মূল পাতা আন্তর্জাতিক আরব দেশগুলোর চাপে ভারত কেন পিছু হটলো?
আন্তর্জাতিক ডেস্ক 11 June, 2022 12:19 PM
ভারতে ক্ষমতাসীন বিজেপির দুজন নেতা ইসলামের নবীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার পর আরব দেশগুলোর সাথে ভারতের টানাপোড়েন চলছে। এক টিভি বিতর্কে করা মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর এর কড়া সমালোচনা এবং প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করে সৌদি আরব, কাতার, বাহরাইন, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন উপসাগরীয় এবং আরব দেশগুলোর কাছ থেকে। ভারতে ইসলাম-বিদ্বেষ ও মুসলমানদের ওপর আক্রমণের ঘটনা ২০১৪ সালে বিজেপির ক্ষমতায় আসার পর থেকেই চলছে। কিন্তু আরব বা উপসাগরীয় দেশগুলোর কাছ থেকে এমন প্রতিক্রিয়া আগে কখনো দেখা যায়নি। হঠাৎ তাদের এত তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখানোর কারণ কী?
কেন এই প্রতিক্রিয়া?
বিশ্লেষকেরা কয়েকদিন ধরে চলা আরব দেশগুলোর ধারাবাহিক প্রতিবাদকে নজিরবিহীন বলে মনে করেন। এর একটি কারণ গত দুই দশকে ভারতের সাথে আরব দেশসমূহ, বিশেষ করে উপসাগরীয় অঞ্চলের সম্পর্কের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। আর দ্বিতীয় কারণ আরব দেশগুলো সাধারণত ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্য করে না। ভারতে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশটিতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর, বিশেষ করে মুসলমানদের ওপর হামলার অনেক ঘটনা ঘটেছে। গরু রক্ষার নামে বেশ কয়েকজন মুসলমানকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু সেসব ঘটনায় উপসাগরীয় দেশগুলোর তরফ থেকে ভারতের নিন্দা বা সমালোচনা করে প্রকাশ্যে কোন বক্তব্য বা উদ্বেগ জানানো হয়নি। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এবারে ব্যতিক্রম হওয়ার জন্য ধর্মীয় কারণটিই প্রধান বিবেচ্য হলেও এর পেছনে মূল ভূমিকা রেখেছে সামাজিক মাধ্যম, যেখানে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার পাশাপাশি ভারতীয় পণ্য বয়কটের ডাকও দেয়া হচ্ছে।
সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত বা ইউএই এবং ওমানে দায়িত্ব পালন করা ভারতের সাবেক রাষ্ট্রদূত তালমিজ আহমদ মনে করেন, বিতর্কিত মন্তব্যটি উপসাগরীয় দেশগুলোর সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার কারণে আরব নেতৃবৃন্দকে বাধ্য হয়ে প্রকাশ্যে অবস্থান নিতে হয়েছে। এসব দেশের পররাষ্ট্রনীতি তাদের জাতীয় স্বার্থের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়। এবং তাদের মূল নীতি হচ্ছে অন্য দেশের কোন বিষয়ে মন্তব্য না করা। মন্তব্যটা করা হয়েছে ইসলামের নবী এবং তার পরিবারকে নিয়ে। আমরা জানি যে মুসলিম বিশ্বে নবী মুহাম্মদের গুরুত্ব এবং মুসলমান সম্প্রদায় তাকে নিয়ে কোন অবমাননাকর মন্তব্য মেনে নেবে না। এই রেড লাইন বা সীমা অতিক্রম করে গেছে, এ নিয়ে প্রথম প্রতিক্রিয়া এসেছিল সামাজিক মাধ্যমে। সামাজিক মাধ্যমই এ অঞ্চলের ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক নেতাদের ওপর চাপ তৈরি করেছিল। নবী মুহাম্মদকে নিয়ে করা মন্তব্যে ক্ষোভ ও জনমত তৈরি হয়েছিল যা শেষ পর্যন্ত দেশগুলোর নেতৃবৃন্দকে বাধ্য করেছিল অবস্থান নিতে। খোলাখুলি বললে, নেতাদের আর কোন উপায়ও ছিল না।
ভারত ও আরব দেশের সম্পর্ক কতটা?
