রহমতটোয়েন্টিফোর ডেস্ক 19 April, 2021 08:40 PM
সরকার দেশের শ্রদ্ধেয় আলেমদেরকে নির্বিচারে গ্রেপ্তার করছে এবং তাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সংবাদ সংস্থার সাংবাদিকরা অংশ নেন।
এ সময় তিনি ধর্মীয় নেতা ও আলেম-উলামাদের গ্রেপ্তারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে তাদের মুক্তি চেয়েছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গত কয়েক দিন ধরে এই লকডাউনের সুযোগ নিয়ে আমি আগেও বলেছি যে একটা ক্র্যাকডাউন করা হয়েছে। সেই ক্র্যাকডাউনের মধ্য দিয়ে একদিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। অন্যদিকে দেশের ধর্মীয় নেতা যারা আছেন, যারা আলেম-উলামা আছেন, তাদেরকে নির্বিচারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে যারা অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় মানুষ, শ্রদ্ধেয় আলেম আছেন, এ দেশে মানুষের কাছে যারা অত্যন্ত শ্রদ্ধার পাত্র, তাদেরকেও গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং তাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলাও দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি আহ্বান জানাব যে অবিলম্বে এসব মামলা-মোকাদ্দমা তুলে ফেলা হোক, যারা ধর্মীয় নেতা আছেন, আলেম-উলামা আছেন, তাদেরকে অবিলম্বে মুক্তি প্রদান করা হোক এবং বিএনপির যেসব নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে, তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া হোক এবং তাদের সব মামলা তুলে নেওয়া হোক।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ধর্মীয় নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করে আজকে বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের বুকে আঘাত করা হচ্ছে এবং তাদের আবেগ, সেন্টিমেন্ট সেখানে আঘাত করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই, ধর্মীয় নেতাদেরকে এভাবে অপমান করা, তাদেরকে এভাবে হয়রানি করা এ দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ কিন্তু কোনোভাবেই মেনে নেবে না।’
হেফাজতের সঙ্গে আমাদের কোনো রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা কোনো রাজনৈতিক দলও নয়। সম্পূর্ণভাবে একটি ধর্মীয় সংগঠন।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘২৬ মার্চকে কেন্দ্র করে যে ঘটনাগুলো সংঘটিত হয়েছে, এটা তো সরকারের তৈরি করা। আমি এর আগেও বলেছি। সরকার খুব পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনাগুলো যাতে ঘটে তার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছে। আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ করেছেন যে ২৬ মার্চ কয়েকটি ধর্মীয় সংগঠন একই সঙ্গে অনেক রাজনৈতিক সংগঠন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে উপলক্ষ করে তারা বিরোধিতা করেছিল এবং বিক্ষোভ কর্মসূচি দিয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি যে বায়তুল মোকাররমে যে বিক্ষোভ কর্মসূচি হচ্ছিল তা শান্তিপূর্ণ ছিল। এটাকে অশান্তিপূর্ণ করে দেওয়ার পেছনে ছিল পুলিশের সবচেয়ে বড় ভূমিকা এবং তার পরে আওয়ামী লীগের দলীয় সন্ত্রাসীরা, তারা আক্রমণ করে এটার ওপর পুরোপুরিভাবে হামলা চালায়। সে কারণে চট্টগ্রামের হাটাজারীতে ও ব্রাহ্মবাড়িয়ায় এ ঘটনাগুলো সংঘটিত হলো। সেই কথাগুলো কিন্তু তারা (সরকার) কখনোই বলছে না। তারা বারবার করে দোষ চাপাচ্ছে যে এসব ধর্মীয় সংগঠন এবং বিরোধী দল বিশেষ করে বিএনপি এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলছি যে ওইসব ঘটনার সঙ্গে বিএনপি কখনো জড়িত ছিল না। আমরা প্রতিবাদ করেছি, বিক্ষোভ করেছি- অবশ্যই। সেটা হচ্ছে যে মানুষকে যখন বিনা কারণে হত্যা করা হলো।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর ৫০ বছর তাকে কলুষিত করা হয়েছে জনগণের-মানুষের রক্ত দিয়ে- সেটারই আমরা বিরোধিতা করেছি, আমরা প্রতিবাদ করেছি।’
-জেড