| |
               

মূল পাতা জাতীয় কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত


কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত


রহমত নিউজ     03 January, 2025     11:20 PM    


কাদিয়ানীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে রাজধানীতে আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়তের মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ চত্বরে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে দুই অধিবেশনে পর্যায়ক্রমে সভাপতিত্ব করেন মাওলানা সাজেদুর রহমান ও মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব।

সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে লন্ডন জামিয়া খাতামুন নাবিয়্যিনের মুহতামিম মাওলানা মুফতি সাইফুল ইসলাম বলেন, আকিদায়ে খতমে নবুওয়ত মুসলমানদের ঈমান। খতমে নবুওয়ত না মানলে ঈমান থাকবে না। যুগে যুগে যারাই নবুওয়তের দাবিদার হয়েছে, তারা নিজেকে মুসলমানরূপে প্রকাশ করে স্বীয় দাবি প্রচারের চেষ্টা করেছে। কিন্তু উম্মতে মুহাম্মদি এ ব্যাপারে কুরআন-হাদিসের দিক-নির্দেশনাপ্রাপ্ত হওয়ায় যখনই নবুওয়তের কোনো ভন্ড দাবিদার আত্মপ্রকাশ করেছে, তাকে কাফের সাব্যস্ত করেছে এবং ইসলামের গন্ডি থেকে বহিষ্কার করেছে। তাই গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর অনুসারীরাও কাফের।

সভাপতির ভাষণে আল্লামা সাজেদুর রহমান বলেন, অধিকাংশ মুসলিম দেশে কাদিয়ানিদের সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষণা করে তাদের যাবতীয় বই-পুস্তক, ও কার্যক্রমকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ১৯৫৭ সালে সিরিয়া , ১৯৫৮ সালে মিশর, ১৯৭৪ খৃস্টাব্দে সউদী আরবে পাঁচ দিনব্যাপী ১০৪টি দেশের সম্মিলিত সংগঠন ‘রাবেতা আলমে ইসলামি’র অধিবেশনে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে যে-‘কাদিয়ানী সম্প্রদায় কাফের ও ইসলাম বহির্ভূত। তাদের সঙ্গে বিয়েশাদি হারাম এবং মুসলমানদের কবরস্থানে তাদের দাফন করা নাজায়েজ।’ ওই প্রস্তাবগুলো ১০৪টি দেশের প্রতিনিধিরা সম্মিলিতভাবে পাস করেছেন। তাদের মধ্যে বাংলাদেশও অন্তর্ভুক্ত। ১৯৭৪ সালের ৭ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের সংসদও কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা দিয়েছে।

মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব বলেন, দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ বাংলাদেশে কাদিয়ানীদের আজও অমুসলিম ঘোষণা করা হয়নি। যে কারণে বর্তমানে তারা এ দেশে প্রকাশ্যে উস্কানিমূলক অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই বাংলাদেশ সরকারের উচিত, অনতিবিলম্বে কাদিয়ানিদের সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষণা করে কাদিয়ানি অপতৎপরতা বন্ধ করা। কাদিয়ানিরা অমুসলিম নাগরিক হিসেবে এ দেশের সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারে; তবে মুসলিম হিসেবে অবশ্যই নয়।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা মহিউদ্দিন রাব্বানী। তিনি তার বক্তব্যে উপস্থিত উলামায়ে কেরাম ও নেতৃবৃন্দসহ সকলের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, নববি যুগ থেকে যখনই কোনো ইসলামি রাষ্ট্রে বা ইসলামি আদালতে ভণ্ডনবীর দাবিদারদের বিরুদ্ধ মামলা করা হয়েছে, তখনই বিচারকগণ তার দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রকার দলিল-প্রমাণ তলব না করে তার ব্যাপারে কাফের হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি কাদিয়ানী সম্প্রদায় কর্তৃক দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে এবং পঞ্চগড়সহ দেশের কোথাও তাদেরকে সালানা জলসার নামে কোনো প্রোগ্রাম করতে না দেওয়ার জন্য সরকারের নিকট জোর দাবি জানান।

মাওলানা মামুনুল হক বলেন, উম্মাহর ফায়সালা হলো আসওয়াদ আনাসি, তুলাইহা, গোলাম আহমদ কাদিয়ানী, বাহায়ী সকলেই কাফের। সাহাবায়ে কেরাম (রা.) ও উলামায় কেরাম তাদের কুফুরির ফয়সালা দেওয়ার পূর্বে কখনও নবুওয়তের দাবির ব্যাপারে তাদের থেকে কোনো প্রকার দলিলও তলব করেননি। যখনই কারো পক্ষ থেকে নবুওয়তের দাবি পাওয়া গেছে, তখনই সর্বসম্মতিক্রমে তাকে কাফের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এর কারণ হলো, খতমে নবুওয়তের আকিদা এতোটাই স্পষ্ট ও সর্বজন স্বীকৃত, এর খেলাফ যুক্তি-তর্ক সব প্রতারণার শামিল।

মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, কোরআন হাদিসের দৃষ্টিতে কাদিয়ানী সম্প্রদায় কাফের। এ কাদিয়ানী প্রতারক চক্র নিজেদেরকে মুসলমান পরিচয় দিয়ে সরলপ্রাণ মুসলিম জনতার ঈমান হরণ করছে। অতএব মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দুশমন কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। তাদের জন্য ইসলামী পরিভাষা যথা নামাজ-রোজা হজ্জ যাকাত মসজিদ মাদ্রাসা ইত্যাদি ব্যবহার করা নিষিদ্ধ করতে হবে।

সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমীর মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মাওলানা সালাহ উদ্দীন লন্ডন, মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম সোবহানী, মুফতি বশিরুল্লাহ, মাওলানা যোবায়ের আহমদ, মুফতি জাবের কাসেমী, মুফতী নুরুল্লাহ লন্ডন, মুফতি আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ ইয়াহয়া, মাওলানা ইউনুস ঢালী, মাওলানা মুঈনুল ইসলাম, মাওলানা এনামুল হক মূসা, মাওলানা ফয়সাল আহমদ, মাওলানা আফসার মাহমুদ,মাওলানা সুলতান মহিউদ্দিন, মাওলানা মাহবুবুল আলম, মাওলানা মোমিনুল ইসলাম, মাওলা আলী আজম, মাওলানা হেদায়াতুল্লাহ, মুফতী মাহফুজুর রহমান, মাওলানা বদরুল আলম, মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম প্রমুখ।