মূল পাতা শিক্ষাঙ্গন জাতীয়করণসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছে সকস্বাশিস
রহমত ডেস্ক 09 March, 2022 07:49 PM
তিনশোর বেশি কলেজ দীর্ঘদিনেও জাতীয়করণ না হওয়ায় শিক্ষকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে জানিয়ে জাতীয়করণসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছে সরকারি কলেজ স্বাধীনতা শিক্ষক সমিতি-সকস্বাশিস। প্রধানমন্ত্রী যে উদ্দেশ্য নিয়ে কলেজগুলো সরকারিকরণ করেছিলেন তা হিতে বিপরীত দিকেই যাচ্ছে। আজ (৯ মার্চ) বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সকস্বাশিস আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির একাধিক নেতা ও ভুক্তভোগী শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
সংগঠনটির নেতারা বলেন, দীর্ঘ প্রায় সাত বছর ধরে ঝুলে আছে জাতীয়করণের কাজ। তিনবার বিভিন্ন জায়গায় যাচাই-বাছাই হয়েছে কাগজপত্র। মানসিকভাবে শিক্ষকরা অনেকটা বিপর্যস্ত। তিন শতাধিক কলেজের মধ্যে দীর্ঘ সাত বছরে এ পর্যন্ত মাত্র একটি কলেজের শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কলেজগুলোর শিক্ষকদের দ্রুত নিয়োগের মাধ্যমে সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে না পারলে শিক্ষায় বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। শিক্ষকদের জাতীয়করণ সম্পন্ন না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা সরকারি বেতনে পড়াশোনার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। নতুন সরকারিকরণ করা স্কুল-কলেজে প্রায় সাত বছর ধরে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক সংকট এখন চরমে। পূর্বের শিক্ষকদের নিয়োগ সম্পন্ন না হওয়ার কারণে নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া যাচ্ছে না। ফলে দেশব্যাপী সরকারি হওয়া কলেজগুলোতে পাঠদান কার্যক্রম ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
দাবিগুলো হলো : ১. বৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত সব শিক্ষক-কর্মচারীকে এ অর্থবছরে অর্থাৎ আগামী ৩০ জুনের মধ্যে এডহক নিয়োগ দিতে হবে। ২. শিক্ষক-কর্মচারীদের জ্যেষ্ঠতা ও পেনশনের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানে যোগ দেওয়ার তারিখ থেকে চাকরির পুরো সময়কাল গণনা করতে হবে। ৩. চাকরির আট বছর পূর্তিতে প্রথম গ্রেড থেকে টাইমস্কেল পেয়ে যারা সপ্তম গ্রেডে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন তাদের সরকারি করা কলেজ শিক্ষক ও কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা, ২০১৮ এর ৯ ধারা মোতাবেক সপ্তম গ্রেডেই নিয়োগ দিতে হবে। ৪. নিয়োগ সম্পন্ন হওয়া কলেজগুলোর শিক্ষকদের সরকারি করা কলেজ শিক্ষক ও কর্মচারী জাতীয়করণ বিধিমালা, ২০১৮ এর ৮ ধারা মোতাবেক ক্যাডারভুক্তির জন্য দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালা ১৯৮১ এবং বাংলাদেশ সিভিল ডিস (সাধারণ শিক্ষা) কম্পোজিশন অ্যান্ড ক্যাডার বিধিমালা ১৯৮০ অনুসারে পরবর্তী সময়ে চাকরি স্থায়ীকরণ ও পদোন্নতিসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। ৫. প্রতিষ্ঠান জিও জারির সময়ে যাদের বয়স ৫৯ বছরের মধ্যে ছিল তাদের সরকারি যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। ৬. জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে যেসব কলেজের শিক্ষকদের ব্যাপারে মতামত চাওয়া হচ্ছে সেসব শিক্ষকদের ফাইলের ওপর চাওয়া মতামত সর্বোচ্চ সাত কার্যদিবসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে ও অযাচিত মতামত চাওয়া বন্ধ করতে হবে। ৭. আংশিক আটকে থাকা শিক্ষকদের ফাইলের কারণে পুরো কলেজের শিক্ষকদের ফাইল আটকে রাখা যাবে না। ৮. বর্তমান জাতীয় পে-স্কেল অনুসারে টাইম স্কেল/সিলেকশন গ্রেড বাদ দিয়ে ১০ বছর চাকরিকাল অতিক্রান্তের পর পরবর্তী গ্রেডে পদোন্নতির বিধান অনুযায়ী সরকারি করা কলেজের শিক্ষকদের পদোন্নতি দিতে হবে। ৯. যারা অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে ইনডেক্স নিয়ে যোগদান করেছেন তাদের পূর্বের প্রতিষ্ঠানের সমুদয় চাকরিকাল গণনা করতে হবে। এনটিআরসিএ নিয়ম অনুযায়ী যিনি যে বিষয়ের শিক্ষক পদে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সিলেক্ট হয়েছেন তাকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষক নিয়োগদান সম্পন্ন করতে হবে।