঐতিহ্য, কৃষ্টি, সংস্কৃতি, সহযোগিতা-সহমর্মিতা মানবিক মূল্যবোধ, নীতি ও আদর্শের মেলবন্ধন সৃষ্টির মধ্য দিয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ভিত্তি রচনা করি এবং বন্ধুত্বের গতি-প্রকৃতি নির্ণয় করি। অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য কোনো রাষ্ট্রের প্রভাব বিস্তার এবং রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ আওয়ামী লীগ কখনো সহ্য করেনিÑ করবেও না। আওয়ামী লীগ সর্বদা সকল ধরনের সাম্রাজ্যবাদী নীতির বিরোধিতা করে আসছে এবং সেজন্য চরম মূল্যও দিতে হয়েছে এই সংগঠনকে। তারপরও আওয়ামী লীগ দেশের ভিতরে ও বাইরে কোনো শক্তির নিকট মুচলেকা দিয়ে পথ চলে না। সাম্রাজ্যবাদবিরোধী জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের অন্যতম মুখপাত্র সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে বিকশিত আওয়ামী লীগ সর্বদা জনগণের সার্বভৌম ক্ষমতা ও গণতান্ত্রিক অধিকারের অতন্দ্র প্রহরী।