‘বাংলাদেশ জর্ডানের সাথে উন্নয়ন অংশীদারিত্ব বৃদ্ধিতে আগ্রহী’

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেছেন, বাংলাদেশ দক্ষ মানব সম্পদ প্রেরণের মাধ্যমে জর্ডানের সাথে উন্নয়ন অংশীদারিত্ব বৃদ্ধিতে আগ্রহী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশ বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার একটি অর্থনৈতিক উদীয়মান রাষ্ট্র। বাংলাদেশ নিজ দেশে যেমন বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করছে একই ভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশী বিনিয়োগ সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে।

জর্ডান সফররত বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ জর্ডানের শ্রম মন্ত্রী নায়েফ ইস্তিতির সাথে আজ এক সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মিসেস নাহিদা সোবহান, বোয়েসেল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিল্লাল হোসেনসহ বাংলাদেশ দূতাবাস ও জর্ডান শ্রম মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আজ ঢাকায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী বলেন, সৌজন্য সাক্ষাতকালে জর্ডানের পোশাক খাতে নারী শ্রমিকদের সাথে সাথে দক্ষ পুরুষ শ্রমিকদের অন্তর্ভূক্ত করার বিষয়েও আলোচনা করেন। বর্তমানে প্রায় ৭০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশী শ্রমিক বাংলাদেশ ও জর্ডানের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরাসরি ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশে বেসরকারি বিনিয়োগের মাধ্যমে জর্ডান ও বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশীদার হতে পার। জর্ডানে পোশাক খাতে কর্মরত বিপুল সংখ্যক দক্ষ শ্রমিকদের সাথে সাথে বাংলাদেশ জর্ডানের কৃষি, তথ্য প্রযুক্তি, নির্মান শিল্প ও ট্যুরিজম সেক্টরে অংশগ্রহণে আগ্রহী। এই ক্ষেত্রে তিনি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সবুজায়নে বাংলাদেশী শ্রমিকদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে জর্ডানের অনাবাদী জমি চাষ উপযোগী করতে বাংলাদেশী শ্রমিকরা অপরিসীম ভূমিকা রাখতে পারে। জর্ডান সরকারকে সেদেশের কৃষিখাতের উন্নয়নে বাংলাদেশী কৃষি শ্রমিকদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর বিষয়টি বিবেচনা করার অনুরোধ করেন। সেই সাথে তিনি জর্ডানের ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় স্থানসমূহ দর্শনের জন্য বাংলাদেশের প্রকৃত ভ্রমণ পিপাসু নাগরিকদের জন্য বিদ্যমান ভ্রমণ বাঁধা দূর করার বিষয়ে জোর দেন। বাংলাদেশী ট্যুরিস্টদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার অনুরোধ জানান তিনি।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমেদ এমপিকে স্বাগত জানিয়ে জর্ডানের শ্রম মন্ত্রী নায়েফ ইস্তিতি বলেন, বাংলাদেশ ও জর্ডান উভয় দেশই তার স্বল্প সম্পদ ও সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বিশ্বের কাছে তাদের স্বতন্ত্র পরিচয় তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। উভয় দেশই নিজ ভূখন্ডে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে। এছাড়া ফিলিস্তিন ইস্যুতে বাংলাদেশ সব সময়ই বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। জর্ডানের পোশাক খাতের মোট শ্রমিকের অর্ধেকের বেশিই বাংলাদেশী এবং তারা নিজস্ব দক্ষতা গুণেই বাংলাদেশ ও জর্ডানের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। যুগপযোগী পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ তার উন্নয়ন লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন। বাংলাদেশের সাথে অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জর্ডান আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারে বলে মতামত ব্যক্ত করেন। এই সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে উভয় দেশের কূটনৈতিক পর্যায়ে আরও ঘনিষ্ঠ সংলাপ বিনিময়ের উপর জোর দেন। এছাড়া বাণিজ্যিক প্রতিনিধি দলের সফর বিনিময় ও তাদের মধ্যে সংলাপ বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া জর্ডানের বৈধ প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রতি সকল ধরণের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে তিনি।