| |
               

মূল পাতা শিক্ষাঙ্গন ‘যারা রাজনীতি করে না, তারা দেশের কোন কল্যাণে আসে না’


‘যারা রাজনীতি করে না, তারা দেশের কোন কল্যাণে আসে না’


রহমত ডেস্ক     02 July, 2022     08:08 PM    


জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার শায়খুল হাদীস মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক বলেছেন, যারা রাজনীতি করে না তারা নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে অজ্ঞ, তারা দেশের কোন কল্যাণে আসে না। তাই যারা দেশের কল্যাণ চান, দেশের উন্নতি চান, আমর বিল মারুফ এবং নাহি আনিল মুনকার করতে চান তাদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করা জরুরী।

আজ (২ জুলাই) শনিবার  সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় বন্যাদুর্গত মানুষদের মাঝে জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার নগদ অর্থ ও ত্রাণ বিতরণ কালে তিনি এসব কথা বলেন। প্রতিনিধিদলে ছিলেন, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার শায়খুল হাদীস মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, শিক্ষা পরিচালক মুফতী মকবুল হোসাইন কাসেমী, মুহাদ্দিস মুফতী জাকির হোসাইন কাসেমী, মুফতী জাবের কাসেমী, সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা জয়নুল আবেদীন, মাওলানা আবু বকর, মাওলানা হোসাইন আহমদ প্রমুখ।

মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক বলেন, যে আল্লাহ তাআলা পৃথিবী এবং আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তিনিই বন্যা দিয়েছেন। বন্যায় কি লাভ এটা একমাত্র তিনিই জানেন। আল্লাহর দেয়া কোন গযব ক্ষতির জন্য নয়; বরং লাভের জন্য। যেখানে হালাল-হারামের বাচবিচার নেই, দ্বীনদারী নেই, মানুষজন বেনামাজি সেখানে এধরণের আজাব-গযব আসে। এই আজাব-গযব আমাদের জন্য রহমত হবে- যদি আমরা নামাজী হই, দ্বীনদারী ও হালাল-হারাম বাচবিচার করে চলি। বন্যার সময় আমরা দুর্গত মানুষের সাথে কি আচরণ করি এটাও আল্লাহ তায়ালা পরীক্ষা করেন। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসলে হায়-হুতাশ নয়; এই সময়ে নিজেকে সংশোধন করে নিতে হয়। পূর্বের গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য বেশীবেশী তাওবা-ইস্তেগফার পড়তে হয়।

তিনি আরো বলেন, মাথা বিচ্ছিন্ন শরীরের যেমন দাম নেই ঠিক তেমনিভাবে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন আলেমেরও কোন দাম নেই। সমাজকে জাহেল-মূর্খদের হাতে ছেড়ে দিয়ে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করা আলেমদের কাজ নয়। ইসলাম বিদ্বেষী ও দেশ বিরোধী কোন শক্তির সাথে নিজ এলাকার মানুষজন জড়িত কিনা, খ্রিস্টান মিশনারী ও ইসকনের সাথে এলাকার লোকজন জড়িয়ে পড়ছে কিনা সেদিকে সতর্ক এবং সজাগ দৃষ্টি রাখার আহবান জানান। শুধুমাত্র বড় মুফতী, মুহাদ্দিস হওয়া আলেমদের কাজ নয়। বুদ্ধি ও বিচক্ষণতার সাথে সমাজের নেতৃত্ব দেয়াও আলেমসমাজের দায়িত্ব ও কর্তব্য। নিজ এলাকায় আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জামাত ও জাতীয় পার্টির আধিপত্য চলবে আর আলেমরা হাদিয়া খাওয়ার ধান্দায় আমি রাজনীতি করি না এই বলে স্লোগান দিবে এটা বিচক্ষণ উলামার পরিচয় হতে পারে না৷ আপনি রাজনীতি করেন না বলে স্লোগান দিলেন তাহলে কি শয়তানের নীতি অবলম্বন করলেন? যারা বলে রাজনীতি করি না তারা দেশ লুটপাট হয়ে গেলেও নিরব ভুমিকা পালন করবে। আর এইসব হুজুররাই মাদরাসাগুলোতে রাজনীতি করতে বিচক্ষণ আলেমদের বাধা প্রদান করে।

জামিয়ার মুহাদ্দিস মুফতী জাকির হোসাইন কাসেমী বলেন, আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি একটি কথা বলতেন, ইলমে ওহি যা আসমানী ইলম আর আসমানী ইলম মানবতার শিক্ষা দেয়। হুজুরের এই কথাটা আল্লাহ তায়ালা সিলেটের বন্যায় প্রমাণ করে দিয়েছেন। সারাদেশ থেকে আলেমরা বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাড়িয়েছেন। আমাদের সেই সুদূর ফরিদপুর থেকেও বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণ এসেছে। মুসিবত ইমানদারদের জন্যই আসে। সিলেট শহর আধ্যাত্মিক শহর হিসেবে পরিচিত। এই শহরে সবচেয়ে বেশী আলেম-উলামা, পীর বুজুর্গ, পর্দানশীন মা-বোনদের বসবাস। এই এলাকার মানুষজনের উপর আল্লাহর পরিক্ষা এসেছে, এজন্য আমাদের সবাইকে তাওবা ইসতেগফার করতে হবে। গুনাহ থেকে বাচতে হবে। উলামায়ে কেরাম হলো জাতির হার্ট। আমরা যেন ইলমে ওহির শিক্ষা ব্যাপকভাবে সমাজের সর্বস্তরে ছড়িয়ে দিতে পারি আল্লাহ তায়ালা সেই তাওফিক দান করুন। সেইসাথে কাসেমীকে জান্নাতুল ফেরদৌসের উঁচু মাকাম দান করুন এবং তার প্রতিষ্ঠিত দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে দ্বীনের দূর্গ হিসেবে কবুল করুন।

জামিয়ার মুহাদ্দিস আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী রাহমাতুল্লাহি আলাইহির সাহেবজাদা মুফতী জাবের কাসেমী বলেন, বাংলাদেশ শতকরা বিরানব্বই ভাগ মুসলমানের দেশ। এদেশের জাতীয় শিক্ষানীতি থেকে ইসলাম ও ধর্মীয় শিক্ষা বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত চলছে বহুদিন থেকেই। এব্যাপারে সর্বস্তরের উলামায়ে কেরামকে সতর্ক ও সজাগ থাকার আহবান জানান তিনি।

জামিয়ার সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা জয়নুল আবেদীন বলেন, বন্যার শুরু থেকেই দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও আলেমসমাজ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ইতিপূর্বে আমরাও নিজ উদ্যোগ ও সংগঠনের ব্যানারে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। বন্যার শুরু থেকেই আমাদের নেতা শায়খুল হাদীস আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক সাহেবের তত্ত্বাবধানে ব্যাপক ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। তিনি নিজেও কয়েকবার এসে নগদ অর্থ ও ত্রাণ বিতরণ করেছেন। আল্লাহ তাওফিক দিলে ইনশাআল্লাহ ঈদ পরবর্তী পুনর্বাসন কার্যক্রম ও ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।