রহমত নিউজ 17 July, 2024 05:41 PM
জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তিনি জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে আসছেন। এই ইস্যুতেই সরকারপ্রধান কথা বলবেন তা অনুমেয়।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর নিয়ে গত রোববার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তার একটি বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে আন্দোলন পরিস্থিতি। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কোটা পাবে না, তো কি রাজাকারের নাতিরা পাবে? বিচিত্র আমাদের দেশ, বিচিত্র আমাদের মানসিকতা— বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে এদিন রাতেই প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রতিবাদ ও প্রত্যাহারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা।
পরদিন সোমবার কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে দুই পক্ষের দুই শতাধিক আহত হন। এদিন রাতেই তারা ঘোষণা দেয়, পরদিন মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করার। ছাত্রলীগও দুপুরে পাল্টা প্রতিবাদ সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়।
গতকাল মঙ্গলবার দুই পক্ষের ঘোষিত কর্মসূচি ছাপিয়ে সারাদেশে সংঘর্ষের ঘটনা-ই আলোচনায় আসে। দিনে ৬ জনের নিহত হয়। এর মধ্যে ঢাকায় ২, চট্টগ্রামে ৩ ও রংপুরে ১ জন নিহত হয়েছেন। পরে দিবাগত রাতে ঢাকায় আরও একজন নিহত হন।
সৃষ্ট এই পরিস্থিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে কোটাপক্ষের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হল থেকে বের করে দিয়েছে সাধরণ শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি তাদের দাবির প্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে প্রভোস্ট।
এছাড়া, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় মঙ্গলবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সিটি করপোরেশন এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধের কথাও জানায় গণ ও প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আর সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা দেয় মঞ্জুরি কমিশন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও সেই পথে হেঁটেছে।
উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বহালে গত ৫ জুনে রায় দেন হাইকোর্ট। তবে, কোটাব্যবস্থা বাতিলে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবি তুলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। গত ৭ জুলাই থেকে শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশসহ নানা কর্মসূচি পালন করে। পরে গত ১৪ জুলাই রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপিও দেন তারা।
গত ১০ জুলাই হাইকোর্টের রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতিবস্থাও দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আগামী ৭ আগস্ট এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও সরকার পক্ষ থেকে আজ লিভ টু আপিল করা হয়েছে।
কোটা সংস্কারে শিক্ষার্থীদের এক দফা দাবি হলো: সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে সকল প্রকার অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাশ করে কোটা পদ্ধতিকে সংশোধন করতে হবে।