মূল পাতা আন্তর্জাতিক বাংলাদেশি পর্যটকের অভাবে কলকাতায় ব্যবসায়ীদের হাহাকার!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক 10 November, 2024 08:55 PM
ভারতের কলকাতায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে অবস্থিত প্রায় ১০০ হোটেল ও ৩ হাজার দোকান মূলত বাংলাদেশি পর্যটকদের ওপর নির্ভরশীল। তবে গত কয়েকমাস ধরে বাংলাদেশিরা যেতে না পারায় এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা অন্তত ৭০ শতাংশ কমে গেছে। এই হোটেল ও মার্কেটগুলোর কর্মীরা অলস সময় পার করছেন। সঙ্গে খাঁ খাঁ করছে এগুলো।
রোববার (১০ নভেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদনে তুলে এনেছে সেখানকার পরিস্থিতি।
সংবাদমাধ্যমটিকে কলকাতা হোটেল অ্যান্ড রেস্তোরাঁ মালিক অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটির সদস্য মনোতোষ সরকার বলেছেন, জুলাই থেকে মার্কুইস স্ট্রিটে আমার হোটেলের ৩০ রুমের মাত্র চার থেকে পাঁচটিতে বাংলাদেশিরা থাকছে। কিন্তু ছাত্র আন্দোলন ও শেখ হাসিনাকে হটানোর আগে ২৬ থেকে ২৮ রুমে বাংলাদেশি অতিথিরা থাকত। যেসব হোটেলে ১০ থেকে ১২টি রুম আছে সেগুলো অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কারণ তাদের মাত্র এক বা দুটি রুম বুক হচ্ছে। মনোতোষ সরকার বলেন, ২০২১ সালে করোনার সময় ভ্রমণে বিধিনিষেধ থাকার সময় যে অবস্থা হয়েছিল। এখন ঠিক একই পরিস্থিতি চলছে।
এমনই একটি খালি হোটেলে থাকছেন চট্টগ্রামের রাজন বিশ্বাস। তিনি টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছেন, আগে যখন তিনি কলকাতায় যেতেন তখন বাংলাদেশি পর্যটকে হোটেলগুলো গম গম করত। কিন্তু ভারত সরকার বাংলাদেশিদের নতুন ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ায় এই অবস্থা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রাজন বলেছেন, আমার আগেই ভিসা ছিল। তাই কলকাতায় এসেছি। কিন্তু যারা এখন ভিসার জন্য আবেদন করছেন, যদি এটি জরুরি মেডিকেল ভিসা না হয়, তাহলে তাদের ভিসা ইস্যু করা হচ্ছে না। খুব সম্ভবত বাংলাদেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য ভারত চিন্তিত। এ কারণে ভিসা ইস্যুতে তারা কঠোর হয়ে গেছে।
রাজন জানিয়েছেন, ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে বর্তমান ভিসাগুলোর মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে এখন যে ১০-১৫ শতাংশ মানুষ ভারতে যাচ্ছেন সেটিও বন্ধ হয়ে যাবে।
কলকাতার নিউমার্কেটে বাংলাদেশি পর্যটকদের সবচেয়ে বেশি আনাগোনা দেখা যায়। কলকাতার স্থানীয় মানুষের চেয়ে বাংলাদেশি পর্যটকরাই এখানে বেশি আসেন। কিন্তু এখন বাংলাদেশিরা না থাকায় নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরা অনেকটাই আশাহত হয়ে পড়েছেন। তারা বলছেন যদি ভারত সরকার বাংলাদেশিদের ভিসা প্রদানে এমন কড়াকড়ি অব্যাহত রাখে এবং এটি কয়েক বছর চলে তাহলে তাদের এই ক্ষুদ্র ব্যবসা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে।
কোকো নাট নামের একটি দোকান, তারা শুধুমাত্র বাংলাদেশি পর্যটকদের কাছে চকলেট, বাদাম, মশলা এবং কসমেটিকস বিক্রি করে থাকে। দোকানটির মালিক মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন বলেছেন, আগে যেখানে প্রতিদিন তাদের সাড়ে তিন লাখ রুপি বেঁচা বিক্রি হতো। সেটি কমে এখন শুধুমাত্র ৩৫ হাজার রুপিতে চলে এসেছে। যারা এখন তার দোকানে আসছেন তাদের প্রায় সবাই মেডিকেল ভিসা নিয়ে ভারতে গেছেন। কিন্তু নিউমার্কেট থেকে পণ্য কিনে ঢাকায় নিয়ে পণ্য বিক্রির যে ব্যবসাটি ছিল সেটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া