রহমত ডেস্ক 09 July, 2022 08:10 PM
ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি এখলাছুর রহমান বলেছেন, ত্যাগের মহান শিক্ষা নিয়ে প্রতি বছর আমাদের মাঝে আসে ঈদুল আযহা। মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালামের ত্যাগের এক অবিস্মরণীয় ঘটনার প্রেক্ষিতে মহান আল্লাহর নির্দেশে ঈদুল আযহার দিনে কোরবানী আদায় করে থাকে মুসলমান জাতি। স্রষ্টার প্রতি সৃষ্টির নি:স্বার্থ আত্মত্যাগ ও আনুগত্যের নিদর্শন হিসেবে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমান এদিনে পশু কোরবানী দিয়ে থাকে। ঈদুল আযহা যেই ত্যাগ ও আনুগত্যের চেতনা নিয়ে আমাদের মাঝে আগমন করে, সেই শিক্ষা আমাদের দৈনন্দিন জীবনেও ধারণ করতে হবে। সৃষ্টিকর্তার আদেশ বাস্তবায়নে দ্ব্যর্থহীন আত্মত্যাগের দীক্ষায় বলীয়ান হয়ে দুর্নীতি ও দুঃশাসন মুক্ত দেশ গঠনে এবং আর্তমানবতার সেবায় আমাদের বদ্ধপরিকর হতে হবে। তাই আসুন, ঈদুল আযহার শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে আপোষহীনতা ও আত্মত্যাগের মন্ত্রে আমরা উদ্বুদ্ধ হই। ইনশাআল্লাহ মহান আল্লাহর দয়ায় আমরা একটি শান্তিময় ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।
এখলাছুর রহমান বলেন, নানা দুর্যোগ ও সংকটের মধ্যদিয়ে প্রিয় মাতৃভূমি এক চরম দুঃসময় অতিক্রম করছে। একদিকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় কৃষি জমি, ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, দোকানপাট সবকিছু ডুবে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষজন, অপরদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি এবং গ্যাস-পানি ও বিদ্যুতের সংকটে অতিষ্ট জনজীবন৷ এসব সংকট উত্তরনেও নেই শাসক মহলের কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ। শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। বিরানব্বই ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে ইসলামী শিক্ষা ছাড়া শিক্ষাব্যবস্থা পরিপূর্ণ হতে পারে না। তাই শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা অপরিহার্য। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি পরীক্ষায় ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বাদ দিয়ে দেশ থেকে ক্রমান্বয়ে ইসলামী চেতনাবোধ মুছে ফেলা ও নাস্তিক্যবাদের প্রসার ঘটানোর নীলনকশা সুকৌশলে বাস্তবায়নের চেষ্টা করে যাচ্ছে একটি মহল। বিরানব্বই ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত জাতি কখনোই মেনে নেবে না। অতএব শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষা অবশ্যই বাধ্যতামূলক করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আপনার সন্তানকে আগামী বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় যোগ্য করে গড়ে তুলতে এখন থেকেই চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। আপনার সন্তান পড়ালেখা বিমুখ হয়ে ভিডিও গেমসসহ নানান ক্ষতিকর নেশা কিংবা কিশোর গ্যাংসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে কিনা সেদিকে পরিপূর্ণ সতর্ক ও সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। আজকের যারা ছাত্র তারাই আগামীর মানবসভ্যতার প্রাণশক্তি। আগামী বিশ্বের নেতৃত্ব অর্পিত হবে আপনাদের স্কন্ধেই। তাই অনাগত বিশ্বের নতুন চ্যালেঞ্জ মুকাবেলায় আপনাদের প্রস্তুত হতে হবে। সেই লক্ষ্যে নিজেদের প্রস্তুত করতে অর্জিত জ্ঞানের ভান্ডারকে আরো সমৃদ্ধ করে এক নতুন পৃথিবী গড়ার শপথ নিতে হবে আপনাদের। দেশের চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে সংগঠনের স্থায়ী পাঁচ কর্মসূচীর অন্যতম খেদমতে খালক তথা মানবসেবায় অবতীর্ণ হয়েছে ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ। আলহামদুলিল্লাহ চলমান বন্যা দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তায় শুরু থেকেই গণসংগঠন, যুব সংগঠন ও ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে জাতীয় ত্রাণ কমিটি গঠন করেছে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। কমিটির আওতায় জমিয়ত, যুব জমিয়ত ও ছাত্র জমিয়ত সমন্বিত ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এজন্য সংগঠনের সকল জনশক্তির প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ঈদের পরও সংকট উত্তরণের শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট সকল ইউনিটের সহকর্মীদের এই তৎপরতা অব্যাহত রাখার আহবান জানাচ্ছি। পরিশেষে সংগঠনের সাবেক-বর্তমান সকল নেতাকর্মী, শুভাকাঙ্ক্ষী ও শুভানুধ্যায়ী, প্রিয় ছাত্রসমাজ এবং সর্বস্তরের দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জনিয়ে শেষ করছি। সকলকে ঈদ মোবারক।সবাই সুস্থ থাকুন, নিরাপদে থাকুন। আল্লাহ হাফেজ।