| |
               

মূল পাতা রাজনীতি ইসলামী দল বৈষম্যহীন সমাজ গড়া একমাত্র আল্লাহ প্রদত্ত জীবন ব্যবস্থার মাধ্যমেই সম্ভব : মাওলানা মামুনুল হক


বৈষম্যহীন সমাজ গড়া একমাত্র আল্লাহ প্রদত্ত জীবন ব্যবস্থার মাধ্যমেই সম্ভব : মাওলানা মামুনুল হক


রহমত নিউজ     28 September, 2024     10:23 PM    


বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় এবং মাদরাসার ছাত্ররা টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত একই কাতারে দাঁড়িয়ে সকল বিভেদের দেয়াল ভেঙ্গে ছাত্র জনতা ঐক্যের ভীত রচনা করেছে। আমার সন্তানেরা রাজপথে মিছিল করেছে। শ্লোগানে শ্লোগানে রাজপথ উত্তাল করে তুলেছে। যখনই আযানের সময় হলো সঙ্গে সঙ্গে একজন ভার্সিটির ছাত্র আল্লাহু আকবার বলে আযান দিলো আরেকজন ছাত্র সামনে দাঁড়িয়ে ইমামতি করলো। যে রাজপথে তারা সংগ্রাম করেছিলো, সে রাজপথের উত্তপ্ত পিচকে জায়নামাজ বানিয়ে আল্লাহর দরবারে সেজদায় লুটে পড়েছিলো। এটাই ছিলো ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বিপ্লবের চেতনার মুল প্রেরণা। এটাই ছিলো আগস্ট বিপ্লবের মুলশক্তি। এ শক্তিকে যদি কেউ ধ্বংস করতে চায়। এ বিপ্লব থেকে যদি কেউ আল্লাহর নাম মাইনাস করতে চায়। তাদের বিরুদ্ধে গর্জে ঊঠতে হবে এবং প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, পরিপূর্ণ বৈষম্যহীন ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ গড়া একমাত্র আল্লাহ প্রদত্ত জীবন ব্যবস্থার মাধ্যমেই সম্ভব। তাই মানব রচিত তন্ত্র-মন্ত্র বাদ দিয়ে আল্লাহ প্রদত্ত রাজনৈতিক ব্যবস্থা খেলাফতের দিকে সকলকে দাওয়াত দিচ্ছি।

আজ শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ জেলা ও ময়মনসিংহের নান্দাইল, ঈশ্বরগঞ্জ শাখার উদ্যোগে আয়োজিত পৃথক পৃথক গণ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

মাওলানা মামুনুল হক বলেন. শেখ হাসিনা বিগত ৫০ বছর রাজনীতি করেছে, প্রতিশোধ গ্রহণের রাজনীতি আর বিভাজনের রাজনীতি। শেখ হাসিনা প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েই রাজনীতি শুরু করেছিল। কিন্তু তার পিতা ৭১ থেকে ৭৫ এর ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশের ৩০ হাজার মায়ের কোল খালি করে গুম-খুন করেছিল। শেখ হাসিনা সে কথা বেমালুম ভুলে গিয়েছিল। এক তরফা প্রতিশোধ পরায়ণতার কারণে একজন মানসিক বৈকল্যের নাম শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের বিচার হওয়া উচিত এই কারণে যে, তারা মানসিক প্রতিবন্ধী, সাইকো রোগীকে এত বছর ধরে এ দেশের মানুষের কাঁধের ওপর বসিয়ে রেখেছিল। আর এই মানসিক বিকারগ্রস্ত শেখ হাসিনা অব্যাহতভাবে চেষ্টা চালিয়েছে বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য। তার চেষ্টা ছিল, তার সাধনা ছিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়া নয়, অন্য একটি দেশের তিলকওয়ালী মূখ্যমন্ত্রী হওয়ার।

তিনি আরও বলেন, পতিত স্বৈরাচারী শক্তি বাংলাদেশ থেকে পালিয়েগেছে। কোথায় গেছে। ভারত সরকার তাকে আশ্রয় দিয়েছে। দেওয়ারই কথা। কারণ ১৫ বছর ভারতের এজেন্ডা বস্তবাযন করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে শেখ হাসিনা। আর ভারত এদেশের মানুষের গণআকাঙ্খাকে বাদ দিয়ে প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে তার সেবাদাসী বাংলাদেশের ক্ষমতায় মসনদে বসিয়ে রাখার জন্য এদেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। আর্ন্তজাতিক বিশ্বের সামনে বাংলাদেশকে ছোটো করার জন্য সমস্ত আয়োজন ভারত করেছে। সরকারের কাছে দাবী আর্ন্তজাতিক আইন অনুযায়ী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ভারতে আছেন। কিভাবে বিচার হবে সেটা বিচারিক প্রক্রিয়া। সেখানে বসে তাদের সীমান্ত প্রহরীদের মাধ্যমে আমার দেশের নাগরিকদের গুলি করে হত্যা করার প্ররোচনা দিবেন। এদেশের মানুষ বরদাশত করবেনা।

তিনি আরও বলেন, যে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিলো ইনশাআল্লাহ এর উপর অর্থাৎ আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের শক্তির উপর অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস রেখেই মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিলো। মুক্তিযুদ্ধের কমিটমেন্ট ও অঙ্গীকার ছিলো নির্বাচনে বিজয় হলে দেশে কুরআন সুন্নাহ বিরোধী কোনো আইন প্রণয়ন করা হবে না। এ অঙ্গিকার করে ১৯৭০ সালে জনগণ থেকে ম্যান্ডেট নেওয়া হয়েছিলো। ৭০ এর নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ যাদেরকে ভোট দিয়েছিলো তাদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার কারণে ৭১ এর ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ করেছিলো। যে দেশের স্বাধীনতা আল্লাহর উপর আস্থা বিশ্বাস এবং কুরআন সুন্নাহ বিরোধী আইন না করার অঙ্গিকারের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়। কয়েক মাসের মধ্যে সে দেশের মানুষের চিন্তা চেতনা ঐতিহ্য ও অভিপ্রায়কে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে আরেকটি রাষ্ট্রের সংবিধানের মুলনীতিগুলোকে জোর করে এদেশের মানুষের উপর চাপিয়ে দিয়ে ভিনদেশী প্রেসকিপশনে সংবিধান রচনা করা হয়। ৭১ এর চেতনাকে জবাই করে ৭২ এর চেতনাকে ৭১ বলে বাংলাদেশের মানুষের উপর ছাপিয়ে দিয়েছিলো। মানুষ যখন ৭২ এর চেতনাকে অস্বীকার করেছে তখনই স্বৈরাচার হাসিনা আমার দেশের ছাত্রজনতাকে রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দিয়েছিলো। শেখ হাসিনা তার পেটুয়া বহিনী ছাত্রলীগ, যুবলীগ হাতুড়িলীগ দিয়ে ছাত্রজনতার উপর ঝাপিয়ে পড়েছিলো। ছাত্রজনতাকে রক্তাক্ত করা হয়েছিলো। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সজাগ থাকতে হবে। ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। 

সকালে নেত্রকোনা মোক্তারপুর মাঠে জেলা সভাপতি মাওলানা জিয়াউর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আসাদুর রহমান আকনের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী সহ-বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান প্রমুখ।

বিকালে কিশোরগঞ্জ জসিম উদ্দীন হাই স্কুল মাঠে জেলা সভাপতি মাওলানা আব্দুল করিমের সভাপতিত্বে ও সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা উসমান গণী কাগজীর পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, সহ-বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমানকেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ হাদী।

বাদ মাগরিব গাজীপুরের রাজবাড়ী মাঠে জেলা সভাপতি মাওলানা মাসউদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা রুহুল আমীন কাসেমীর পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন যুগ্মমহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মুসা, মাওলানা মুহাম্মদ ফয়সাল, ইসলামী ছাত্র মজলিসের সেক্রেটারী জেনারেল মুহাম্মদ মাহদী হাসান প্রমুখ।