রহমত ডেস্ক 24 March, 2022 04:48 PM
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, পেঁয়াজ ও তেলের দাম নিম্নমুখী। আমাদের প্রচেষ্টার কোনো কমতি নেই, তারপরও যদি কেউ হরতাল ডাকে কিছু বলার নেই। আমাদের আবেদন থাকবে যারা হরতাল ডেকেছে তারা যেন কোনো রকম ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে বিরত থাকে এবং জনজীবনের দুর্ভোগ সৃষ্টি না করে। জানমালের ক্ষতি না করে।
আজ (২৪ মার্চ) বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের দামপাড়ায় পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের উদ্বোধনের পর ২৮ তারিখ বাম জোটের হরতাল ও তাতে বিএনপির সমর্থনের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি এসব কথা বলেন। ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রামে মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে বিপ্লবীরা যে অস্ত্রাগার দখলে নিয়ে ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল, সেই অস্ত্রাগার সংরক্ষণ করে গড়ে তোলা হয়েছে ‘পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর’। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ এ জাদুঘর নির্মাণ করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, হরতাল-ধর্মঘট এটা রাজনৈতিক চর্চা। রাজনৈতিক দলগুলো এসব করতেই পারে। ২৮ তারিখের হরতালে কেউ যদি রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি, ভাঙচুর ও ধ্বংসাত্মক কিছু করে, তাহলে অবশ্যই নিরাপত্তা বাহিনী তাদের ভূমিকা রাখবে। আমরা মনে করি রাজনৈতিক দলগুলো সহিংসতার পথ পরিহার করবে। তারা কোনো ভাঙচুরের যাবে না, ধ্বংসাত্মক কাজ করবে না। জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টি করবে না। জনগণের জানমালের কোনো বাঁধার সৃষ্টি করবে না। করলে যেটা হয় সেটিই হবে।
তিনি বলেন, যে জন্য হরতাল ডেকেছে, তেলের দাম শুধু বাংলাদেশে বাড়েনি। সারাবিশ্বেই বেড়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে তার কারণে পরিবহন ব্যয় তিনগুণ হয়ে গেছে। আমাদের দেশে তেলসহ অনেক কিছুই আমদানি নির্ভর। কাজেই আমদানি ক্ষেত্রে দাম যে অস্বাভাবিক বেড়েছে তার প্রভাব কিছুটা দেশের বাজারে পড়েছে। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। দাম যেন সহনীয় পর্যায়ে থাকে সেজন্য প্রধানমন্ত্রী ভ্যাট ও ট্যাক্স কমিয়ে দিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচন এলে অনেকেই অনেক কৌশল অবলম্বন করে। নির্বাচনে যেন না আসতে হয়ে, নির্বাচন যেন ফেস না করতে হয়। জনগণের ভোট ছাড়া অন্যভাবে ক্ষমতায় আসা যায় কি না, এ ধরনের কৌশল অনেকেই করে। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী জনগণের ভরসায় চলে, জনগণের শক্তিকে নিজের শক্তি মনে করে। কাজেই জনগণের শক্তিতেই তিনি রাজনীতি করেন। জনগণের অস্থায় রাজনীতি করেন।
জেলার দামপাড়ায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইন্সে প্রায় ছয় হাজার বর্গফুট আয়তনজুড়ে পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অবস্থান। জাদুঘরটির সংগ্রহে রয়েছে মাস্টারদা সূর্য সেনের নেতৃত্বে গঠিত ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মির সদস্যদের ছবি, ব্যবহৃত অস্ত্র, পোশাক ও বিভিন্ন জিনিসপত্র। এছাড়া জাদুঘরের একটি অংশজুড়ে রয়েছে বঙ্গবন্ধু কর্নার। সেখানে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের চট্টগ্রামের অংশটির পাশাপাশি মহান মুক্তিযুদ্ধের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন স্মারক, ডকুমেন্ট স্থান পেয়েছে। এছাড়াও জাদুঘরের সংগ্রহে রয়েছে তৎকালীন পুলিশ সদস্যদের ব্যবহৃত বিভিন্ন অস্ত্র ও পোশাক, শহীদ পুলিশ সুপার এম শামসুল হকের স্মারক হিসেবে ব্যবহৃত র্যাংক ব্যাজসহ টিউনিক সেট, স্টিক, ক্যামেরা, কলম, বেল্ট, ক্যাপ। আরো রয়েছে, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ আরআই আকরাম হোসেনের স্মারক হিসেবে তার ব্যবহৃত রেডিও। জাদুঘরটিতে মাস্টারদা সূর্যসেন থেকে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত নানা ইতিহাস সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।