রহমত নিউজ 23 June, 2024 07:27 AM
এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কোনো চাপে নেই।
রোববার (২৩ জুন) দুপুরে রাজধানীর মিন্টুরোডে অবস্থিত ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপি অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
মিন্টুর রিমান্ড শেষ হওয়ার আগে তাকে কারাগারে কেন পাঠিয়ে দিয়েছে ডিবি? এই প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, এখানে আইনের কোনো ব্যত্যয় হয়নি। তদন্তকারি কর্মকর্তা যখন কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তখন তার সেটিসফেকশনের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। তদন্তকারি কর্মকর্তা যদি মনে করেন কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তার কাছ থেকে আপাতত দৃষ্টিতে আর কিছু জানার নেই। তিনি সকল কিছু জানতে পেরেছেন। তখন তিনি আদালতের মাধ্যমে আসামিকে জেলহাজতে পাঠাতে পারেন। আবার বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে তদন্তকারি কর্মকর্তা যদি মনে করেন ওই আসামিকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন তখন তিনি জিজ্ঞাসাবাদের সুযোগ পাবেন।
ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিন্টুকে গ্রেপ্তারের পর থেকে ডিবি কোনো চাপে আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, মতিঝিলের টিপু হত্যা, কামরাঙ্গীচরের শিল্পপতি হত্যাকাণ্ড ও ফারদিন হত্যাকাণ্ডসহ অনেক হত্যাকাণ্ড কিন্তু ঢাকা শহরে ঘটেছে। ডিবির চৌকস টিম কিন্তু প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের মোটিভ বের করেছে। এমপি আনার কলকাতায় হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এই হত্যাকাণ্ডের ক্লু বের করতে ডিবি পুলিশের দল রাত-দিন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের টিম নেপালে গেছে এবং আমাদের তথ্যের ভিত্তিতে নেপালে সিয়াম গ্রেপ্তার হয়েছে। এ ছাড়া কলকাতায় গিয়েও আমরা বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছি আলামত উদ্ধারে। এই হত্যাকাণ্ডের মূল কিলার শিমুল ভূঁইয়াসহ আরও অনেককে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। এরমধ্যে চারজন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আমরা যদি চাপ অনুভব করতাম তাহলে এই মামলায় আমাদের এত অ্যাচিভমেন্ট হতো না।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একাধিকবার বলেছেন কোনো চাপ নেই এই মামলার তদন্ত কাজে। তিনি আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যেন নিরপেক্ষভাবে মামলার তদন্ত করা হয়। ডিবি নিরপেক্ষভাবে এ মামলার তদন্ত কাজ করছে। এ মামলায় কোনো নিরপরাধ ব্যক্তিকে হয়রানি করা হবে না এবং কাউকে অযথা ডাকাডাকি করা হবে না। সুস্পষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।
আদালতে স্বীকারোক্তিতে গ্যাস বাবু বলেন, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিন্টু তার কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে কোথাও ছুড়ে ফেলেছেন, এই মোবাইলগুলো উদ্ধারে ডিবি পুলিশ কোনো তৎপরতা চালাচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, আলামত নষ্ট করার তথ্য আমরাও জিজ্ঞাসাবাদে পেয়েছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে একটি চিঠি দিয়েছি। যেহেতু গ্যাস বাবুর মোবাইলে ডিজিটাল এভিডেন্স রয়েছে তাকে আমরা আরও জিজ্ঞাসাবাদ করবো এবং মোবাইলগুলো কোথায় ফেলে দিয়েছেন সেগুলো উদ্ধারের চেষ্টা করব।
আখতারুজ্জামান শাহিনকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কোনো অগ্রগতি আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলার তদন্ত কাজ অনেকটা কনক্লুসিভ পর্যায়ে, আমরা অনেককে গ্রেপ্তার করেছি। কিছু কিছু নাম আমরা পেয়েছি তাদেরও গ্রেপ্তারে চেষ্টা করছি। এ ঘটনার মাস্টারমাইন্ড শাহিন যুক্তরাষ্ট্রে আছে। যেহেতু যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের একটা বন্দী বিনিময় চুক্তি আছে সেহেতু আমরা ভারতীয় পুলিশকে বলেছি যেন তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরিয়ে আনা হয়। পাশাপাশি বাংলাদেশে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসে আমরা টিম নিয়ে গিয়ে কথা বলেছি।
এ ছাড়া পুলিশ সদর দপ্তরের এমসিবি শাখার মাধ্যমে আমরা ইন্টারপোলকে চিঠি দিয়েছি। শাহীনকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা কাজ করছি। আরও এক-দুজন আসামি বাকি রয়েছে, তাদেরকে গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা করছি। আশা করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি হবে।
এমপি আনারের মেয়ে ডরিন ডিএনএ নমুনা দেওয়ার জন্য কলকাতায় যাওয়ার কথা কি না জানতে চাইলে হারুন বলেন, ভারতীয় পুলিশ দূতাবাসের মাধ্যমে ডরিনকে জানিয়েছে যাওয়ার জন্য। ডরিনের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, সে মনে হয় কয়েক দিন ধরে জ্বরে ভুগছে। তার স্বাস্থ্য ভালো হলে তিনি শিগগিরই ভারতে যাবেন।