রহমত নিউজ 04 November, 2024 08:04 PM
বাতিলের মোকাবেলায় বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নেতাকর্মীদের সোচ্চার থাকার নির্দেশ দিয়েছেন সংগঠনের মহাসিচব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী।
তিনি বলেন, খেলাফত আন্দোলন হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ. এর রেখে যাওয়া আমানত। বাতিলের মোকাবেলায় খেলাফত আন্দোলন সবসময় অগ্রগামী। তাবলীগ জামাতের কার্যক্রম বাংলাদেশে প্রথম শুরু হয় হাফেজ্জী হুজুরের মাধ্যমে। দাওয়াত ও তাবলীগ, কওমী মাদরাসা ও সহীহ দ্বীনি মেহনতগুলোর বিরুদ্ধে বাতিলের যে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে, তার বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতা কর্মীদেরকে সব সময় সজাগ ও সোচ্চার থাকতে হবে। তিনি এ লক্ষ্যে ৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত ইসলামী মহাসম্মেলনে দলে দলে যোগদান ও সফল করার আহ্বান জানান।
আজ সোমবার ( ৪ নভেম্বর ) সকাল ১১ টায় ডেমরাস্থ নান্নু মুন্সী জামিয়া কারিমিয়া মাদরাসা মিলনায়তনে আয়োজিত খেলাফত আন্দোলন ডেমরা থানা শাখার সদস্য সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমেও বাতিলকে জবাব দিতে হবে। হাফেজ্জী হুজুর রহ. ভোটের তওবার আহ্বান জানিয়েছিলেন। যাদেরকে ভোট দিয়ে আমরা সংসদে পাঠাই তারা যখন দুর্নীতি করে তখন সেই পাপের দায় আমাদের উপরও বর্তায়। এই পাপ থেকে তওবা করতে হলে সৎ ও দ্বীনদার লোকদের ভোট দিয়ে সংসদে পাঠাতে হবে।
খেলাফত আন্দোলন ডেমরা থানার সদ্য সাবেক আমীর মাওলানা আব্দুল মালেকের সভাপতিত্বে ও আব্দুর রহিম আল হাবিবীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সদস্য সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা সানাউল্লাহ হাফেজ্জী, সহকারী মহাসচিব আলহাজ্ব আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সী, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী সুলতান মহিউদ্দিন, প্রচার সম্পাদক মাওলানা সাইফুল ইসলাম সুনামগঞ্জী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং ঢাকা মহানগর আমীর মাওলানা মাহবুবুর রহমান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর সেক্রেটারি মোফাচ্ছির হোসাইন প্রমূখ।
সংগঠনের নায়েবে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, যার যা হক বা প্রাপ্য তাকে তা যথাযথভাবে দেয়াকে ইনসাফ বা ন্যায়পরায়ণতা বলা হয়। আর তার চেয়ে কম দেয়া জুলুম বা অবিচার, যা ইসলামে হারাম। ইসলামে ইনসাফ ও ন্যায়বিচারের গুরুত্ব বেশি। অমুসলিমদের সাথেও ইনসাফ করার আদেশ রয়েছে। খোলাফায়ে রাশেদার অনুকরণে ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম হলে অধিকার আদায়ে মুসলিম ও অমুসলিম কারোর আন্দোলন সংগ্রাম করার প্রয়োজন হবে না। সকলেই ন্যায্য অধিকার পাবে। জুলুম অত্যাচার লুটপাট সুদ ঘুষ দুর্নীতি ও সর্বপ্রকারের বৈষম্যের অবসান ঘটবে।
মাওলানা সানাউল্লাহ হাফেজ্জী বলেন, সরল-সঠিক পথে চলতে হলে সামাজিকভাবে সংগঠিত হতে হবে। একা চলার মাধ্যমে ব্যক্তিগত জীবনে দ্বীন মানতে পারলেও সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে দ্বীনের বিধান মেনে চলা সম্ভব হবে না। এজন্য হাফেজ্জী হুজুরের রেখে যাওয়া প্লাটফর্ম বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে এক ও নেক হয়ে কাজ করতে হবে।
আলহাজ্ব আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সী বলেন, আগামী নির্বাচনে খেলাফত আন্দোলনের প্রতীক বটগাছের পক্ষে ব্যাপকভাবে মাঠে নামতে হবে। ডেমরা-যাত্রাবাড়ী আসনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এলাকার ইমাম-খতীবদেরকে নির্ভয়ে ইসলামের পক্ষে কথা বলতে হবে।
মুফতী সুলতান মহিউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ৫৩ বছর পূর্বে কিন্তু এখনো জনগণের অধিকার ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা হয়নি। মানব রচিত তন্ত্রে-মন্ত্রে শান্তি পাওয়া যাবে না। রাসূল সা. এর আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমে আমাদের বাংলাদেশকে সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলা সম্ভব। তাই খেলাফত প্রতিষ্ঠায় গণজোয়ার সৃষ্টি করতে হবে।
মহানগর আমির মাওলানা মাহবুবুর রহমান বলেন, খেলাফত আন্দোলনের একটি গৌরবোজ্জ্বল অতীত, সংগ্রামী বর্তমান এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ রয়েছে। খেলাফত আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা যুগশ্রেষ্ঠ বুজুর্গ হযরত হাফেজ্জী হুজুর রহ. যার নজীর অন্য কোথাও নেই। বাতিলের বিরুদ্ধে সবার আগে খেলাফত আন্দোলন মাঠে নামে। এই আন্দোলনের কর্মীরা একদিন হযরত মাহদীর কাফেলায় শামিল হবে ইনশাআল্লাহ।
অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন, মহানগর নায়েবে আমীর মুফতী আখতারুজ্জামান আশরাফী, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী মাহফুজ মুসলেহ, মাওলানা মোশাররফ হোসেন রায়পুরী, মাওলানা শেখ সাদী, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা শাহাদাত হোসাইন, মাওলানা আতাউর রহমান মাহজী, ইঞ্জিনিয়ার মো: সাইফুল ইসলাম, মুফতী সানাউল্লাহ, মাওলানা আশরাফুল ইসলাম বেলাল প্রমূখ।