রহমত ডেস্ক 29 January, 2022 07:31 PM
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে সারের ভর্তুকিতে প্রয়োজন ২৮ হাজার কোটি টাকা। এতো টাকার জোগান নিয়ে সরকার দুশ্চিন্তায় রয়েছে। চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত ১৯ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। আগামী জুন পর্যন্ত আরও ৯ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন হবে। এতো টাকা জোগান নিয়ে সরকার দুশ্চিন্তায় রয়েছে। আজ (২৯ জানুয়ারি) শনিবার রাজধানীর এফডিসিতে জাতীয় নিরাপদ খাদ্য দিবস উপলক্ষে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ‘নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে সরকারের যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে’ ছায়া সংসদে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। বিতর্কে ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিকরা অংশগ্রহণ করেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সারের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধি ও পরিবহণ ব্যয় বাড়ার ফলেই এ বিশাল অংকের ভর্তুকি লাগবে। এমনিতে আমাদের প্রতিবছর ৮-৯ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকিতে লাগে। এতো বিশাল অংকের ভর্তুকি কোথা থেকে আসবে এ বিষয়ে সরকার দুশ্চিন্তায় রয়েছে। এতো ভর্তুকি দিলে অন্যান্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে যাবে। কিন্তু কৃষকবান্ধব ও কৃষকদরদী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন কৃষকের কল্যাণে ও কৃষির উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে এ মুহূর্তে সারের দাম বাড়াবেন না। অন্যান্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের গতি শ্লথ হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারে ভর্তুকি দিয়ে যাবেন। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ৬ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি প্রদান করা হয়েছে, প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ১৩ হাজার কোটি টাকা। আর জুন পর্যন্ত প্রয়োজন হবে আরও ৯ হাজার কোটি টাকা। কৃষি মন্ত্রণালয়ের পর্যালোচনায় এ তথ্য উঠে এসেছে। গত ২০২০-২১ অর্থবছরে সারে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছিল সাত হাজার ৭০০ কোটি টাকা।
তিনি আরো বলেন, আগামী ৩ থেকে ৪ বছরের মধ্যে সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। বর্তমান সরকার সবার জন্য নিরাপদ খাবারের নিশ্চয়তা দিতে নিরলসভাবে কাজ করছে। সেজন্য নিরাপদ খাদ্য আইন প্রণয়ন করেছে, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠিত হয়েছে। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা বৃদ্ধির কাজ চলছে। এছাড়া এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক মানের অনেকগুলো ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে, আরও অনেকগুলো স্থাপনের উদ্যোগ চলছে। বিদেশে রপ্তানি করার ক্ষেত্রেও নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা দিতে হবে, নিরাপদ ফসলের উৎপাদনের প্রচেষ্টা চলছে। উত্তম কৃষি চর্চা মেনে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এটি মেনে ফসল উৎপাদিত হলে খাবার যেমন নিরাপদ ও পুষ্টিকর হবে, তেমন রপ্তানিও বৃদ্ধি পাবে। পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক মানের প্যাকিং হাউজ ও ল্যাব স্থাপনের কাজ চলছে। সরকারের এসব পদক্ষেপের ফলে আগামী ৩-৪ বছরের মধ্যে সবার জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে আমরা সক্ষম হবো। নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করতে হলে সাধারণ মানুষের আয়ও বাড়াতে হবে। আয় বাড়াতে না পারলে, জীবনযাত্রার মানের উন্নয়ন ঘটাতে না পারলে ভেজাল ও অনিরাপদ খাবারের প্রকোপ আরো বাড়বে।