মফস্বল ডেস্ক 16 August, 2024 07:42 PM
কারারক্ষিদের পিটুনিতে একজন যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত কয়েদীর মৃত্যুর ঘটনায় রংপুর কারাগারে ব্যপক বিক্ষোভ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে বিপুলসংখ্যক সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
তারা ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিনি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনয় অভিযুক্ত দুই কারারক্ষিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি।
রংপুরের ডিসি মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান যমুনা জানান, সকাল ৮টার দিকে কারাগার ক্যাম্পাসের গাছ থেকে আমরা পারা নিয়ে প্রথমে কথাকাটাকাটি হয় বন্দি রফিকুল ইসলামের সাথে বাহারাম বাদশা নামের আরেক কয়েদীর। এ সময় রফিকুলকে ব্যপক মারধোর করে বাহারুল। এ ঘটনা দেখে বাহারাম বাদশাকে (কয়েদি নম্বর ৯৮০০) বেদম মারপিট ও পিটুনি দেয় দুই কারারক্ষি। গুরুতর আহত অবস্থায় সকাল সাড়ে ৮টায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে ব্রথ ডেড (হাসপাতালে ভর্তির আগেই মৃত্যু) ঘোষণা করেন। বাহারাম বাদশা রংপুরের পীরগঞ্জের বগেরবাড়ি এলাকার বাহাদুর মিয়ার ছেলে। বাহারাম ২০০৮ সালের একটি হত্যার মামলার (জিআর ২১৯/৮) যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত কয়েদী। ২০১১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর আদালত বাহারামসহ একই পরিবারের চারজনের যাবজ্জীন দণ্ডাদেশ দেয়।
ডিসি মোবাশ্বের হাসান আরো জানান, বাহারামের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সব কয়েদীরা উত্তেজিত হয়ে উঠে। দুপুরে গোসলের সময় সকল কয়েদী একত্রিত হয় মারধোরকারী কারারক্ষীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকে তারা। এ সময় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে কারাগারে। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমাকে জানালে আমি সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নেই। দুপুর সাড়ে ১২ টায় বিপুলসংখ্যক সেনাবাহিনী, র্যাব ও পুলিশ সদস্য কারাগারে অবস্থান নেয়। উত্তেজনা থামাতে ছোড়া হয় ফাঁকা গুলি। একপর্যায়ে সেখানে আসেন ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল শাকিল হাসান। তিনি বন্দীদের উত্তেজনা প্রশমিত করতে তাদের সাথে কথা বলেন। এ সময় বন্দিরা বাহারাম হত্যাকারীদের বিচার, খাওয়া দাওয়া এবং ওষুধপত্র নিম্মমানের বিষয়টি জিওসির কাছে তুলে ধরেন। এছাড়া কারাগারের বিভিন্ন অনিয়ম এবং কারারক্ষীদের কথায় কথায় মারপিট ও দুর্ব্যবহারের বিষয়ে অভিযোগ করেন। জিওসি তাদের কথা শোনেন। দুপুর ১টায় জিওসি মেজর জেনারেল শাকিল হাসান বন্দিদের সামনে তাৎক্ষণিকভাবে ডিসির নেতৃত্বে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি করে দেন। ঘটনাস্থলেই সাময়িক বরখাস্ত করা হয় নায়েক শাহজাহান আলী এবং কারারক্ষি মোতালেব হোসেনকে। বিষয়টি কারারক্ষিদের জানিয়ে দেয়া হলে উত্তেজনা থেমে যায়। কারারক্ষিরা বিক্ষোভ থামিয়ে দুপুরের খাওয়া দাওয়া করেন। বেলা দেড়টার দিকে কারাগার থেকে চলে যান জিওসি।
ডিসি মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান আরো জানান, কারাগারের ভেতরে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। কোন বন্দী চলেও যায়নি। আমার নেতৃত্বে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি পুরো ঘটনাটির নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত করবে। পরিস্থিতি শান্ত আছে।