রহমত নিউজ 13 February, 2025 02:23 PM
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা সিদ্ধান্ত নেব না কোন পার্টি নিষিদ্ধ হবে, কোন পার্টি কাজ করবে, কোন পার্টি কাজ করবে না। জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে কোন পার্টি থাকবে কি থাকবে না, কোন পার্টি নির্বাচন করবে কি করবে না।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গুলশানস্থ বিএনপি চেয়ারপার্সন অফিসে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ঢাকাস্থ বৃটিশ ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার জেমস গোল্ডম্যানের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
এ সময় মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বার বার করে বলে আসছি, জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা একটা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। গণতন্ত্রের সকল নর্মস, এবং কন্ডিশনের উপর আস্থা রাখি, আমরা সেগুলো অতীতেও চর্চা করেছি। সেইভাবেই আমরা মনে করি, আমরা সিদ্ধান্ত নেব না কোন পার্টি নিষিদ্ধ হবে, কোন পার্টি কাজ করবে, কোন পার্টি কাজ করবে না। জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে কোন পার্টি থাকবে কি থাকবে না, কোন পার্টি নির্বাচন করবে কি করবে না।
নির্বাহী আদেশে নিষিদ্ধের পক্ষে বিএনপি কি না জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই বিষয়টা তো পরিষ্কার করে বলেছি, জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। আমার পক্ষ থাকা না থাকা ইমমেটেরিয়াল (বস্তুহীন) , জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে।
জামায়াতের নির্বাচন কমিশনে আনুপাতিক হারে নির্বাচন চাওয়া নিয়ে তিনি বলেন, আমরা আনুপাতিক হারে নির্বাচনের ঘোর বিরোধী, অত্যন্ত জোড়ালোভাবে বিরোধী। আনুপাতিক হারে নির্বাচনের কোন ব্যবস্থাকে আমরা সমর্থন করবো না কারণ এখানকার মানুষ এটাতে অভ্যস্ত না।
জামায়াতের স্থানীয় নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের আগে চাওয়া নিয়ে তিনি আরও বলেন, এটার সঙ্গেও আমরা একমত নই। এগুলো রাজনৈতিক বিবেচনায় দেশকে আরও ভঙ্গুর অবস্থায় নিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কিছু নয়। যত দ্রুত নির্বাচন হবে ততই রাজনীতি সহজ হবে। বাংলাদেশের মানুষ একটা স্থিতিশীলতার মধ্যে আসবে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আয়নাঘর পরিদর্শন বিষয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি এই বিষয়টাকে ভিন্নভাবে দেখি। গুম করা, হত্যা করা এটা কোন দলের কথা আমি বলতে চাই না। এখানে বাংলাদেশের মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, বাংলাদেশের মানুষকে গুম করা হয়েছে। এই কথাগুলো আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি। যখন আল-জাজিরায় প্রথম রিপোর্ট করা হয় তখনো সরকার সম্পূর্ণভাবে এটিকে ডিনাই করেছে। কিন্তু প্রথম থেকেই এইভাবে চলে আসছে।
জাতিসংঘের প্রতিবেদন নিয়ে তিনি বলেন, আমরা স্বস্তি প্রকাশ করছি যে সত্য ঘটনাই উদঘাটিত হয়েছে। সমস্যা হচ্ছে জাতিসংঘ যখন বলে তখন আমরা বিশ্বাস করি, যখন আমরা রাজনৈতিক দলগুলো বলি অনেকেই বিশ্বাস করতে চায় না। আমরা ধন্যবাদ জানাবো যে জাতিসংঘ পর্যবেক্ষণ কমিটি এসেছেন, তারা রিপোর্টটা সঠিকভাবে করেছেন সে জন্য ধন্যবাদ জানাই।
ফ্যাসিস্ট হাসিনার নির্দেশেই এসব ঘটনা হয়েছে, যে সব হত্যাকাণ্ড হয়েছে তার নির্দেশেই হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এই গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেন, যত মানবাধিকার লঙ্ঘন তার নির্দেশেই হয়েছে। গণতন্ত্র কে ধ্বংস করে দেয়া, ইন্সটিটিউশন গুলো ধ্বংস করে দেয়া এসব তার নির্দেশেই হয়েছে, একথায় রিপোর্টে উঠে এসেছে। এটা প্রমাণিত হয়েছে যে হাসিনা একজন ফ্যাসিস্ট, তিনি গণহত্যা করেছেন, মানুষের উপর নির্যাতন করেছেন।
আমরা আজকে চাইবো ভারত সরকার তাকে বাংলাদেশ সরকারের হাতে ফেরত দিবে। তাকে এবং তার সঙ্গে যারা ছিলো তাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এটাই আমাদের প্রত্যাশা বলে জানান তিনি।
বৈঠক প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, উনারা আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন বর্তমান বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা, বর্তমান সরকারের পদক্ষেপ, আমাদের অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক এবং কবে নির্বাচন হচ্ছে এসব বিষয়ে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও চেয়ারপার্সন পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক বিশেষ সহযোগী উপদেষ্টা কমিটি সদস্য শামা ওবায়েদ।