রহমত ডেস্ক 24 July, 2022 09:15 PM
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর তাঁতেরকাঠী ইউনিয়ন পরিষদ উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে উঠান বৈঠকে ইভিএম নিয়ে আওয়ামী লীগের এক নেতার বক্তব্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এর একটি ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগ নেতার এমন বক্তব্য নিয়ে সব মহলে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। বিব্রত বোধ করছেন প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরাও। আর সাধারণ ভোটারদের মধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পটুয়াখালী জেলা সদস্য জোবায়দুল হক ওরফে রাসেল বলেছেন, ভোট হবে ইভিএমে, কে কোথায় ভোট দেবে তা কিন্তু আমাদের কাছে চলে আসবে। অতএব ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নাই, টেনশনেরও কিছু নাই।
শনিবার (২৩ জুলাই) ইউপি নির্বাচন নিয়ে স্থানীয় তাঁতেরকাঠী মাধ্যমিক বিদ্যালয় এলাকায় একটি উঠান বৈঠকে অংশগ্রহণ করে ইভিএম নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তাঁর পাশে বসা ছিলেন আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী ইব্রাহিম ফারুক।
এর আগে গত শুক্রবার বিকেলে নাজিরপুর তাঁতেরকাঠী ইউপির ধানদী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে পুলিশ প্রশাসনের সামনে এক সভায় ভোটারদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে জোবায়দুল বলেন, ‘যাঁরা নৌকায় ভোট দেবেন, তাঁরাই কেবল ভোটকেন্দ্রে যাবেন।’ সভাটিতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান ওরফে ভিপি মান্নান উপস্থিত ছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘যে বক্তব্য দিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের নেতারা সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চায়, সেই বক্তব্য যদি আওয়ামী লীগ নেতারা দেয়, তাতে সরকার তথা আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হয়। মুখে লাগাম দিয়ে কথা বলা প্রয়োজন।’
আবদুস ছালাম নামের সাবেক এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, এর আগে জোবায়দুল বলেছেন, “যাঁরা নৌকায় ভোট দেবেন, তাঁরাই কেবল ভোটকেন্দ্রে যাবেন।” এখন আবার ইভিএমে ভোট গ্রহণ নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক ও নেতিবাচক বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন। তাঁর বিরুদ্ধে তথ্যবিভ্রাটের অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা হওয়া খুব জরুরি।’
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবি শাহানুর খান বলেন, ইভিএমে ভোট গ্রহণ নিয়ে মিথ্যা ও ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্যের বিষয়ে জোবায়দুল হকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সোমবার রাত থেকে বহিরাগত কেউ এলাকায় থাকতে পারবেন না। নির্বাচন হবে নির্বাচনের মতো।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি নাজিরপুর ইউপির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আমির হোসেন ব্যাপারী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি শপথ নেওয়ার আগেই ১৯ ফেব্রুয়ারি হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। একই ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মিজানুর রহমান ৩ মার্চ মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে মারা যান। এ কারণে ওই শূন্য দুটি পদে উপনির্বাচন হচ্ছে। ২৭ জুলাই উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে। মোট ছয়জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্যপদে দুজন প্রার্থী লড়ছেন।-প্রথম আলো