রহমত ডেস্ক 31 May, 2022 04:34 PM
গত ১০ বছরে দেশে সাম্প্রদায়িকতা আরও বেড়েছে। বাউলদের চুল কেটে দেওয়া হচ্ছে। জনসম্মুখে পোশাকের জন্য নারীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে দেশে রাজনৈতিক আন্দোলনের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক আন্দোলন শুরু করাটা জরুরি।
আজ (৩১ মে) মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ৩৪ বছর আগে রাজশাহীতে ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের হামলায় নিহত ছাত্রমৈত্রী নেতা ডা. জামিল আকতার রতনের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত ‘বাংলাদেশে জামায়াতের উত্থান, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য নুর আহমেদ বকুলের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, ইসলামী ঐক্যজোটের সভাপতি মিছবাহুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।
সাংবাদিক ও কলামিস্ট আবু সাঈদ খান বলেন, বর্তমানে ১৪ দল মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের চর্চা করছে। তবে সেটা কতটুকু বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে, তা প্রশ্নবিদ্ধ। ১৪ দলে থাকা বাম সংগঠনগুলো কিছু সুবিধা নিয়ে সরকারের যে দুর্নাম, তার ভাগিদার হচ্ছে। পাকিস্তানি ধ্যান-ধারণা ও প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়েই বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছে। ফলে খন্দকার মোশতাক সরকারের সঙ্গে তারা হাত মিলিয়েছে এবং তাদের দ্বারা ৭৫’র ঘটনা সংঘটিত হয়। ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশে ইসলামকে সামনে আনেন জিয়াউর রহমান। আর জেনারেল এরশাদ সেটা বাস্তবায়ন করেন।
রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার-আরডিসির সাধারণ সম্পাদক জান্নাত ফেরদৌস লাকী বলেন, গত ১০ বছরে দেশে সাম্প্রদায়িকতা আরও বেড়েছে। নারীর প্রতিও সহিংসতা বেড়েছে। সামান্য টিপ পরলেও অনেকের সহ্য হচ্ছে না। অথচ একটি অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র গঠনের জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। জামায়াতে ইসলামী মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। অথচ তারা এখনও বাংলাদেশে রাজনীতি করে যাচ্ছে।
সভাপতির বক্তব্যে নুর আহমেদ বকুল বলেন, ব্যবসায়ীদের কালো টাকা আর জঙ্গিবাদের টাকা মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। সাম্প্রদায়িকতা ছড়াতে এ টাকার ব্যবহার বেড়ে গেছে। এসব টাকায় এখন মাদরাসা তৈরি হচ্ছে।’
ডা. জামিল আকতার রতন বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শাখার সভাপতি ছিলেন। সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে এরশাদ সরকার ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ প্রবর্তন করলে এর বিরুদ্ধে রাজশাহীতে ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়। এতে নেতৃত্বে ছিল জামিল আকতার রতন। ১৯৮৮ সালের ৩১ মে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের ৩৪ জন শিক্ষকের সামনে তাকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।