| |
               

মূল পাতা জাতীয় ট্রান্সজেন্ডারবাদ একটি কুফরী মতবাদ: হেফাজত


ট্রান্সজেন্ডারবাদ একটি কুফরী মতবাদ: হেফাজত


রহমত নিউজ     05 January, 2024     06:22 PM    


হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর আমীর আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান বলেছেন, “ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তির অধিকার সুরক্ষা আইন ২০২৩ (খসড়া)" আমাদের নজরে এসেছে। আর বিভিন্ন সূত্র মারফত আমরা এটিও জানতে পেরেছি যে, আইনটি অচিরেই পাশ হওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। হেফাযতে ইসলাম এ মর্মে বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে যে, এ আইনটিকে যদিও হিজড়া সম্প্রদায়ের অধিকার সুরক্ষা আইন মনে করা হচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে এটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। আসলে হিজড়া ও ট্রান্সজেন্ডার এক নয়। হিজড়া বলতে বোঝানো হয় এমন মানুষকে, জন্মগতভাবে যার মধ্যে পুরুষ ও নারী উভয়ের চিহ্ন বিদ্যমান থাকে। পক্ষান্তরে ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তি হল, জন্মগতভাবে সে পুরুষ কিংবা নারী। কিন্তু কোনো কারণে সে নিজেকে বিপরীত লিঙ্গের মনে করে। যেমন, কোনো পুরুষ নিজেকে নারী মনে করল অথবা কোনো নারী নিজেকে পুরুষ মনে করল। আর এর ভিত্তিতেই তাকে ভিন্ন লিঙ্গের ঘোষণা করা ট্রান্সজেন্ডারবাদের দাবি।

আজ (৫ জানুয়ারী ২০২৪) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এসব কথা বলেন।

নেতৃদ্বয় বলেন, বলাবাহুল্য যে, শুধু মনে করার কারণে কারো লিঙ্গ পরিবর্তন হতে পারে না। এমনকি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমেও লিঙ্গ পরিবর্তন হয় না। এভাবে না কোনো পুরুষ নারী হয়ে যায়, আর না কোনো নারী পুরুষ হয়ে যায়। এরপরও যদি কেউ এমনটি মনে করে বা এর স্বীকৃতি দেয় তাহলে সে মূলত আল্লাহ তাআলার সৃষ্টির মাঝে পরিবর্তন সাধন করল। যা স্পষ্ট হারাম ও মস্তবড় পাপ। এরচেয়েও ভয়াবহ বিষয় হল, এটি আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দেওয়া শরীয়ত এবং কুরআন-সুন্নাহর বিকৃতি সাধনের মতো কুফরি গুনাহ।

তারা বলেন, হিজড়া তথা খুনছার বিষয়ে শরীয়তের সুস্পষ্ট বিধান ফিকহ-ফাতাওয়ার কিতাবসমূহে উল্লেখ রয়েছে। সে বিধান বাস্তবায়ন করলেই তাদের অধিকারের প্রকৃত সুরক্ষা হবে। পক্ষান্তরে তা না করে ট্রান্সজেন্ডার নামে যে আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে তা আল্লাহর সৃষ্টির মাঝে বিকৃতি ও আল্লাহর শরীয়ত পরিবর্তনের মতো কুফরি গুনাহ। এর মাধ্যমে ইসলামের বিয়ে, তালাক, বংশ পরিচয়, পর্দা ও মীরাস-উত্তরাধিকারসহ নারী-পুরুষ সংক্রান্ত কুরআন-সুন্নাহ ও ইসলামের সকল বিধানের পরিবর্তন ও বিকৃতি ঘটবে। আর সমকামিতা ও ব্যভিচারের মতো ঘৃণ্য ও মহাপাপগুলো আইনি বৈধতা পাবে। যার ফলশ্রুতিতে একদিকে যেমন ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের নীতি-নৈতিকতা ও শৃঙ্খলা বিনষ্ট হবে। তেমনি আল্লাহ তাআলার সৃষ্টি ও শরীয়তের মধ্যে বিকৃতি ও পরিবর্তনের মতো গুনাহয় লিপ্ত হওয়ার দরুন তারা আল্লাহর গযব ও লানতেরও শিকার হবে।

তারা আরো বলেন, উল্লেখ্য যে, এ আইনটি শুধু ইসলামী শরীয়তের পরিপন্থীই নয়; বরং মানব সম্প্রদায়ের স্বভাবজাত রুচি- প্রকৃতি বিরোধীও বটে। তাই যেকোনো ধর্মের সুস্থ বিবেক-বুদ্ধি ও রুচিসম্পন্ন কোনো ব্যক্তি এর সমর্থন করতে পারে না। আরো উল্লেখ্য যে, কোনো মুসলিম দেশ না বুঝে এমন আইন পাশ করে ফেললেও বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ার পর দ্রুতই তারা তা বাতিল করে ফেলেছে।

নেতৃদ্বয় বলেন, অতএব মানুষের স্বভাবজাত ও সুস্থ রুচি পরিপন্থী এবং ইসলাম ও কুরআন-সুন্নাহবিরোধী এহেন কুফরি আইন, যা দেশ-জাতি ও সমাজে ভয়াবহ অবক্ষয় ডেকে আনবে তা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা থেকে বিরত থাকার জন্য ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি মুসলিম দেশের সরকার প্রধানের কাছে আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি।