রহমত নিউজ 24 September, 2025 12:14 PM
ভারতকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করে বাংলাদেশি ইলিশ তৃতীয় দেশে পাচারের চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশের পর বন্ধ হয়ে গেছে ইলিশ রপ্তানি।
বেনাপোল ফিশ কোয়ারেন্টাইন বিভাগের কর্মকর্তা আকসাদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, রোববার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত বৈধভাবে এক কেজি ইলিশও সীমান্ত পার হয়নি। স্থলবন্দরের আরেক কর্মকর্তা দেন আরও পাঁকাপোক্ত তথ্য। তিনি বলেন, রপ্তানির জন্য দুটি ট্রাক এলে রহস্যজনকভাবে পরে তা ফেরত নেওয়া হয়।
বাংলাদেশ থেকে কেজিপ্রতি ১৯’শ থেকে ২ হাজার টাকায় ইলিশ কিনে ভারতে পাঠাতে খরচ দাঁড়ায় ২১০০ থেকে ২২০০ টাকা (২০-২১ ডলার)। অথচ রপ্তানি মূল্য ধরা হয়েছে মাত্র ১,৫২৫ টাকা বা সাড়ে ১২ ডলার। এতে খালি চোখে লোকসান দাঁড়ায় ৫০০-৬০০ টাকা।
কিন্তু কলকাতায় পৌঁছে সামান্য অংশ স্থানীয় বাজারে বিক্রি হলেও বড় অংশ হিমায়িত করে সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয় কেজিপ্রতি ৪০-৪৫ ডলারে। ফলে প্রতি কেজিতে লাভ হয় প্রায় ২,৮০০ টাকা পর্যন্ত। এ কাজে সহযোগিতা করছে পশ্চিমবঙ্গের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী।
রপ্তানিকারকদের কলকাতায় আড়ত :
কলকাতার বিভিন্ন বাজারে বাংলাদেশের অন্তত চারজন রপ্তানিকারকের আড়ত, ফ্ল্যাট ও ব্যবসায়িক স্থাপনা রয়েছে। এর মধ্যে নীরব হোসেন টুটুলের নাম সবচেয়ে আলোচিত। তার শ্বশুরবাড়ি কলকাতার বশিরহাটে এবং তিনি চারটি লাইসেন্সে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেয়েছেন।
“সেভেন স্টার ফিশ প্রসেসিং করপোরেশন” ও কেবিসিসহ আরও দুজন রপ্তানিকারকেরও হাওড়াসহ বিভিন্ন বাজারে আড়ত রয়েছে। স্থানীয় আত্মীয়স্বজনের নামে ভারতীয় রপ্তানি লাইসেন্স নিয়ে তারা পাচারকাজ চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ।
২০০৭ সাল থেকে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ থাকলেও প্রতিবছর দুর্গাপূজায় বিশেষ অনুমতিতে পাঠানো হয়। এবারও ১,২০০ টন রপ্তানির অনুমতি দেয় সরকার। কিন্তু দেশের বাজারে দাম বেশি থাকায় ও রপ্তানি মূল্য কম নির্ধারণ করায় শুরু থেকেই প্রশ্ন ওঠে। লোকসানের হিসাব দেখিয়ে ভারত হয়ে তৃতীয় দেশে পাচারই ছিল আসল উদ্দেশ্য।
সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরা জানিয়েছেন, সেখানে সহজেই পদ্মার ইলিশ পাওয়া যায়, যা ভারত হয়ে পাচার হয়ে যাচ্ছে।