রহমত ডেস্ক 29 January, 2022 05:36 PM
দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে শীতের প্রকোপ বেড়েই চলছে। উত্তর দিক থেকে বয়ে আসা হিমালয়ের হিম বাতাস আর ঘন কুয়াশার কারণে এ জেলায় তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। এতে শীতের তীব্রতা বেড়েই চলছে। কনকনে শীতে জেলার গরিব, অসহায় ও খেটে খাওয়া শীতার্ত লোকজন চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। আজ (২৯ জানুয়ারি) শনিবার তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, আজ শনিবার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা সারাদেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তবে তাপমাত্রা আরও হ্রাস পেতে পারে।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র বলছে, এ জেলা থেকে হিমালয় অনেক কাছাকাছি হওয়ায় প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও শীত মৌসুমে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। গত কয়েক দিন ধরে এ জেলার তাপমাত্রা ওঠানামা করায় মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তবে, উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। এছাড়াও মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ, গোপালগঞ্জ, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, ফেনী, যশোর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা এবং বরিশাল জেলাসহ রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেটে কুয়াশা পড়তে পারে। রংপুর বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারাদেশে রাতের এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
জানা গেছে, বিকেলের পর থেকে পঞ্চগড় জেলার ওপর দিয়ে হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করে। সঙ্গে ঘন কুয়াশা আচ্ছাদিত থাকে। যা স্থায়ী থাকে পরদিন সকাল পর্যন্ত। তবে বেলার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশা কাটিয়ে খানিকটা সূর্যের দেখা মিললেও উত্তাপ থাকছে না। এ জেলায় ওপর দিয়ে সবসময় হিমেল বাতাস বয়ে যাচ্ছে। কনকনে শীতে সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন জেলার গরিব, অসহায় ও শীতার্ত মানুষেরা। তারা কনকনে শীতে তেমন কাজ করতে পারছেন না। কাজের সন্ধানে বের হলেও অনেকে কাজ না পেয়ে বাড়িতে ফিরে যাচ্ছেন। প্রতিবছর শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলেও অনেকের ভাগ্যে তা জোটে না। এখন পর্যন্ত জেলার ৫ উপজলার ৪৩টি ইউনিয়ন ও ৩টি পৌরসভায় মোট ৩৪ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। প্রকৃত গরিব, অসহায় ও শীতার্ত মানুষদের মাঝে এসব শীতবস্ত্র বিতরণ করার হয়েছে। শীতবস্ত্র চেয়ে মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র প্রেরণ করা হয়েছে। তবে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিদিনিই শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও পঞ্চগড়ে শীতের প্রকোপ বেশি। শীত মোকাবেলা করার জন্য জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন পর্যাপ্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করে কাজ করে যাচ্ছে। কমবেশি প্রতিদিনই জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রকৃত গরিব, অসহায় ও শীতার্ত মানুষদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা ও বিত্তবানরা যদি এসব গরিব মানুষদের জন্য শীতবস্ত্র দিয়ে পাশে দাঁড়ায়, তাহলে তাদের কষ্ট অনেকখানি লাঘব হবে।