| |
               

মূল পাতা শিক্ষাঙ্গন ৫ মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ১৮ শিক্ষার্থী নির্যাতনের শিকার 


৫ মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ১৮ শিক্ষার্থী নির্যাতনের শিকার 


রহমত ডেস্ক     28 February, 2022     06:35 PM    


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলগুলোতে বিগত পাঁচ মাসে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ১৮ জন শিক্ষার্থী। এছাড়া ৩ জন সাংবাদিক ও দুইজন ফটো সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।  ১৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ৩ জন, মাস্টারদা সূর্যসেন হলে ৩ জন, বিজয় একাত্তর হলে ৩ জন, স্যার এ এফ রহমান হলে ৭ জন, রোকেয়া হলে ১ জন এবং জগন্নাথ হলে ১ জন শিক্ষার্থী শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এসব ঘটনায় নির্যাতকের ভূমিকা পালন করেছে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

আজ (২৮ ফেব্রুয়ারি) সোমবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে মানবাধিকার বিষয়ক শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম ‘স্টুডেন্টস অ্যাগেইনস্ট টর্চার’-স্যাট এসব তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন প্ল্যাটফর্মটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্মৃতি আফরোজ সুমি, আহনাফ সায়েদ খান, আনাস বিন মনির, সাদ আরমান নাফিস প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সালেহ উদ্দিন সিফাত বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে চলমান নির্যাতন, নিপীড়ন ও সহিংসতাকে আমরা মানবাধিকারের লঙ্ঘন হিসেবে দেখি। নাগরিকরা কোনো নির্যাতন, নিষ্ঠুর ও অমানবিক দণ্ডের শিকার হবে না- এ প্রতিশ্রুতি দেওয়া যেমন রাষ্ট্রের দায়িত্ব। তেমনি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষেরও দায়িত্ব শিক্ষার্থীরা যে কোনো নির্যাতন, নিপীড়ন কিংবা সহিংসতার শিকার হবে না, তা নিশ্চিত করা এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা। কিন্তু আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। এই নির্যাতনের হার সবচেয়ে বেশি আবাসিক হলগুলোর অতিথি কক্ষে। যা নির্যাতিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষার অধিকারকেও নীরবে হরণ করছে।

সিফাত জানান, স্যাট প্রতিবছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সংগঠিত নির্যাতনগুলোর পরিসংখ্যান প্রকাশ করবে। ইতোপূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও এসব ঘটনা তথ্যবহুল আকারে কখনো প্রকাশিত হয়নি। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিয়মিত নির্যাতনের ঘটনা ঘটলেও এসব ঘটনার ভয়াবহতা সম্পর্কে আমাদের জানা সম্ভব হয় না। আমরা এবারের প্রতিবেদনে নির্যাতনকারীর নাম প্রকাশ করছি না। কিন্তু সামনের দিনগুলোতে আমরা নির্যাতনকারীর নাম, বিভাগ, হল এসব প্রকাশ করব। প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা দেব। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি কোনো ধরনের ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আচার্য ও মহামান্য আদালতের দ্বারস্থ হবো, রিট পিটিশন দায়ের করা হবে।

গত কয়েক মাসের ঘটনা সম্পর্কে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস খোলার আগে বিশ্বিবদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর আশ্বাস দিয়েছিলেন যে কোনো ধরনের নির্যাতনের ঘটনা ঘটবে না। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস খোলার পর নির্যাতন শুরু হয়। এসব নির্যাতনের মধ্যে মাত্র তিনটি ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেগুলো নামমাত্র ব্যবস্থা। সত্তর শতাংশ ক্ষেত্রে প্রশাসন নির্বিকার থাকে, বাকী ত্রিশ শতাংশ নির্যাতনের ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। নির্যাতনের মতো অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘনীয় অপরাধের ক্ষেত্রে ষাণ্মাসিক ও বাৎসরিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এই প্রতিবেদন তুলে ধরছি যাতে প্রত্যেকটি নির্যাতনের ঘটনা তদন্তপূর্বক নির্যাতকদের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এই লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে গেস্টরুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে একটি প্রশাসনিক বিধি এবং আইন তৈরি করারও প্রস্তাব রাখছি।