| |
               

মূল পাতা জাতীয় সিইসি ও ইসি গঠন আইনের গেজেট প্রকাশ


সিইসি ও ইসি গঠন আইনের গেজেট প্রকাশ


রহমত ডেস্ক     30 January, 2022     12:44 PM    


একাদশ জাতীয় সংসদের ষোড়শ অধিবেশনে পাস হওয়া প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল- ২০২২ এর গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। আজ (৩০ জানুয়ারি) রবিবার সচিব কে এম আবদুস সালামের স্বাক্ষরিত এই গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। এখন আইন অনুযায়ী সার্চ কমিটি (অনুসন্ধান কমিটি) গঠন করে দিতে পারেন রাষ্ট্রপতি। আপিল বিভাগের একজন বিচারকের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের এই অনুসন্ধান কমিটি হবে। আইনে বর্ণিত যোগ্যতা-অযোগ্যতা বিবেচনা করে তারা ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবেন। ১০ জনের মধ্য থেকেই পাঁচজনকে নিয়ে রাষ্ট্রপতি গঠন করবেন নতুন নির্বাচন কমিশন।  কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি। তার আগেই নতুন কমিশন গঠন করতে হবে রাষ্ট্রপতিকে। সেই কমিশনের অধীনেই হবে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।

সংবিধানের বিধান অনুযায়ী ইসি গঠনে আইন প্রণয়নের দাবি ছিল দীর্ঘদিন ধরেই। আইন না থাকায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সময় থেকে সার্চ কমিটি গঠন করে নির্বাচন কমিশন গঠন শুরু হয়, যা অনুসরণ করেন বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। এবার সার্চ কমিটি গঠনে রাষ্ট্রপতির সংলাপের মধ্যেই আইনের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা কমিটি, যা গত বৃহস্পতিবার সংসদে পাস হয়। সংসদের ভেতরে ও বাইরে আইনটি নিয়ে চলে অনেক আলোচনা-সমালোচনা। অনুসন্ধান কমিটিতে রাষ্ট্রপতির মনোনীত দুই ‘বিশিষ্ট নাগরিকের’ মধ্যে একজন নারীকে রাখার বাধ্যবাধকতা রেখে বহুল আলোচিত নির্বাচন কমিশন গঠন আইনের প্রস্তাবে সায় দেয় জাতীয় সংসদ। শনিবার সেই বিলে রাষ্ট্রপতি সই করার পর রোববার তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হল। নিয়ম অনুযায়ী, রাষ্ট্রপ্রতি সংসদে পাস হওয়া কোনো বিলে সম্মতি দিলে তা আইনে পরিণত হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন আইনটির গেজেট প্রকাশ হওয়ায় এখন আসবে সার্চ কমিটির ঘোষণা, সেটাও গেজেট আকার প্রকাশ করা হবে। বঙ্গভবনের এত কর্মকর্তা জানান, রবিবার বা সোমবারের মধ্যে সার্চ কমিটির ঘোষণা আসতে পারে। সার্চ কমিটি গঠন, গেজেট প্রকাশ, তাদের সুপারিশ জমাসহ বাকি সব কাজের জন্য হাতে থাকছে ১৫ দিন সময়।

নির্বাচন কমিশন আইনের গেজেট

কারা থাকবেন সার্চ কমিটিতে : রাষ্ট্রপতি ছয় সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি গঠন করবেন, যার সভাপতি হবেন প্রধান বিচারপতি মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারক। সদস্য হিসেবে থাকবেন- প্রধান বিচারপতির মনোনীত হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারক, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, সরকারি কমিশনের চেয়ারম্যান এবং রাষ্ট্রপতি মনোনীত দুই জন বিশিষ্ট নাগরিক। এ দুই বিশিষ্ট নাগরিকের মধ্যে একজন হবেন নারী। তিন জন সদস্যের উপস্থিতিতে কমিটির সভার কোরাম হবে। এ কমিটির কাজে সাচিবিক সহায়তা দেবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

কী হবে সার্চ কমিটির কাজ : সার্চ কমিটির (অনুসন্ধান কমিটি) কাজ সম্পর্কে আইনে বলা হয়েছে, এ কমিটি স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে দায়িত্ব পালন করবে। আইনে বেধে দেওয়া যোগ্যতা, অযোগ্যতা অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও সুনাম বিবেচনা করে সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে। এ অনুসন্ধান কমিটি সিইসি ও কমিশনারদের প্রতি পদের জন্য দুই জন করে ব্যক্তির নাম সুপারিশ করবে। কমিটির গঠনের ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে জাম দিতে হবে। সার্চ কমিটি সিইসি এবং নির্বাচন কমিশনার পদে যোগ্যদের অনুসন্ধানের জন্য রাজনৈতিক দল এবং পেশাজীবী সংগঠনের কাছ থেকে নাম আহ্বান করতে পারবে।

সিইসি ও কমিশনারদের যোগ্যতা : সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার পদে কাউকে সুপারিশের ক্ষেত্রে তিনটি যোগ্যতা থাকতে হবে। ১. তাকে বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। ২. ন্যূনতম ৫০ বছর বয়স হতে হবে। ৩. কোনো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি, বিচার বিভাগীয়, আধা সরকারি বা বেসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত পদে বা পেশায় পদে তার অন্যূন ২০ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

সিইসি ও কমিশনারদের অযোগ্যতা : সিইসি ও কমিশনার পদের জন্য ছয়টি অযোগ্যতার কথা বলা হয়েছে। ১.আদালত অপ্রকৃতিস্থ ঘোষণা করলে। ২. দেউলিয়া হওয়ার পর দায় থেকে অব্যাহতি না পেলে। ৩. কোনো বিদেশি রাষ্ট্র্রের নাগরিকত্ব নিলে কিংবা বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করলে। ৪. নৈতিক স্খলনজনিত ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে। ৫. ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনালস) অ্যাক্ট-১৯৭৩ বা বাংলাদেশ কোলাবরেটরস (স্পেশাল ট্রাইব্যুনালস) অর্ডার-১৯৭২ এর অধীনে কোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত হলে। ৬. আইনের দ্বারা পদাধিকারীকে অযোগ্য ঘোষণা করছে না, এমন পদ ব্যতীত প্রজাতন্ত্রের কর্মে লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকলে।