| |
               

মূল পাতা বিশেষ প্রতিবেদন ইলমি দুনিয়ায় অনন্য এক উচ্চতার মিনার মুফতী আব্দুল মালেক


ইলমি দুনিয়ায় অনন্য এক উচ্চতার মিনার মুফতী আব্দুল মালেক


শেখ আশরাফুল ইসলাম     18 October, 2024     10:22 PM    


ইলমের দুনিয়ায় অনন্য এক উচ্চতার মিনার মুফতী আব্দুল মালেক। বাংলাদেশে যে কয়জন বিতর্কের ঊর্ধে ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম রয়েছেন, তাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। জ্ঞান, গবেষণা ও পাণ্ডিত্যে দেশের আলেম সমাজের কাছে তিনি উপমা স্বরূপ। 

১৯৬৯ সালের ২৯ আগস্ট কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার সারাশপুর গ্রামে মুফতী আবদুল মালেক জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা শামসুল হক ছিলেন একজন প্রাজ্ঞ আলেম। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়।  ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন প্রখর মেধার অধিকারী।

তার শিক্ষাজীবনের শুরুটা হয় পরিবার থেকেই। প্রাথমিক শিক্ষালাভের পর তিনি চাঁদপুরের শাহরাস্তির খেড়িহর কওমি মাদরাসায় মিশকাত জামাত পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। এরপর তিনি ওই মাদরাসায় উচ্চতর হাদিস বিভাগে ভর্তি হয়ে তিন বছর মাওলানা আব্দুর রশীদ নোমানী (রহ.)-এর তত্ত্বাবধানে হাদিস অধ্যয়ন করেন। 

তারপর ইলম অন্বেষণে পারি জমান দেশ ছেড়ে বিদেশে। পাকিস্তানের করাচি বিননূরী টাউন জামিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়া থেকে দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) সম্পন্ন করেন। ১৯৯২ সালে তিনি দারুল উলুম করাচিতে ভর্তি হয়ে মুসলিম জাহানের বিখ্যাত স্কলার মুফতী তাকি উসমানির তত্ত্বাবধানে দুই বছর উচ্চতর ফিকাহ ও ফতোয়া বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। 

১৯৯৫ সালে তিনি সৌদি আরবে যান। আরব বিশ্বের নন্দিত আলেম ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে সাউদ ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের উসুলুদ্দীন অনুষদের অধ্যাপক শায়খ আব্দুল ফাত্তাহ আবু গুদ্দাহর তত্ত্বাবধানে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত সেখানে  কাটান। এসময় প্রায় আড়াই বছর হাদিসশাস্ত্রসহ অন্যান্য গবেষণামূলক কাজের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন মুফতী আব্দুল মালেক।

তারপর ইলমের মধু ছড়িয়ে দিতে নিজ দেশে ফিরে আসেন। মাদরাসা শিক্ষার্থীদের উচ্চতর গবেষণায় বাংলাদেশে তিনি যুক্ত করেন এক নতুন মাত্রা। ১৯৯৬ সালে তিনি এবং তার বড় ভাই মাওলানা আবুল হাসান আব্দুল্লাহসহ কয়েকজন আলেম মিলে ঢাকায় প্রতিষ্ঠা করেন উচ্চতর ইসলামি শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান মারকাযুদ দাওয়াহ আল ইসলামিয়া। এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাসচিব ও উচ্চতর হাদিস গবেষণা বিভাগের প্রধান হিসেবে অদ্যবধি দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। একই সাথে জামিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়া ঢাকার শায়খুল হাদিস হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। 

২০১২ সালে কওমি মাদরাসার সরকারি স্বীকৃতি প্রদানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা কমিশন গঠিত হলে এর সদস্য মনোনীত হন তিনি। ২০১৯ সালে তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের জাতীয় চাঁদ দেখা উপকমিটির প্রধান হিসেবে মনোনীত হন। 

মুফতী আব্দুল মালেকের রচিত গন্থের সংখ্যা মোট ১৬টি। তার তত্ত্বাবধানে প্রতি মাসে প্রকাশি হয় বহুল জনপ্রিয় মাসিক ইসলামিক পত্রিকা “আল-কাউসার”। তার লেখা কিতাব “আল-মাদখাল” সম্পর্কে মূল্যায়ন করতে গিয়ে দারুল উলুম দেওবন্দের মাওলানা সাঈদ আহমদ পালনপুরী (রহ.) বলেন, ‘আল্লাহর বিশেষ তওফিকপ্রাপ্ত ও ইলমব্যস্ত এই উস্তাদ ও শায়খের কিতাব আমাকে বিমোহিত ও বিস্মিত করে দিয়েছে।’

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন সর্বজনশ্রদ্ধেয় এই আলেম। এর আগে রাজধানীর শান্তিনগরের আজরুন কারিম জামে মসজিদের খতিবের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।