রহমত ডেস্ক 10 July, 2022 11:11 AM
রাজধানীর ঢাকার সাভারস্থ জামিয়া সিদ্দীকিয়া যাদুরচরের সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী বলেছেন, আজ পবিত্র ঈদুল আযহা। তাওহীদের চেতনায় উজ্জীবিত হওয়ার দিন। আল্লাহ তায়ালার যাবতীয় নির্দেশের কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের এক অনুপম বার্তা নিয়ে বছর ঘুরে আমাদের মাঝে আবারো ফিরে এসেছে এই দিন। মহান রবের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য এদিন আমরা নির্ধারিত পশু কোরবানি করি। কুরআন হাদীসে এ ব্যাপারে যথেষ্ট তাকিদ দেয়া হয়েছে। আজ (১০ জুলাই) রবিবার মিরপুরের বাইতুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে পবিত্র ঈদুল আজহার নামায পূর্ব বয়ানে তিনি এসব কথা বলেন।
মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী বলেন, মহান আল্লাহ বলেন, আপনি আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামায পড়ুন এবং কুরবানি করুন (সূরা কাওসার : ২)। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি কোরবানি করল না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়। (ইবনে মাজাহ)। সুতরাং সামর্থবান প্রত্যেক মুসলমানকেই কুরবানি করতে হবে। এটা ওয়াজিব। কুরবানি না করে সে অর্থ আল্লাহর রাস্তায় বা গরীব অসহায়দের দান করলে ওয়াজিব দায়িত্ব আদায় হবে না।
তিনি বলেন, আমাদেরকে ঈদুল আজহার শিক্ষা ও প্রকৃত তাৎপর্য অনুধাবন করতে হবে। ঈদুল আজহা হযরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম, বিবি হাজেরা ও ইসমাঈল আলাইহিস সালামের পরম ত্যাগের স্মৃতিবিজড়িত উৎসব। কোরবানির মাধ্যমে মানুষ আল্লাহর জন্য তার সবচেয়ে প্রিয় জিনিস ত্যাগ করতে রাজি আছে কিনা সেটিই পরীক্ষা করা হয়। ঈমানের এসব পরীক্ষায় যার যত বেশি ইখলাস ও তাকওয়া থাকবে সে তত বেশি সফলতা লাভ করতে পারবে। কোরবানি শুধু পশু কোরবানির নাম নয়। বরং নিজের পশুত্ব, স্বার্থপরতা, হীনতা, দীনতা, আমিত্ব ও অহঙ্কার ত্যাগের নাম। নিজের নামায, কোরবানি, জীবন-মরণ ও যাবতীয় বিষয় কেবল আল্লাহর নামে, শুধু তাঁরই সন্তুষ্টির জন্য করাই হচ্ছে প্রকৃত কোরবানি। এটা লোক দেখানো বা গোশত খাওয়ার কোন উৎসব নয়। অনেককে দেখা যায় গরিব-মিসকিনদের যথাযথভাবে কুরবানির গোশত না দিয়ে ঈদের দিন নিজেরা যৎসামান্য গোশত রান্না করে বাকিটা ফ্রিজে রেখে দেয়। এগুলো কোনো অর্থেই প্রকৃত কোরবানির পর্যায়ে পড়ে না।
তিনি আরো বলেন, লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে, গোশত খাওয়ার নিয়তে বা হারাম সম্পদ দ্বারা কোরবানি করলে কোরবানি কবুল হবে না। বরং তা পশু জবাইয়ের আনুষ্ঠানিকতা হিসেবেই বিবেচিত হবে। আল্লাহ তায়ালা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় কোরবানিদাতাদের সাবধান করে দিয়েছেন, কোরবানির পশুর গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, বরং তাঁর কাছে পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া। (সূরা হজ : ৩৭)। এছাড়া আল্লাহর অনুগ্রহকে স্মরণ করা ও তাঁর বড়ত্ব প্রকাশ করাটাও ঈদুল আজহার অন্যতম তাৎপর্য। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আমল করার তাওফীক দান করেন, আমীন।