| |
               

মূল পাতা জাতীয় দুর্নীতি নিয়ে কথা বলায় ঢাকা ওয়াসার দুই কর্মকর্তা বরখাস্ত


দুর্নীতি নিয়ে কথা বলায় ঢাকা ওয়াসার দুই কর্মকর্তা বরখাস্ত


রহমত ডেস্ক     12 May, 2022     11:38 AM    


ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির ১৭৬ কোটি টাকা আত্মসাতের বিষয়ে কথা বলায় দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। সমিতির টাকা আত্মসাতের বিষয়ে বিনা অনুমতিতে গণমাধ্যমে কথা বলায় তাদেরকে বরখাস্ত করা হয়।

বরখাস্তকৃত দুই কর্মকর্তা হলেন- শহিদুল ইসলাম ঢাকা ওয়াসার উপ-প্রধান প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) ও ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি এবং শাহাব উদ্দিন সরকার ঢাকা ওয়াসার অঞ্চল–২ এর পাইপলাইন পরিদর্শক (পিএলআই) ও সমিতির বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক।

ঢাকা ওয়াসার সচিব শারমিন হক আমীর স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বলা হয়, শহিদুল কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে গণমাধ্যমে ঢাকা ওয়াসা সম্পর্কে বিরূপ ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিয়েছেন। তার এই কার্যকলাপের কারণে ঢাকা ওয়াসার ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়েছে। গণমাধ্যমে তার কথা বলা অফিস শৃঙ্খলা পরিপন্থী ও গুরুতর শাস্তিযোগ্য অপরাধের সামিল বলে বরখাস্তের আদেশে উল্লেখ করা হয়।

অন্যদিকে শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি টেলিভিশনে ঢাকা ওয়াসার বিরুদ্ধে কোনো বক্তব্য দিইনি। প্রায় দেড় বছরেও সমিতির নামে থাকা ব্যাংক হিসাবের সিগনেটরি পরিবর্তন না করায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। এখানে ওয়াসা কর্তৃপক্ষের ভাবমূর্তি ও সুনাম কোথায় ক্ষুণ্ণ হয়েছে বুঝতে পারছি না। ওয়াসা কর্তৃপক্ষ দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরোটলারেন্স নীতিতে বিশ্বাসী বলেই সমিতির সহ-সভাপতি হিসেবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছি। এখানে ওয়াসার কর্মচারী পরিচয়ে কথা বলিনি।

এ বিষয়ে শাহাব উদ্দিন বলেন, ঢাকা ওয়াসার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে সমিতির টাকা সরানো হয়েছে। জড়িত ব্যক্তিরা ওয়াসা প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ বলেই কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বরং যারা অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ঢাকা ওয়াসার উপ প্রধান জনতথ্য কর্মকর্তা এ এম মোস্তফা তারেক বলেন, এ বিষয়টি তার জানা নেই।

নিরীক্ষা প্রতিবেদন বলছে, ২০১৭-১৮ ও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ঢাকা ওয়াসা কমিশন বাবদ প্রায় ১৩৪ কোটি টাকা সমিতির ব্যাংক হিসাবে জমা দিয়েছে। অথচ সমিতির নিরীক্ষা প্রতিবেদনে জমা দেখানো হয়েছে মাত্র ১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। বাকি প্রায় ১৩২ কোটি টাকার কোনো হিসাব নিরীক্ষা দল পায়নি।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০১৮ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২০ সালের ৩০ জুনের মধ্যে সমিতির ব্যাংক হিসাব থেকে ৪৪ কোটি ২১ লাখ টাকা উত্তোলন করা হয়। এই টাকা ব্যয়ের কোনো হিসাব পাওয়া যায়নি।

জানা যায়, সম্প্রতি ঢাকা ওয়াসার কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির ১৭৬ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। অভিযুক্তরা বিভিন্ন সময় সমিতির শীর্ষ পদে ছিলেন। সমবায় অধিদপ্তরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।

অর্থ-আত্মসাতের বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির ওপর এ নিরীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করে ২০২১ সালের জুন মাসে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, সমবায় অধিদপ্তর ও ঢাকা ওয়াসাকে দেওয়া হয়। এতে আর্থিক অনিয়ম নিয়ে অধিকতর তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। যদিও ওয়াসা কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।