গত দুই দশকে উপসাগরীয় এবং আরব রাষ্ট্রগুলোর সাথে ভারতের সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ হয়েছে, সেটি অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত উভয় দিক থেকেই।এই মূহুর্তে ভারতের মোট আমদানির অর্ধেক আসে উপসাগরীয় দেশগুলোর জোট গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলের সদস্য ৬টি দেশ থেকে। ইরান এবং ইরাককে যোগ করলে উপসাগরীয় দেশগুলো থেকেই আসে ভারতের পেট্রলের ৮০ শতাংশ। ভারত বছরে যে পরিমাণ প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি করে তার অর্ধেক আসে কাতার থেকে। এসব দেশের সাথে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্কও খুব জোরালো। ইউএই'তে বছরে ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ রপ্তানি করে ভারত। এছাড়া জিসিসির সদস্য উপসাগরীয় ছয়টি দেশে ৮৫ লাখের বেশি ভারতীয় কাজ করেন। বাকি আরব দেশেও বহু ভারতীয় কাজ করেন। আরব দেশগুলো থেকে প্রবাসী ভারতীয়রা বছরে সাড়ে তিন হাজার কোটি মার্কিন ডলার রেমিটেন্স দেশে পাঠান।
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান উইলসন সেন্টারের এশিয়া কর্মসূচির পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, এসব কারণেই ভারতের অর্থনীতি উপসাগরীয় দেশগুলোর ওপর ভীষণভাবে নির্ভরশীল।গালফ অঞ্চল বা মধ্যপ্রাচ্য ভারতের জন্য কৌশলগত কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারত তার অর্থনৈতিক প্রয়োজনে উপসাগরীয় অঞ্চলের ওপর ভীষণভাবে নির্ভরশীল। এর মধ্যে জ্বালানি, তেল ও গ্যাস এবং রেমিটেন্স রয়েছে।গালফ দেশগুলো থেকে ভারতের দুই-তৃতীয়াংশ রেমিটেন্স আয় হয়। অবকাঠামো খাতেও তারা কাজ করছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমরা দেখেছি, এ খাতে কাজ করার জন্য কয়েকটি উপসাগরীয় দেশ বিশেষ করে ইউএই'র সাথে ভারত চুক্তি করেছে। উপসাগরীয় দেশগুলো ভারতের বাণিজ্য সম্পর্কের বড় কেন্দ্র। আর এসব কারণেই সেসব দেশের প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে দিল্লির খুব দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া জরুরি ছিল। অর্থনৈতিক গুরুত্ব কেবল নয়, এই অঞ্চলের ওপর ভারতের অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতা এত বেশি যে দিল্লি ঝুঁকি নিতে পারে না। মনে রাখা দরকার যে কেবল ভারতই নয়, উপসাগরীয় দেশগুলোরও ভারতের প্রতি নির্ভরশীলতা আছে যা উভয়ের মধ্যে সম্পর্কের প্রধান ভিত্তি।
সম্পর্কের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
আরব দেশগুলোর সাথে ভারতের সম্পর্ক সবসময় ভালো বা উষ্ণ ছিল না। ১৯৪৭ সালে ভারতের জন্মের সময় আরব দেশগুলো পাকিস্তানকে সমর্থন দিয়েছিল। পরে কাশ্মীর ইস্যুতেও তারা পাকিস্তানকে সমর্থন করে, যে কারণে আরব দেশগুলোর সাথে ভারতের সম্পর্ক কিছুটা শীতলই ছিল। অটল বিহারী বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় ২০০২ সালে আরব লীগের সাথে প্রথম আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপিত হয় ভারতের। তার আগ পর্যন্ত দুই পক্ষের সম্পর্ক সীমিত ছিল মূলত উপসাগরীয় দেশসমূহ থেকে জ্বালানি তেল আমদানি এবং আরব দেশগুলোতে বিপুল সংখ্যক ভারতীয় অভিবাসনের মধ্যে।
