| |
               

মূল পাতা ইসলাম জুমার বয়ান ‘করোনার প্রাদুর্ভাব মনুষ্য সৃষ্ট পরিবেশ দূষণের ফল’


‘করোনার প্রাদুর্ভাব মনুষ্য সৃষ্ট পরিবেশ দূষণের ফল’


রহমত ডেস্ক     28 January, 2022     03:50 PM    


বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মুহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহিল বাকী বলেন, যুগে যুগে যেসব মহামারির আবির্ভাব হয়েছিল, বা বর্তমানে হচ্ছে সবগুলোর জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে দায়ী হলো পরিবেশ দূষণ। আল্লাহ তায়ালা ইচ্ছা করলে সবকিছু বিনা উৎস ও বিনা কারণে করতে পারেন। আল্লাহ তায়ালা কিন্তু তা করেন না। আল্লাহ তায়ালা কিছু করার জন্য বা ঘটানোর জন্য কিছু নিয়ম ও উৎস নির্ধারণ করেছেন, সেই নিয়ম ও উৎসের মাধ্যমে সবকিছু করেন এবং ঘটান। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, আল্লাহ তায়ালার নিয়মের মধ্যে কোন পরিবর্তন পাবে না। হ্যাঁ উৎস ও নিয়মবহির্ভূত ভাবেও কিছু কিছু ঘটনা ঘটিয়ে দেখান তাঁর কুদরাত প্রকাশের জন্য যা আমাদের জন্য ব্যতিক্রমী, আল্লাহ তায়ালার জন্য তাঁর কুদরাতের বহিঃপ্রকাশ। প্রকৃতিতে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু ঘটেনা। প্রতিটি ঘটনা বা উপাদান অন্য ঘটনা বা উপাদান দ্বারা প্রভাবিত ও নিয়ন্ত্রিত। কাজেই প্রকৃতির সাথে মানুষ যে ঘটনা ঘটাচ্ছে বা প্রকৃতির উপর মানুষ যে হস্তক্ষেপ করছে তার কারণেই পরিবেশ নষ্ট ও অপরিচ্ছন্ন হচ্ছে। পরিবেশ নষ্ট ও অপরিচ্ছন্ন হওয়ার কারণে একেকটি দুর্যোগ পৃথিবীতে দেখা দিচ্ছে। বর্তমানে যে করোনা বা তার ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন, ডেল্টার প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে তা ও মনুষ্য সৃষ্ট পরিবেশ দূষণের ফল। সেইজন্য রাসূলে পাক  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেই রকম অন্তরের পবিত্রতা ও শারীরিক পবিত্রতা অর্জনের গুরুত্ব দিয়ে বলেছেন যে পবিত্রতা ঈমানের অঙ্গ। সেই রকম পরিচ্ছন্নতার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আল্লাহ তায়ালা নিজে পরিচ্ছন্ন ও পরিচ্ছন্নতাকে পছন্দ করেন। আজ (২৮ জানুয়ারি) শুক্রবার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের জুমার খুতবা পূর্ব বয়ানে তিনি এসব কথা বলেন।

মাওলানা মুহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহিল বাকী বলেন, উল্লেখ্য যে, পরিছন্নতা ও পবিত্রতার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। পবিত্রতা হল অন্তরকে গুনা থেকে মুক্ত রাখা, শরীরকে নাপাক থেকে মুক্ত রাখা। পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি আরও ব্যাপক, যার কারণে একজন ব্যক্তি তার শরীরকে নাপাক থেকে মুক্ত রাখলেও ঘরের আঙ্গিনায় আবর্জনা থাকলে, বা তার বাথরুম অপরিচ্ছন্ন হলে লোকটিকে পবিত্র বলা হলে ও সবাই লোকটিকে অপরিচ্ছন্ন বলবে। সেজন্য রাসূলে পাক  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পবিত্রতা অর্জনের নির্দেশের সাথে সাথে পরিচ্ছন্নতার নির্দেশ দিয়ে বলেন, আল্লাহ তায়ালা পবিত্র, পবিত্রতাকে ভালোবাসেন। আল্লাহ তায়ালা পরিচ্ছন্ন, পরিচ্ছন্নতাকে ভালবাসেন। আল্লাহ তায়ালা শালীন, শালীনতাকে ভালোবাসেন। আল্লাহ তায়ালা দানশীল, দানশীলতাকে পছন্দ করেন। তোমরা তোমাদের আঙ্গীনা ও মাঠকে পরিচ্ছন্ন রাখ। ইয়াহুদীদের মত ভিটার মধ্যে ময়লা আবর্জনা স্তুুপ করে রাখ না।’ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লাম নিজেকে এবং চতুর্দিকের পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। কেননা অপরিচ্ছন্নতা পরিবেশকে দূষিত করে। আর দূষিত পরিবেশ সুস্থতার জন্য হুমকি। অন্যদিকে বর্তমানে বিভিন্ন ভাবে পরিবেশকে দূষিত ও অপরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে, যা গুনাহ বা অন্য কোনো রকমের অপরাধ বলে মনে করা হচ্ছে না। যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলা, পলিথিনের অপব্যবহার গাছপালা কাটা, খাল, নদী ভরাট, অবৈজ্ঞানিকভাব পানির সাথে জৈব, অজৈব, রাসায়নিক, তেজষ্ক্রিয় পদার্থমিশানো পরিবেশকে অপরিচ্ছন্ন করে ও দূষিত করে। দূষিত পরিবেশ অধিকাংশ ক্ষেত্রে রোগ জীবাণুর বিস্তারের জন্য দায়ী। ব্যক্তিগত ও পরিবেশগত পরিছন্নতা অর্জনের মধ্যেমেই দূষিত পরিবেশ দ্বারা সৃষ্ট রোগ জীবাণুর আক্রমণ থেকে অধিকাংশ ক্ষেত্রে রক্ষা পাওয়া যাবে। নিজেকে এবং পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদেরকে তৌফিক দান করেন। আমিন।