রহমত ডেস্ক 26 January, 2022 05:20 PM
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ষড়যন্ত্র ও বিদেশি প্রভুদের সন্তুষ্ট করার মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের দুঃস্বপ্নে বিভোর বিএনপি নেতৃবৃন্দ তাল হারিয়ে ফেলেছে। একবার তারা নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের দাবী তোলে, আবার সরকারের পক্ষ থেকে আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হলে তার বিরোধিতা করে। একদিকে তারা আবার নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন কমিশন গঠন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালায়। আসলে রাজনীতি ও নির্বাচন নিয়ে বিএনপি’র সুনির্দিষ্ট কোনো রূপরেখা নেই। আমরা বলতে চাই, সাংবিধানিক বিধান অনুযায়ীই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কোন সরকারের অধীনে হবে- তা সংবিধানে স্পষ্ট বলা আছে। বিএনপি নেতৃবৃন্দকে আহ্বান জানাবো যে- আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখুন। সেখানে জাতির কপালে কলঙ্কের তিলক এঁকে দেওয়ার জন্য নিজেদের কুৎসিত প্রতিবিম্ব দেখতে পাবেন। জাতীয় ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায় সৃষ্টির জন্য, জাতির কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করে পরিশুদ্ধতার প্রয়াস নিন। তারপর সরকারের সমালোচনা করুন। আজ (২৬ জানুয়ারি) বুধবার গণমাধ্যমকে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সর্বপ্রাচীন ও একমাত্র রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং দেশের জনগণের উন্নত জীবন প্রতিষ্ঠায় নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ক্ষমতা ফিরে পেতে বিএনপি দেশে-বিদেশে বিভিন্ন ধরনের নীলনকশায় জড়িত বলেই কথায় কথায় তারা ষড়যন্ত্রের গন্ধ খুঁজে পায়। বাংলাদেশের রাজনীতিতে লুটপাট আর অনিয়মতন্ত্র চালু করে বিএনপি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় পদে পদে বাধা সৃষ্টি করেছে। আমরা বার বার বলে আসছি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেশের উচ্চ আদালত কতৃক একটি মীমাংসিত ইস্যু। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতই সংবিধানসম্মতভাবে নির্বাচন হবে। আমরা মনে করি- নির্বাচন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য, শেখ হাসিনা সরকারের যে উদ্যোগ বিএনপি নেতৃবৃন্দ সরকারের সে উদ্যোগে মূল্যবান মতামত দিতে পারে।
তিনি আরো বলেন, বিএনপি নেতাদের বলতে চাই, ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য পাতানো নির্বাচন আওয়ামী লীগ করে না। পাতানো রাজনৈতিক খেলা বিএনপি’র রাজনৈতিক ঐতিহ্যগত সংস্কৃতি। ১৯৯৬ সালে ১৫ই ফেব্রুয়ারী ভোটারবিহীন পাতানো নির্বাচন যারা করেছিল, একই ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান যারা করেছিল, দলীয় লোককে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান করতে যারা গোপনে বিচারপতিদের বয়স সীমা বাড়িয়েছিল- তারাই পাতানো খেলা আর গোপন ষড়যন্ত্রের কারিগর। বিএনপি নেতৃবৃন্দ কথায় কথায় ২০১৮ সালের নির্বাচন ও একদশ জাতীয় সংসদ নিয়ে প্রশ্ন তোলে। অথচ ২০১৮ সালের নির্বাচন ছিল সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন। সেই নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেছিল এবং দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক সংস্থা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছিল। একাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত স্থানীয় ১১৮টি সংস্থার মধ্যে ৮১টি সংস্থা অনুমতিপ্রাপ্ত ছিল। সংসদে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিও আছে। তাহলে বিএনপি’র সংসদ সদস্যগণ কীভাবে নির্বাচিত হলো? সংসদ অবৈধ হলে তাদের সংসদ সদস্যগণ কীভাবে সেখানে প্রতিনিধিত্ব করছে এবং বিভিন্ন ইস্যুতে প্রতিদিন সংসদে বক্তব্য রাখছে? আসলে বিএনপি’র রাজনীতি দ্বি-চারিতার রাজনীতি। বিএনপির রাজনীতি জন্মলগ্ন থেকে জনবিরোধী ও ক্ষমতালিপ্সু নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত। নির্বাচন ও সংসদের বৈধতা নিয়ে কোনো কথা বিএনপি’র মুখে মানায় না। অতীতে জনগণ প্রত্যক্ষ করেছে যে- গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও প্রতিষ্ঠান নিয়ে বিএনপি কীভাবে ছেলে খেলা করেছে!