রহমত ডেস্ক 18 March, 2022 04:11 PM
দেশের দুই কোটি শ্রমিক পরিবারকে রেশন দেওয়ার দাবি জানিয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, বেশি কিছু নয়, সপ্তাহে একবার ১০ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, আধা কেজি চিনি, আধা লিটার তেল- এটা হলো ন্যূনতম দাবি। প্রধানমন্ত্রীকে কোনো একজন শ্রমিকের বাড়িতে গিয়ে তার দুপুরের খাবারের প্লেটটা দেখে আসুন। আজ (১৮ মার্চ) শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি আয়োজিত গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ এবং গার্মেন্টস শ্রমিকদের গণতান্ত্রিক ও মানবিক অধিকার নিশ্চিত করার দাবিতে আয়োজিত সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আজ শ্রমিকরা যে কী করুণ অবস্থায় আছেন, সেটা দেখার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানাচ্ছি। অনুগ্রহ করে যেকোনো একজন শ্রমিকের বাড়িতে যান, তার দুপুরের খাবারের প্লেটটা দেখেন। তার প্লেটে কতটুকু পরিমাণ খাবার আছে দেখেন। আজকের শ্রমিকের যদি অন্ন না জোটে তাহলে দেশ টিকে থাকবে না। যদি কৃষক তার উৎপাদন না করে এই দেশ মানচিত্রেই সীমিত হয়ে যাবে।’ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি কি লক্ষ করেছেন, আপনার দুঃশাসন, অপশাসন বা ভুল শাসন লুকিয়ে রাখার ফলে কি হয়েছে? আট হাজার কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে। অপরদিকে দরিদ্র মানুষের হাহাকার হু হু করে বাড়ছে। আজকে কুইক রেন্টাল আবার আপনি রিন্যু করতে যাচ্ছেন। সর্বনাশ করবেন না। কুইক রেন্টালের যে টাকা তাদের পকেটে দেবেন তার এক পঞ্চমাংশ যদি কৃষক শ্রমিককে দেন দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে, বাজারদর কমবে, কলকারখানায় হাসিমুখে শ্রমিকরা কাজ করবে।
জাফরুল্লাহ বলেন, ‘শ্রমিক না বাঁচলে কৃষক না বাঁচলে দেশ বাঁচবে না। আপনিও বাঁচবেন না। আপনি একটা চিন্তা করে দেখেন। এক কোটি কার্ড দেবেন কার মাধ্যমে? আপনার ছাত্রলীগের পাণ্ডা, দুর্নীতি পরায়ণ আওয়ামী লীগ নেতা। এর ফলে জনগণের কি খাদ্য জুটবে। আপনি দুই কোটি পরিবারকে প্রতি সপ্তাহে রেশন দেন। ১০ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, আধা কেজি চিনি, আধা লিটার তেল- এটা হল ন্যুনতম দাবি। আপনি বলেছেন এতে দুর্নীতি হয়। আপনার চারদিকে যে দুর্নীতিবাজরা, তাদেরকে দেখাশোনা করার জন্য সর্বদলীয় কমিটি করেন। সর্বদলীয় কমিটি আপনার দুর্নীতিবাজদের দেখাশোনা করবে। আমি আপনাকে আহ্বান করছি আপনি একটু ভালোভাবে চিন্তা করে দেখেন।’
সম্মেলনে বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি আট দফা দাবি জানিয়েছে। দাবিগুলো হল- ১. গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে ১০ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট প্রদান ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের সাথে সমন্বয় করে মহার্ঘ্য ভাতা চালু করতে হবে। ২. হাজিরা বোনাস ও ওভারটাইম চলাকালীন উন্নত খাবার প্রদান। ৩. গার্মেন্টস কারখানায় নিরাপদ, স্বাস্থ্যকর ও গণতান্ত্রিক কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। ৪. কারখানা পর্যায়ে অবাধ ট্রেড ইউনিয়নসহ গণতান্ত্রিক শ্রম আইন বাস্তবায়ন। ৫. কথায় কথায় শ্রমিক ছাঁটাই ও হয়রানি বন্ধ করে শ্রমিক নেতা ও সংগঠকদের বিরুদ্ধে সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। ৬. নারী শ্রমিকদের যৌন হয়রানিসহ সব ধরনের নির্যাতন ও বৈষম্য দূর করতে হবে। ৭. ছয় মাস মাতৃত্বকালীন ছুটির বিধান ও ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন করতে হবে। ৮. শ্রমিক পরিবারের জন্য স্বল্পমূল্যে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করে শ্রমিকদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আবাসনসহ মানবিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে সব শ্রমিককে করোনার টিকা দিতে হবে।