| |
               

মূল পাতা ইসলাম বানভাসিদের সাহায্যে এগিয়ে আসাও নববী আদর্শ


বানভাসিদের সাহায্যে এগিয়ে আসাও নববী আদর্শ


রহমত ডেস্ক     20 May, 2022     03:24 PM    


ঢাকার মিরপুরের বাইতুল আমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব ও জামিয়া সিদ্দীকিয়া যাদুরচর সাভারের সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী বলেছেন, বৃহত্তর সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির কারণে অসহায় মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় জীবন যাপন করছে। এমতাবস্থায় সমাজের বিত্তবান ও মানবিক গুণসম্পন্ন ব্যক্তিদের দায়িত্ব হচ্ছে, বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়ানো। বন্যা উপদ্রুত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বানভাসি মানুষ অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান ও চিকিৎসার অভাবে অর্ধাহারে-অনাহারে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে দিন যাপন করছে। নগদ টাকাপয়সা, খাদ্য, বস্ত্র, বিশুদ্ধ পানি, ওষুধ সহ যার যা কিছু আছে, তা নিয়েই স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসা ঈমানী দায়িত্ব ও নববী আদর্শ। আজ (২০ মে) শুক্রবার টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ঐতিহাসিক ২০১ গম্বুজ মসজিদে অতিথি খতীব হিসেবে জুমার খুতবা পূর্ব বয়ানে তিনি এসব কথা বলেন।

মুফতি আবদুল্লাহ ফিরোজী বলেন, অসহায় বনী আদমকে খাদ্য বস্ত্র দিয়ে সাহায্যের ফযীলত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “কোনো মুসলমান অন্য মুসলমানকে কাপড় দান করলে আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতের পোশাক দান করবেন। ক্ষুধার্তকে খাদ্য দান করলে আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতের সুস্বাদু ফল দান করবেন। কোনো তৃষ্ণার্ত মুসলমানকে পানি পান করালে মহান আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতের সিলমোহরকৃত পাত্র থেকে পবিত্র পানীয় পান করাবেন।” (সুনানে আবু দাউদ)। আপনি দেশের যে প্রান্তেই থাকুন, নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী বন্যার্তদের সাহায্য-সহযোগিতা করুন। পাড়া-মহল্লার তরুণ-যুবকেরা সংগঠিত হয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণসামগ্রী সংগ্রহ করে নিজ দায়িত্বেই বন্যাদুর্গতদের মধ্যে বিতরণ করুন। কারণ খেদমাতে খালক্ব বা সৃষ্টির সেবা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিধান ও ইবাদত। এ ব্যাপারে ত্রুটি হলে কেয়ামতের দিন আল্লাহর সামনে জিজ্ঞাসিত হতে হবে। প্রশ্ন করা হবে বস্ত্রহীনদের বস্ত্রদান ও ক্ষুধার্তদের খাদ্যদান সম্পর্কে। ইসলাম মানবীয় গুণাবলীর ক্ষেত্রে পরোপকার ও জনকল্যাণমূলক কাজকে অন্যতম শ্রেষ্ঠ গুণ আখ্যা দিয়ে এর প্রতি উৎসাহ দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, মহাগ্রন্থ আল কোরআনের সূরা কসাসের ৭৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, তোমরা মানুষের প্রতি তেমন অনুগ্রহ কর (সাদক্বাহ বা যে কোন উপায়ে) যেমন আল্লাহ তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। এছাড়া সূরা বাকারার ২৭১ নম্বর আয়াতে বলেছেন, যদি তোমরা প্রকাশ্যে দান-খয়রাত কর তবে তা কতইনা উত্তম। আর যদি দান গোপনে কর এবং অভাবগ্রস্তদের দিয়ে দাও তবে তা তোমাদের জন্য আরও উত্তম। (এরদ্বারা) আল্লাহ তায়ালা তোমাদের গোনাহ মাফ করে দিবেন। জেনে রাখ, তিনি তোমাদের কাজকর্মের ব্যাপারে অধিক খবর রাখেন। বিশ্ব মানবতার মুক্তির দিশারী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের পার্থিব একটি মুসিবত দূর করবে, আল্লাহ তায়ালা কিয়ামতের দিন তার মুসিবতসমূহ দূর করে দিবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো অভাবী মানুষকে সচ্ছল করে দিবে, রব্বে কারীম তাকে ইহকাল ও পরকালে সচ্ছল করে দিবেন এবং আল্লাহ বান্দার সাহায্য করবেন যদি বান্দা তার ভাইয়ের সাহায্য করে।" (সহীহ মুসলিম)। এছাড়া অসংখ্য আয়াত, হাদীসে বিপদগ্রস্ত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কথা বিবৃত হয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আমল করার তৌফিক দান করেন, আমীন।