ভারতীয় সংবাদ-ভিত্তিক ওয়েবসাইট দ্য ওয়্যারের সাংবাদিক দেবীরুপা মিত্র বলেন, ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর আরব দেশ বিশেষ করে উপসাগরীয় দেশগুলোর সাথে ভারতের সম্পর্কে উন্নতি হয়, আর সেজন্য মি. মোদী নিজে প্রচুর কাজ করেছেন। মোদী সরকারের সাথে উপসাগরীয় দেশের সম্পর্কের দিকে তাকান, তাহলে দেখবেন এখন পর্যন্ত এই সম্পর্ক বেশ মসৃণ। আর সেটি করার জন্য মোদী সরকার বিশেষ ভাবে কাজ করেছে এবং ইউএই, কাতার, সৌদি আরব- প্রতিটি রাজপরিবারের সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। এসব রাজপরিবারের সদস্যদের সাথে মি. মোদীর ছবি মানুষ দেখেছে, যাতে দেখা যাচ্ছে তিনি সবখানে যাচ্ছেন এবং একটি সম্পর্ক তৈরি করছেন। এবং তার ফল যদি বলেন এখন পর্যন্ত ভারতের অভ্যন্তরীণ কোন ইস্যু, যেমন সংখ্যালঘু বা মানবাধিকার লঙ্ঘন - যাই হোক না কেন, উপসাগরীয় কোন দেশকে কখনও মন্তব্য করতে দেখা যায়নি। ইতিমধ্যে ভারত সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সই করেছে এবং গালফ জিসিসির সঙ্গে আরও একটি ব্যাপক-ভিত্তিক বাণিজ্য চুক্তির জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও ২০১৮ সালে আবুধাবিতে প্রথম হিন্দু মন্দির তৈরি হয়।
ভারতের পিছু হটা
আর এসব কারণেই আরব দেশের প্রতিক্রিয়ার জবাবে ভারত কিছুটা পিছু হটে যায়। বিজেপি মিজ শর্মাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে, আর মি. জিন্দালকে দল থেকেই বহিষ্কার করেছে। এক বিবৃতিতে বিজেপি বলেছে তারা যে কোন ধর্মের বা যে কোন ধর্মীয় ব্যক্তিত্বকে অপমানের নিন্দা করে। কোন সম্প্রদায় বা ধর্মকে অপমান করা, বা হেয় করা- বিজেপি এমন আদর্শেরও বিরুদ্ধে। বিজেপির ওই দুই নেতা এরই মধ্যে প্রকাশ্যে ক্ষমাও চেয়েছেন।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, বর্তমানে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে যেখানে জ্বালানি সংকটের আশংকা করছে বহু দেশ, সেখানে নিশ্চিত জ্বালানির উৎস নিয়ে ভারত ঝুঁকি নিতে চাইবে না, সেটাই স্বাভাবিক। সেই সঙ্গে কর্মসূত্রে বিভিন্ন আরব দেশে বসবাস করা ভারতীয়রা বিরূপ পরিস্থিতিতে পড়বেন এমন ভয়ও রয়েছে। কুয়েত এবং কাতারের মতো অন্যান্য আরব দেশেও ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক ছড়িয়ে পড়লে ভারত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যে কারণে ভারতের দ্রুত ব্যবস্থা নেয়াকে এই মূহুর্তে টানাপোড়েন সামাল দেয়ার একমাত্র উপায় বলে মনে করেন বিশ্লেষকেরা। যদিও ভারত সরকারের নেয়া পদক্ষেপ, অর্থাৎ নূপুর শর্মা এবং মি. জিন্দালকে সরিয়ে দেয়াকেই যথেষ্ট বলে মনে করেন না এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়। তবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক সামাজিক মাধ্যম পেরিয়ে বেশি দূর যাবে না বলে মনে করেন উপসাগরীয় সমাজব্যবস্থা সম্পর্কে ধারণা রাখেন এমন বিশেষজ্ঞরা।
দুবাই ভিত্তিক সাংবাদিক সাইফুর রহমান বলছেন, উপসাগরীয় দেশগুলোর সমাজ ব্যবস্থায় কোন ইস্যু নিয়ে সংগঠিত ক্যাম্পেইন বা প্রচারণা কিংবা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার নজির কম। এখানকার মানুষ অতটা প্রতিবাদী না। এখানকার ভোক্তা যারা, যারা নাগরিক তাদের মধ্যে সেই সেন্টিমেন্ট অতটা শক্ত না। হ্যাঁ, ধর্মীয় সেন্টিমেন্টে আঘাত লেগেছে, অনেকে কষ্ট পেয়েছেন, কিন্তু তার জন্য তারা আগ বাড়িয়ে এটাকে কোন রাজনৈতিক বা সামাজিক জায়গায় নিয়ে যাবেন এমন শক্ত কোন বিষয় এখানে নেই। কারণ সামাজিক সংগঠন সেখানে শক্তিশালী না, রাজনৈতিক সংগঠনও নেই। কাজেই সামাজিক মাধ্যমে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন, কিন্তু এই প্রতিবাদকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সামাজিক বাহনও এখানে নেই।
দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব: চাকরির বাজার?
