রহমত ডেস্ক 20 February, 2022 10:27 PM
বাংলাদেশ জাতীয়তাদী দল-বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর পুত্র জয় এই সরকারের অনেক বেতন পাওয়া একজন উপদেষ্টা। তার একটা প্রজেক্ট পাস করার জন্য মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। সেখানে বিচারককে পর্যন্ত সম্পৃক্ত করা হয়েছে। দুইজন বিচারকের নাম বলা হয়েছে। সচিবালয়ে ফাইল মুভমেন্ট করার কথা বলা হয়েছে। আমরা জানতে চাই, ফোনালাপে কী বলা হয়েছে? মন্ত্রী নিজে বলেছেন, এই ফোনালাপ কীভাবে ফাঁস হলো তার তদন্ত করা হবে। অর্থাৎ, তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন এই কথোপকথন সত্য। আমরা দাবি করছি, ফোনালাপে যেসব বিষয়ে কথা বলা হয়েছে তার তদন্ত হোক। আমরা জানতে চাই, এই বিশেষ প্রজেক্ট, ব্রেইন চাইল্ড প্রজেক্ট এবং অন্যান্য যে বিষয়গুলো সম্পর্কে বলা হয়েছে তা জনগণের সামনে উপস্থাপন করতে হবে। না হলে জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। আইন ও বিচার বিভাগের মন্ত্রী আনিসুল হক ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমানের (সালমান এফ রহমান) মধ্যকার ফাঁস হওয়া ফোনালাপের বিষয়বস্তু জাতির সামনে উপস্থাপন করার দাবি জানান তিনি।
আজ (২০ ফেব্রুয়ারি) রবিবার বিকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, ঢাকা উত্তর সদস্য সচিব আমিনুল হক, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল। যেই দেশের মানুষ গণতন্ত্র চেয়েছে, সেই দেশকে আজ আন্তর্জাতিকভাবে গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। কত বড় লজ্জার কথা। আজ বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কিছু কর্মকর্তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কারণ, তারা এই সরকারের নির্দেশে গুম, খুন করছে। এই অবস্থা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হলে সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই ফ্যাসিবাদী সরকারকে পরাজিত করে একটা জনগণের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দেশ এখন দুর্নীতিতে ভরে গেছে , এখন দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন কর্মকর্তা, যিনি অনেকগুলো দুর্নীতির মামলা দেখেছেন, তাকে সরিয়ে (চাকরি থেকে অব্যাহতি) দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, দুর্নীতি দমন কমিশনকে আজ পুরোপুরি দুর্নীতিগ্রস্ত করে ফেলা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সময় খুব কম, দ্রুত নিজেদের সংগঠিত করতে হবে, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে অতি দ্রুত এই ভয়াবহ সরকারের বিরুদ্ধে রাজপথে নামতে হবে। এই সরকার বেশিদিন ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশের অস্তিত্ব থাকবে না। বাংলাদেশ একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে। এই অবস্থায় ৫২-র ভাষা আন্দোলন ও ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে আমাদের রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে, নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। জনগণের ভোটের অধিকার, বেঁচে থাকার অধিকার তারা নষ্ট করে দিয়েছে। বাংলাদেশের আত্মাকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশে লুটপাটের রাজত্ব তৈরি করেছে।