রহমত নিউজ 18 March, 2025 12:21 PM
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেছেন, রমজান মাস কুরআন নাজিলের মাস। রমজান তাক্বওয়া তথা আল্লাহর ভয়ে সকল অপকর্ম থেকে বিরত থাকার শিক্ষা অর্জনের মাস। কুরআনের সাথে রমজানের সিয়াম সাধনার অঙ্গাঅঙ্গি সম্পর্ক রয়েছে। কুরআন আমাদেরকে শুধু অপরাধ থেকেই দূরে থাকতে বলে না বরং অপরাধের উপকরণ থেকেও দূরে থাকতে বলে। কুরআনের নির্দেশনার মাধ্যমেই সমাজ থেকে অপরাধ প্রবণতা নির্মূল করা সম্ভব।
সোমবার (১৭ মার্চ) ফেনীর সিজলার হোটেলে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ফেনী জেলা শাখার আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, কোন অন্যায় কাজ দেখলে তার প্রতিবাদ করা, প্রতিরোধের চেষ্টা করাই ইসলামের শিক্ষা। তা না পারলে অন্তত মনে মনে ঘৃণা করা ও অন্যায় বন্ধ করার ফিকির চালু রাখতে হবে। চৌদ্দশত বছর আগে যে কুরআনের আইন দ্বারা হত্যা সন্ত্রাস ধর্ষণ ও বর্বরতা বিদায় নিয়েছিল সে আইনের দ্বারাই এখনো রাষ্ট্র থেকে ধর্ষণ হত্যা সন্ত্রাসসহ সব অপরাধ বিদায় নিতে বাধ্য হবে।
মাওলানা হামিদী আরো বলেন, যমিন যার হুকুম চলবে তাঁর। আল্লাহর জমিনে আল্লাহর হুকুম প্রতিষ্ঠার মেহনত করা প্রত্যেক মানুষের উপর গুরুত্বপূর্ণ ফরজ কাজ। খেলাফত পদ্ধতির শাসন প্রতিষ্ঠা ছাড়া বৈষম্যহীন ও অপরাধমুক্ত দেশ গড়া সম্ভব নয়।
ইসলামী দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করা সময়ের দাবি উল্লেখ করে তিনি বলেন, অতীতের সকল স্বৈরশাসনে জনগণ অতিষ্ঠ। বাংলাদেশের আপামর তাওহিদী জনতা এখন দেশে ইসলামী শাসন দেখতে চায় । ইসলামী নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ হলে বাংলাদেশে আর অন্য কারো রাজনীতি চলবে না।
মাওলানা হামিদী আরও বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেঞ্চুরি উৎযাপন, কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় সোহাগী জাহান তনুর ধর্ষণ ও খুন, নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ধানের শীষে ভোট দেয়ায় আওয়ামী সন্ত্রাসী কতৃক গৃহবধুকে ধর্ষণ ইত্যাদি সব অপকর্মের সঠিক বিচার না হওয়ায় আজ ছোট্ট আছিয়া হায়েনাদের কবল থেকে বাঁচতে পারেনি। ব্রিটিশদের রেখে যাওয়া আইন ও বিচারব্যবস্থায় অপরাধ নির্মূল কখনোই সম্ভব নয়। এজন্য শরীয়া আদালত স্থাপন করে শরীয়া আইনে ধর্ষণ, ছিনতাই, চুরি, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, দখলবাজি ইত্যাদি সহ সব ধরনের অপরাধের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি গ্রাম-মহল্লা তথা তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করে নগর-মহানগর পর্যন্ত সকল পর্যায়ে আলেম-উলামা, সচেতন ব্যক্তিবর্গ ও প্রশাসনের সমন্বয়ে ‘অপরাধ নিয়ন্ত্রণ সেল’ গঠন করতে হবে। শিক্ষাঙ্গনগুলোতে নীতি নৈতিকতার শিক্ষা বাধ্যতা মূলক করতে হবে। বিদেশী সংস্কৃতির কারণেও অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে। অশ্লীলতা উসকে দেওয়ার সংস্কৃতি এদেশে চলতে দেওয়া যাবে না। অপরাধের শাস্তি প্রকাশ্যে দিতে হবে।
মাওলানা আনোয়ারুল্লাহ ভূঞা বলেন, ৫৩ বছর পূর্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। এখনো দেশের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়নি, খেলাফত পদ্ধতির শাসন ছাড়া বৈষম্য দূর হবে না ইনসাফ প্রতিষ্ঠা হবে না।
সভাপতি ভাষনে মাওলানা গাজী ইউসুফ বলেন, ইসলামী রাজনীতি নিঃসন্দেহে একটি দ্বীনি কাজ যা ইবাদতের শামীল। দ্বীন প্রতিষ্ঠার ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন। এটা হাফেজ্জী হুজুরের রেখে যাওয়া আমানত এ আমানতের সংরক্ষণ করতে হবে যতদিন পর্যন্ত ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্ঠা না হবে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ফেনী জেলা শাখা আমীর মাওলানা গাজী ইউসুফ এর সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি মাওলানা জয়নুল আবেদিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলের অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আনোয়ারুল্লাহ ভূইয়া, মুফতি আলাউদ্দিন নুরী, মাওলানা হাকিম আব্দুল মোমেন, শায়খুল হাদীস মাওলানা আলী আহমাদ, মাওলানা ফরিদ আহমদ, মাওলানা ইব্রাহিম খলিল, মাওলানা আব্দুল্লাহ, মাওলানা আবুল কাশেম, মুফতি মনসুরুল হক, মাওলানা হাফেজ ইলিয়াছ, মাওলানা ইউনুস প্রমুখ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর ফেনী জেলা সেক্রেটারি মাওলানা ওমর ফারুক, জেলা বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী, ইসলামী আন্দোলন ফেনী জেলা সেক্রেটারি মাওলানা একরামুল হক ভূঁইয়া, খেলাফত মজলিস ফেনী জেলার সভাপতি মাওলানা মুজাফফর আহমদ জাফরী ও আন্তর্জাতিক কেরাত সংস্থার ফেনী জেলা সভাপতি মাওলানা আবুল ফাতাহ প্রমুখ।