রহমত ডেস্ক 19 February, 2022 04:38 PM
ভবন নির্মাণে রাজউকের পাশাপাশি সিটি করপোরেশন থেকে অনুমোদন নিতে হলে গ্রাহক ভোগান্তি বাড়বে বহুগুণ। ফাইল আটকে থাকবে মাসের পর মাস। আর্থিক অনিয়মও হবে ভয়াবহ। ভবন নির্মাণে অনুমোদন নিতে গিয়ে অনেক সময় মাসের পর মাস ফাইল আটকে থাকে রাজউকে। এবার সিটি করপোরেশন থেকে অনুমোদন নিতে গেলে একই ভোগান্তি হবে দুই জায়গায়। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন গ্রাহক। বিনিয়োগে বাধার মুখে পড়বেন ব্যবসায়ী।
আজ (১৯ ফেব্রুয়ারি) শনিবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাব আয়োজিত ‘ভবন নির্মাণে রাজউকের পাশাপাশি সিটি করপোরেশন থেকে অনুমোদন গ্রহণের বিধানের প্রতিবাদ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে’ আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা এসব শঙ্কার কথা জানান। সংবাদ সম্মেলনে রিহ্যাব সভাপতি শামসুল আলামিন কাজল, সহ-সভাপতি কামাল মাহমুদ, সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সোহেল রানাসহ রিহ্যাব নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন (কাজল) বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর রাজউক ৫০ বছরের অধিক সময় থেকে ঢাকায় ছোট-বড় সব ধরনের অবকাঠামো নির্মাণের অনুমোদন দিচ্ছে এবং তদারকি সংস্থা হিসেবে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। এই দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় ভালো বা মন্দ যাই হোক না কেন রাজউক ও তার জনবল উক্ত কাজে একটি সক্ষমতা অর্জন করেছে। তাদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে। ৫০ বছরের অভিজ্ঞতা লব্ধ সক্ষমতা অর্জনে সিটি করপোরেশন অদ্যাবধি নবীনতম বলে স্পষ্টত প্রতীয়মান। সিটি করপোরেশনের তো এই মুহূর্তে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় জনবল নেই, কোনো কাঠামো নেই। ফলে ভোগান্তি বেড়ে যাবে আরও কয়েকগুণ। নতুন করে অবকাঠামো নির্মাণে অনুমোদনের দায়িত্ব সিটি করপোরেশন পেলে তাতে দ্বৈত প্রশাসনের সৃষ্টি হবে। এই সিদ্ধান্ত আসলেই সাংঘর্ষিক ও অবাঞ্ছিত। আমরা ভোগান্তি কমাতে রিহ্যাব থেকে দীর্ঘদিন ধরে ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করার দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু সেখানে আরও নতুন তদারকি সংস্থা যুক্ত করা হচ্ছে। যা মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে বিবেচিত হবে। আবাসন খাত অর্থনীতিতে ব্যাপকভাবে অবদান রেখে যাচ্ছে। সিটি করপোরেশন থেকে এই ধরনের প্রস্তাব বিনিয়োগবান্ধব নয়। দেশের বিদ্যমান আবাসন সমস্যা বিবেচনায় নিয়ে আমরা আবাসন খাতের বিনিয়োগকে সহজ করার দাবি জানাই। আমরা সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে অর্ধশতকের অভিজ্ঞ রাজউককে পরিকল্পিত শহর গঠন ও তদারকির দায়িত্ব অব্যাহত রাখার দাবি জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে পত্রিকা মারফত জানতে পারি, কেবল বহুতল ভবনই নয় যেকোনো ভবন নির্মাণে সিটি করপোরেশন থেকে অনুমোদন নিতে হবে। এক্ষেত্রে একই ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে কতবার অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। এটা সর্বজনবিদিত যে, উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার রূপকার বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বর্তমান সরকার জনগণের ভোগান্তি কমাতে চাচ্ছে। এজন্য অনেক কিছু ডিজিটালাইজড করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী যেখানে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির জন্য একটি সুন্দর ও সুশৃঙ্খল ব্যবস্থা প্রচলন প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, সেই রকম একটি ক্ষেত্রে এই জাতীয় সিদ্ধান্ত গৃহায়ন শিল্পের জন্য একটি গভীর ও নবতর সংকট সৃষ্টি করবে। সরকার যেখানে ইজি অব ডুইং বিজনেস করার প্রক্রিয়া চলমান রেখেছে সেই অবস্থায়, এই ধরনের সিদ্ধান্ত ইজি অব ডুইং বিজনেস পরিপন্থী বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। যেটি আমাদের আরও শঙ্কিত করেছে সেটি হলো সিটি করপোরেশন অনুমোদিত স্থাপনা নিয়মিত মনিটরিং করার ব্যবস্থা রাখবে এবং যদি সিটি করপোরেশন মনে করে রাজউক অনুমোদিত অবকাঠামো শহরের জন্য কল্যাণকর নয় তাহলে সেই অবকাঠামোর কাজ বন্ধ করে দিতে পারবে। এখানে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে এই কল্যাণকর বা অকল্যাণকরের মাপকাঠি কিসের ভিত্তিতে নির্ধারণ করা হবে এই প্রশ্নে আমরা শঙ্কিত ও আতঙ্কিত।