রহমত ডেস্ক 04 May, 2022 12:59 PM
প্রায় এক বছর পর ঈদের দিন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।
মঙ্গলবার (৩ মে) সন্ধ্যা ৮টায় খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় ঢোকেন। এক ঘণ্টা তারা সেখানে ছিলেন। ‘শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে’ ফিরোজার দোতলায় দলীয় প্রধানের সঙ্গে তারা ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। সর্বশেষ গত বছরের কোরবানির ঈদের দিন খালেদা জিয়ার দেখা পেয়েছিলেন এ নেতারা। গত রোজার ঈদের বিএনপি চেয়ারপারসন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় দলের নেতাদের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়নি।
সাক্ষাৎ শেষে ‘ফিরোজা’ থেকে বেরিয়ে এসে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, করোনাভাইরাসের প্রায় দুই বছর পরে আজকে আমরা জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা একসঙ্গে ঈদের শুভেচছা জানাতে চেয়ারপারসন এবং এ দেশের ১৮ কোটি মানুষের প্রিয় নেতা, গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসেছিলাম। এ সাক্ষাৎ আমরা পূর্বেও করেছি যখন তিনি কারাগারে ছিলেন না, গৃহে অন্তরীণ ছিলেন না। ওই সময় প্রতি বছরই আমরা ঘরের ভেতরে না, ঘরের বাইরে লনে বসে ঈদের দিনে আমরা সাক্ষাৎ করতাম, শুভেচ্ছা বিনিময় করতাম। আমাদের এবারকার এ সাক্ষাৎ নিঃসন্দেহে খুব বেশি আনন্দময় ছিল না। আনন্দময় যতটুকু ছিল এ জন্য যে প্রায় বছরখানেক পর আমরা তার সঙ্গে দেখা করতে পারলাম, তার কথা শুনতে পারলাম এবং আমাদের যে শুভেচ্ছা, তিনি যেন সুস্থ হয়ে ওঠতে পারেন এ প্রার্থনার কথা তাকে আমরা জানাতে পারলাম। সব দেশবাসী যে তার জন্য প্রার্থনা করছে সেই কথাটাও আমরা জানাতে পারলাম।
তিনি বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া এখন অসুস্থ আপনারা জানেন। এ অসুস্থতার মধ্যে তিনি পূর্বেও যেমন দেশবাসীর কথাচিন্তা করেছেন সবসময়। আজকে তিনি ঠিক একইভাবে দেশবাসীর ও দেশের মানুষের অবস্থার কথা জানতে চেয়েছেন এবং বর্তমানে যে সামগ্রিক অবস্থা আছে এ অবস্থারে ব্যাপারে অবগত হয়েছেন আমাদের দ্বারা। সবসময় তিনি সেটা কাগজপত্রে পড়ছেন, নানা জায়গায় পড়েছেন। তারপরও তিনি আমাদের কাছ থেকে শুনেছেন এবং তার যে উদ্বেগ তা প্রকাশ করেছেন। দেশনেত্রী খালেদা আপনাদের এ কথা জানিয়েছেন যে, ঈদের শুভেচ্ছা তিনি আপনাদের মাধ্যমে সমগ্র দেশবাসীকে জানাতে চান। তার জন্যে দেশবাসীর কাছে দোয়া তিনি চেয়েছেন এবং তিনি দেশবাসীর জন্য দোয়া করেছেন। এদেশের মানুষ যেন ভালো থাকে, সুস্থ থাকে। গণতন্ত্রকে ফিরে পায়, মানুষ তার অধিকার ফিরে পায়- এ প্রার্থনা তিনিও করেছেন।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া এখনো সুস্থ নন। চিকিৎসকরা আছেন তারা এ বিষয়ে বলতে পারবেন। এইটুকু আমি বলতে পারি যে, এখনো তিনি অত্যন্ত অসুস্থ আছেন। এখনো হেটে খাবার টেবিলে যেতেও তার খুব কষ্ট হয়। এটাই বাস্তবতা। তাহলেই আপনারা বুঝতে পারবেন তিনি কেমন আছেন। তিনি একই কথা বলেছেন, দেশের জন্য ভালোবাসা তারা যেন প্রবল করে এবং দেশকে তারা যেন মুক্ত করে।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে সাজা স্থগিত করে সাময়িকভাবে মুক্তি দেওয়া হয় বিএনপি প্রধানকে। এরপর থেকে গুলশানের ওই বাসায় থাকছেন বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত ৭৬ বয়সী খালেদা জিয়া। যেখানে দলের নেতা-কর্মী-সমর্থক কেউই নেত্রীর সাক্ষাৎ পান না। এর আগে সকালে খালেদা জিয়ার বোন সেলিনা ইসলাম ও ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারসহ কাছের স্বজনদের নিয়ে দুপুরের খাবার খান।