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার পর বোঝা যাবে আরব দেশের এই প্রতিক্রিয়ার দীর্ঘমেয়াদি কোন প্রভাব ভারতের ওপর পড়বে কি-না। কিন্তু আরব দেশসমূহ এবং ভারত - পরস্পরের ওপর তাদের যে নির্ভরশীলতা তাতে এ ঘটনা বেশিদূর এগিয়ে নিতে হয়ত কোন পক্ষই চাইবে না। তবে সাবেক কূটনীতিক তালমিজ আহমদ মনে করেন, সামনের দিনে ভারতীয় কর্মী নিয়োগের সময় এ ঘটনার একটি প্রভাব পড়তে পারে। আগে তারা আরব দেশের নাগরিকদের রিক্রুট করত। তারপরে ৮০'র দশকে নিত পাকিস্তানিদের, কিন্তু দেখা গেল ইসলামি উগ্রপন্থীদের সাথে তাদের সংযোগ আছে। এরপরেই পাকিস্তান থেকে সরে তারা ভারতীয়দের নিয়োগ করতে শুরু করে। ভারতীয়রা খুবই অরাজনৈতিক, তারা অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নাক গলায় না। তারা ভারতের মুসলমানদের নয়, সাধারণভাবে ভারতীয়দের একটি কম্যুনিটি হিসেবে নিয়োগ দিতো। উপসাগরীয় অঞ্চলে যতো ভারতীয় মুসলমান কাজ করেন তা মোট কর্মীর ১২ থেকে ১৫ শতাংশ। কিন্তু আমার আশংকা হচ্ছে এখন এসব অঞ্চলের নিয়োগকর্তারা ভাবতে পারেন যে আমরা উগ্র মানসিকতার কাউকে নিয়ে আসতে পারি না যারা সমস্যা তৈরি করবে এবং সামাজিক সম্প্রীতি বা সৌহার্দ্য নষ্ট করবে। আমার মনে এই জায়গাটায় ভারতের সতর্ক হওয়া দরকার। এখন পর্যন্ত অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতির এক ধরনের কূটনৈতিক সমাধান ভারত করে এনেছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও এর কোন দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়বে না।
উইলসন সেন্টারের এশিয়া কর্মসূচির পরিচালক মি. কুগেলম্যান মনে করেন, এই ঘটনা ভারতের রাজনীতিবিদদের এক ধরণের বার্তা দিয়েছে, আর সেটি হচ্ছে দেশটিতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের কোণঠাসা করতে ব্যবহার করা রাজনৈতিক বক্তব্য বা কোন ধরনের হামলার ঘটনা এখন আর কেবল দেশটির অভ্যন্তরীণ ব্যাপার নয়, প্রতিবেশী বিশেষ করে মুসলমান প্রতিবেশীরাও তার দিকে নজর রাখছে এবং সে কারণেই ভবিষ্যতে তাদের সতর্ক হতে হবে।