| |
               

মূল পাতা শিক্ষাঙ্গন সামর্থ্যানুযায়ী বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়ান : মাওলানা ইয়াহইয়া


সামর্থ্যানুযায়ী বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়ান : মাওলানা ইয়াহইয়া


রহমত ডেস্ক     19 June, 2022     06:48 PM    


বৃহত্তর সিলেটসহ দেশের উত্তর-পূর্বের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে বন্যাদূর্গত অসহায় মানুষের পাশে যার যার সাধ্যমত সহযোগিতা নিয়ে দাঁড়ানোর জন্য আলেম-উলামা, যুবক, তরুণ সমাজসহ সক্ষম সর্বস্তরের জনতার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন  আলজামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারীর মুহতামিম মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া বলেছেন, ইসলাম সাম্য, সহমর্মিতা, মানবতা ও ইনসাফের শিক্ষা দেয়। ইসলাম মনবিকতাবোধের জায়গায় ধর্ম, বর্ণ ও ভাষাগত কোন তারতম্য করে না। সুতরাং দল-মতের ঊর্ধ্বে সকল মানুষকে সমান বিবেচনা করে সহযোগিতা নিয়ে অসহায় আর্তমানবতার পাশে দাঁড়ানো স্বচ্ছল জনসাধারণের মানবিক ও নৈতিক দায়িত্ব। ব্যক্তিগত বা সম্মিলিত উদ্যোগে যার যার এলাকায় ত্রাণসামগ্রী, নগদ অর্থ ও খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহ করে দূর্গত ও বিপর্যস্ত মানুষের মাঝে বিলি-বণ্টনের উদ্যোগ নিন। ফারেগীনে দারুল উলূম হাটহাজারীসহ সকলে নিজেরাও ত্রাণ ও সেবা কাজে শরীক হোন এবং অন্যদেরকেও উদ্বুদ্ধ করুন। আজ (১৯ জুন) রবিবার এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

মাওলানা ইয়াহইয়া বলেন, ইতিমধ্যেই পত্রপত্রিকায় সিলেট, সুনামগঞ্জ, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রামসহ দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের বন্যা দুর্গত এলাকার যেসব চিত্র ও খবর আসছে তাতে জানা যাচ্ছে, টানা বৃষ্টি ও হিন্দুস্তান থেকে নেমে আসা ঢলে দেশের বিভিন্ন জেলার বন্যা পরিস্থিতি আরো খারাপ হচ্ছে। বাড়ি-ঘর তলিয়ে যাওয়ায় বাঁধ ও পাকা রাস্তাসহ বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নেওয়া লোকজন বিশুদ্ধ পানি, খাদ্য ও শৌচাগারের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বন্যা কবলিত এলাকার সব উঁচু বাঁধ, পাকা সড়ক ও বিভিন্ন উঁচু প্রতিষ্ঠানে বানভাসি পরিবারগুলো তাদের গবাদিপশু নিয়ে বাস করছে। চাহিদা মতো ত্রাণ পাচ্ছেন না তারা। এসব এলাকার মানুষ যে অত্যন্ত করুণ ও মানবেতর পরিস্থিতির মুখে পড়েছে, সহজেই বুঝা যায়। উপদ্রুত অনেক এলাকায় তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যার কারণে অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় রাতের বেলায় গভীর অন্ধকারে চোর-ডাকাতের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। মোবাইল যোগাযোগ ব্যবস্থাও অনেক জায়গায় সচল নেই।

তিনি আরো বলেন, প্রশাসনসহ বিভিন্ন মানবিক ও সামাজিক সংগঠন, রাজনৈতিক দল এবং অন্যান্যরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে ত্রাণ সংগ্রহ করে দুর্গত মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে হবে। মানবতাবোধ ও মানুষের পাশে দাঁড়ানোই এই সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভাবনা হওয়া চাই। নগদ অর্থ, খাদ্য, বস্ত্র, পানি, ওষুধ, যার যা কিছু আছে, তা নিয়েই স্বতঃস্ফূর্তভাবে বন্যাদুর্গতদের সাহায্যে এগিয়ে আসার এখনই সময়। আমি ফারেগীনে দারুল উলূম হাটহাজারী, হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীসহ দলমত নির্বিশেষে সকলের প্রতি যার যার অবস্থান থেকে সাধ্যমতো মানবিক সহায়তায় শরীক হতে উদাত্ত্ব আহ্বান জানাচ্ছি।

এদিকে, আজ (১৯) রবিবার বাদ ফজর দারুল উলূম হাটহাজারীর কেন্দ্রীয় মসজিদ জামে বায়তুল কারীমে বন্যাদুর্গত এলাকায় মানুষের দুর্ভোগ নিরসন, বিপদাপদ দূর এবং বন্যার এই বিপদ থেকে রক্ষায় আল্লাহর সাহায্য ও রকহমত কামনা করেন বিশেষ দোয়া-মুনাজাত করা হয়। মুনাজাতে দারুল উলূম হাটহাজারীর শিক্ষকবৃন্দ ও হাজার হাজার ছাত্রসহ সাধারণ মুসল্লীগণও শরীক ছিলেন। এছাড়া সকাল ৯টায় জামিয়া দারুল উলূমের শিক্ষকবৃন্দের বৈঠকে বন্যাদূর্গত এলাকার জনসাধারণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয় এবং দুর্দশাগ্রস্ত জনসাধারণের পাশে সহযোগিতা নিয়ে দাঁড়ানোর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে দীর্ঘ আলোচনা হয়।

বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত দারুল উলূম হাটহাজারীর মুহতামিম মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া, সদরুল মুদারেসসীন ও শায়খুল হাদীস মাওলানা শেখ আহমদ, শায়খে সানী মাওলানা মুহাম্মদ শোয়াইব জমিরী, নায়বে মুহতামিম মুফতি জসিমুদ্দীন, নাজিমে তা’লিমাত মাওলানা কবীর আহমদ, নায়েবে নাজিমে তা’লিমাত মাওলানা খলীল আহমদ কাসেমী, মুফতি কিফায়াতুল্লাহ, নাজিমে মাতবাখ মাওলানা ফোরকান আহমদ, মাওলানা মুহাম্মদ ওমর কাসেমী, মাওলানা আহমদ দীদার কাসেমী, মাওলানা আশরাফ আলী নিজামপুরীসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ।