রহমত নিউজ 24 October, 2024 09:26 PM
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহসভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক বলেছেন, ছাত্র-জনতার দুর্বার আন্দোলন ও অনেক রক্তের বিনিময়ে খুনি হাসিনার ফ্যাসিবাদি সরকার উৎখাত হওয়ার পরও ষড়যন্ত্রকারীরা থেমে নেই। বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও জনগণের শত্রুরা দেশকে অস্থিতিশীল করে ফায়দা লুটতে এখনো নানামুখী চক্রান্ত চালাতে চাচ্ছে।
.
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রের মোকাবেলায় দেশপ্রেমি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীসহ বিশেষ করে যুবসমাজকে সজাগ থাকতে হবে। একই সাথে অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠ পরিবেশ নিশ্চিত করে জাতীয় নির্বাচনের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। গুম, খুন, ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি ও লুণ্ঠনকারীরা যেন নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে, সে ব্যাপারেও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
.
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) রাজধানী ঢাকার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে যুব জমিয়তের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক এসব কথা বলেন। যুব জমিয়তের সভাপতি মাওলানা তাফহীমুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।
.
যুব জমিয়তের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক আরও বলেন, আমাদের দলের প্রতিটি নেতাকর্মীকে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর নেজাম প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সরব ও সোচ্চার থাকতে হবে এবং এই লক্ষে গণমত তৈরিতে তৃণমূল পর্যায়ে জনসংযোগ বৃদ্ধি করতে হবে। ইসলাম, উম্মাহ ও দেশের স্বার্থে জমিয়তকে শক্তিশালী করতে হবে। এভাবে সংগঠনের সাথে সর্বস্তরের গণমানুষকে সম্পৃক্ত করা গেলে জমিয়তকে উপেক্ষা করার কেউ সুযোগ পাবে না। সমাজে কোন ধরণের অনৈসলামিক কর্মকাণ্ড, অবিচার ও শোষণ চালানোর সাহসও কারো হবে না।
.
সম্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তব্যে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত একজন মানুষের পুরো জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় হল তার যৌবনকাল। যৌবনকালের ইবাদত মহান আল্লাহর খুবই প্রিয়। কিন্তু দু:খজনক হল, পতিত ফ্যাসিবাদি সরকার যুব সমাজকে অপরাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। তারা যুব সমাজের হাতে তুলে দিয়েছে অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য। যার ফলে যুবসমাজের আদর্শিক ও নৈতিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় ঘটেছে। এরই পরিণাম স্বরূপ সমাজে খুন, ধর্ষণ, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, রাহাজানির সয়লাব চলছে।
.
তিনি আরও বলেন, যুব সমাজকে দক্ষ ও আদর্শ জনশক্তিতে পরিণত করতে হলে এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণে যুব সমাজ থেকে সুফল নিতে হলে পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতার মাধ্যমে আদর্শ ও চরিত্রবান হিসেবে তাদেরকে গড়ে তোলার বিকল্প নেই। সেক্ষেত্রে যুব জমিয়ত বাংলাদেশ-এর আজকের কর্মী সম্মেলনের মাধ্যমে দেশের যুবসমাজকে ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে শরীক হওয়ার জন্য যুব জমিয়তের পতাকাতলে সমবেত হতে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
.
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা তাফহীমুল হক বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী ৫৩ বছরে যারাই রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসেছে প্রত্যেকেই যুব সমাজকে অপরাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। যুব সমাজের হাতে তুলে দিয়েছে অস্ত্র, মাদকদ্রব্য। এসব জীবন বিধ্বংসী ক্ষতিকারক দ্রব্য সেবন ও অস্ত্রের অপব্যবহারের ফলে যুবসমাজের সামাজিক মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় ঘটছে। এমন দুরাবস্থা থেকে যুবসমাজকে উন্নিত করে আদর্শবান রূপে গড়ে তুলতে যুবজমিয়ত বাংলাদেশ দেশব্যাপী বহুমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
.
যুব জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ইসহাক কামালের সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন- জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ সভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস তালুকদার, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস কাসেমী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তাফাজ্জুল হক আজিজ, মাওলানা লোকমান মাযহারী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, অর্থ সম্পাদক মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী, প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীন, যুব জমিয়ত বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি মাওলানা মতিউর রহমান গাজীপুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুফতি গোলাম মাওলা, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের সভাপতি রিদওয়ান মাযহারী প্রমুখ। এছাড়াও সম্মেলনে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত যুব জমিয়তের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।