মূল পাতা আন্তর্জাতিক ওমিক্রনকে মৃদু বলা ঠিক হবে না : ডব্লিউএইচও
রহমত ডেস্ক 07 January, 2022 05:05 PM
বৈশ্বিক মহামারী মরণঘাতী করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ধরন ওমিক্রনকে মৃদু হিসেবে উল্লেখ করার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-ডব্লিউএইচও প্রধান ড. তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস বলেছেন, অন্যান্য ধরনগুলোর মতো এটিও বিশ্বজুড়েই মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। সম্প্রতি হওয়া বেশ কয়েকটি গবেষণায় কোভিডের অন্য ধরনগুলোর তুলনায় ওমিক্রনে আক্রান্তদের গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি কম বলে উঠে এসেছে। কিন্তু এর ফলে বিপুল সংখ্যক মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় তা বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর ভয়াবহ চাপ ফেলছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চলতি বছরের জুলাইয়ের মধ্যে বিশ্বের ৭০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে পূর্ণাঙ্গ টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল; কিন্তু এখন যেভাবে টিকাদান চলছে তাতে ১০৯টি দেশ তাদের ‘টার্গেট’ পূরণ করতে পারবে না।
বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) সংবাদ সম্মেলনে দরিদ্র দেশগুলোর জনগোষ্ঠীকে টিকাদান নিশ্চিত করতে অন্যদের এগিয়ে আসতে আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে তিনি এসব কথা বলেন। গত বছর তিনি বলেছিলেন, পশ্চিমা দেশগুলো তাদের বুস্টার কর্মসূচির জন্য মজুদ না করলে ২০২২ সালে সব প্রাপ্তবয়স্ককে টিকা দেওয়ার মতো যথেষ্ট ডোজ বিশ্বের হাতে থাকবে। ওমিক্রনের দাপটের মধ্যে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রে ১০ লাখেরও বেশি নতুন কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছিল।
জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থা ডব্লিউএইচওর হিসাব অনুযায়ী, গত সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে কোভিড রোগী আগের সপ্তাহের তুলনায় ৭১ শতাংশ বেড়েছে, আমেরিকার দুই মহাদেশে রোগী এক সপ্তাহে দ্বিগুণ হয়েছে। বিশ্বজুড়ে এখন গুরুতর অসুস্থদের ৯০ শতাংশই টিকা না নেওয়া, বলছে তারা। ডেল্টার তুলনায় ওমিক্রনকে কম মারাত্মক দেখাচ্ছে, বিশেষ করে যারা টিকা নিয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে। এর মানে এই নয় যে একে ‘মৃদু’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা উচিত। আগের ভ্যারিয়েন্টগুলোর মতো ওমিক্রনও মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি করাচ্ছে, মানুষ মারছে। প্রকৃতপক্ষে, রোগীর সুনামি এত বিশাল ও দ্রুতগতিতে হচ্ছে যে এটি বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর দুর্বিষহ চাপ সৃষ্টি করছে। করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ধরন ওমিক্রন এমনকি টিকা নেওয়া ব্যক্তিদেরও আক্রান্ত করতে পারে; তবে তারপরও টিকার গুরুত্ব অপরিসীম, কেননা তা নেওয়া থাকলে গুরুতর অসুস্থতার ঝুঁকি কমে, হাসপাতালে ভর্তির হাত থেকে বাঁচা যায়।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যে এক লাখ ৭৯ হাজার ৭৫৬ জন নতুন কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে ২৩১ জনের। ফ্রান্সের স্বাস্থ্যমন্ত্রী দেশের সব হাসপাতালকে জানুয়ারি এখন পর্যন্ত দেখা সবচেয়ে ভয়াবহ মাস হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন। ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালের সাধারণ শয্যাগুলোর দখল নিচ্ছেন, ডেল্টায় আক্রান্তদের কারণে চাপ বাড়ছে নিবিড় পর্যবেক্ষণ বিভাগে। বৃহস্পতিবার ফ্রান্স ২ লাখ ৬১ হাজার নতুন কোভিড রোগী শনাক্তের কথা জানিয়েছে। সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার বুচিক বলেছেন, তার দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাপনা এখন ভয়াবহ চাপ অতিক্রম করছে। দেশটি বৃহস্পতিবার ৯ হাজারেরও বেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত করেছে।