রহমত ডেস্ক 11 February, 2022 04:41 PM
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনার নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতি নিয়োজিত সার্চ কমিটির কাছে ১০ জনের নামের তালিকা পাঠিয়েছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পার্টির পক্ষ থেকে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জীবন-বৃত্তান্তসহ দশজনের নামের তালিকা পৌঁছে দেওয়া হয়। এছাড়া ই-মেইলেও নাম ও জীবন-বৃত্তান্ত পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার পার্টির পলিটব্যুরোর বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনার নিয়োগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এসময় সার্চ কমিটি নির্ধারিত নামগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ করার জন্য রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ জানিয়ে রবিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) একটি চিঠি পাঠানো হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য কামরুল আহসান পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো আশা প্রকাশ করে যে, সব রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমে দেওয়া মতামতের ভিত্তিতে সার্চ কমিটি সে ধরনের নামই প্রস্তাব করবেন, যাতে রাষ্ট্রপতি একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে পারেন।
নতুন আইন অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনার নিয়োগের মাধ্যমে নতুন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ দিতে গত ৫ ফেব্রুয়ারি অনুসন্ধান (সার্চ) কমিটি করা হয়েছে। ছয় সদস্যবিশিষ্ট এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে। আইন অনুযায়ী কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ পেশ করতে হবে। সার্চ কমিটির সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন- সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন এবং কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
এই সার্চ কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার-সিইসি ও চারজন নির্বাচন কমিশনার-ইসি নিয়োগের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ দেবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি। নির্বাচন কমিশন গঠনের আইনে বলা হয়েছে, সার্চ কমিটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে প্রতিটি শূন্যপদের বিপরীতে রাষ্ট্রপতির কাছে দুজন ব্যক্তির নাম সুপারিশ করবে। তিনজন সদস্যের উপস্থিতিতে সার্চ কমিটির সভার কোরাম গঠিত হবে। সংবিধানে নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আইনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু কোনো সরকারই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়নি। রাজনৈতিক দলগুলো কমিশন গঠনে আইন করার দাবি জানিয়ে আসছিল দীর্ঘদিন ধরে। এতদিন রাষ্ট্রপতি সরাসরি নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিতেন। বিগত দুটি কমিশনও রাষ্ট্রপতি গঠন করেছেন সার্চ কমিটির মাধ্যমে। এক্ষেত্রে সাচিবিক দায়িত্ব পালন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে গত ২০ ডিসেম্বর সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে রাষ্ট্রপতির বৈঠকের মধ্য দিয়ে এবারের সংলাপ শুরু হয়। গত ১৭ জানুয়ারি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে শেষ হয় সংলাপ। প্রায় প্রতিটি দলই নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দেয়। তবে বিএনপি সংলাপে অংশ নেয়নি। পরে স্বল্প সময়ের মধ্যে বহুল প্রতীক্ষিত ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ চূড়ান্ত করে সরকার। মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনুমোদন, সংসদে পাস হওয়ার পর গত ২৯ জানুয়ারি আইনের গেজেট প্রকাশিত হয়। এই আইনে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটির বিধান রাখা হয়।
