মূল পাতা আন্তর্জাতিক গাজাকে বসবাসের অযোগ্য করে ফেলা হয়েছে : জাতিসংঘ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক 14 June, 2024 07:51 AM
টানা নয় মাস ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জার পাশাপাশি হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে হাসপাতালও। গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও ইতোমধ্যে ভেঙে পড়েছে।
এরসঙ্গে অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটিতে দেখা দিয়েছে তীব্র মানবিক সংকট। পরিস্থিতি এতোটাই খারাপ যে, গাজাকে বসবাসেরই অযোগ্য করে ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনে নিযুক্ত জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, উপকূলীয় গাজা উপত্যকা একসময় ‘প্রাণবন্ত শহর’ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন ইউএনআরডব্লিউএ-র প্রধান ফিলিপ লাজারিনি। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এই বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি গাজার উত্তরাঞ্চলে ধ্বংসযজ্ঞের ভিডিও ফুটেজও পোস্ট করেছেন তিনি। শুক্রবার (১৪ জুন) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, ‘সীমাহীন ধ্বংসযজ্ঞ এবং জনশূন্যতার মাধ্যমে গাজাকে বসবাসের অযোগ্য করে ফেলা হয়েছে।’
এদিকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় আরও অন্তত ৩০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ভূখণ্ডটিতে মোট নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৩৭ হাজার ২৩২ জনে। বৃহস্পতিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামলায় আরও ৮৫ হাজার ৩৭ জন আহত হয়েছেন। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছে না।
মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।