রহমত নিউজ 24 February, 2024 05:35 AM
খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ বলেছেন, দেশে লক্ষ লক্ষ যুবক আজ বেকার। বেকার সমস্যা সমাধানে সরকারের কার্যকর উদ্যোগ নেই। বরং বেকারত্বের অভিশাপে হতাশাগ্রস্থ হয়ে মাদকাসক্ত হয়ে পরেছে যুবকরা। আজকে সরকারী চাকুরী-বাকরিতে যোগ্যতার বালাই নেই। ঘুষ, স্বজন- প্রীতি, দলীয় পরিচয় ছাড়া চাকুরী হয়না। যুব সমাজের নৈতিকতা ধ্বংস করার জন্য অপসংস্কৃতি, অশ্লীলতা ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। এ অবস্থার অবসান ঘটাতে হবে। দেশকে গড়তে হলে যুবকদের দরকার। অন্যায় প্রতিরোধেও যুবকদের দরকার। আগামীর সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে যুবকদের এগিয়ে আসতে হবে। ইসলামী যুব মজলিসের ভাইয়েরা আগামীর বাংলাদেশ গড়ার কারিগর হবে- এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস। তিনি আরো বলেন- দেশ আজ চরম সংকটের মধ্যে আছে। একতরফা ডামি নির্বাচনে এই সরকার ক্ষমতা দখল করে দেশকে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়েই চলছে।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ইঞ্জিনিয়াার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ইসলামী যুব মজলিসের প্রথম জাতীয় যুব কনভেনশনে প্রধান অতিথির বক্তবে তিনি একথা বলেন।
ইসলামী যুব মজলিসের আহ্বায়ক ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সলের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব তাওহীদুল ইসলাম তুহিনের সঞ্চালনায় কনভেনশনের উদ্বোধন করেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের। বিশেষ অতিথির বক্তব্য পেশ করেন খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর অধ্যাপক মাওলানা আবদুল কাদির সালেহ, খেলাফত মজলিসের যুগ্মমহাসচিব এডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন, মুহাম্মদ
মুনতাসির আলী। বক্তব্য রাখেন খেলাফত মজলিসের যুগ্মমহাসচিব অধ্যাপক মো: আবদুল জলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাদ্দিস শেখ মুহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, প্রশিক্ষণ ও প্রকাশনা সম্পাদক অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম, ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিলাল আহমদ চৌধুরী, শ্রমিক মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রভাষক মুহাম্মদ আবদুল করিম, খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সভাপতি অধ্যঅপক মাওলঅনা আজীজুল হক, ঢাকা মহানগরী উত্তর সভাপতি মাওলানা সাইফুদ্দিন আহমদ খন্দকার, ইসলামী যুব আন্দোলনের সহসভাপতি আতিকুর রহমান মুজাহিদ, যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান-সহ সারাদেশ থেকে আগত যুব প্রতিনিধিগণ বক্তব্য রাখেন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, সত্য সুন্দর বিপ্লবের জন্য যুব সমাজকে সংগঠিত করতে হবে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় ও সত্যের সংগ্রামে যুবকদের দৃঢ় ভূমিকা পালন করেত হবে। সমস্ত নবী-রাসুলগণের সঙ্গী-সাথীর বেশীরভাগই ছিলেন যুবক। যুবকরা সমাজ পরিবর্তনে ত্যাগ-কুরবানী নজরানা পেশ করতে পারে। রাজ শক্তির মোকাবেলা করে সামনে এগিয়ে যেতে পারে। তাই দুনিয়ার কল্যাণ ও আখিরাতের মুক্তির জন্য ইসলামী যুব মজলিসকে ভূমিকা পালন করতে হবে।
কনভেনশনে তাওহিদুল ইসলাম তুহিনকে সভাপতি ও সোহাইল আহমদকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষনা করেন নর্বাচন কমিশনের আহŸায়ক ড. আহমদ আবদুল কাদের। এক বছরের জন্য গঠিত ইসলামী যুব মজলিসের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হচ্ছে: সভাপতি- তাওহিদুল ইসলাম তুহিন, সহসভাপতি- হাফেজ মুহিউদ্দিন জামিল, সাধারণ সম্পাদক- মাওলানা সোহাইল আহমদ, সহ- সাধারণ সম্পাদক- মুফতি শেখ শাব্বীর আহমাদ, মাওলানা ফরিদ উদ্দিন, অর্থ সম্পাদক- আহমদ হোসাইন, প্রশিক্ষণ সম্পাদক- মাওলানা আবুল হোসাইন, অফিস ও প্রচার সম্পাদক- মাওলানা আজিজ উল্লাহ আহমদী, সাংগঠনিক সম্পাদক- জামিরুল ইসলাম, প্রকাশনা সম্পাদক- হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ সালমান, তথ্য ওপ্রযুক্ত সম্পাদক দেওয়ান তানজীল আহমদ, সদস্য- মুহাম্মদ শাহিন, এডভোকেট তাইফুর রহমান, হাফিজ আবু তাহের, ইঞ্জিনিয়ার মেহেদী হাসান সাকী, ইঞ্জিনিয়ার ইমরান আসাদ, ইকবাল হোসাইন কয়সর, প্রভাষক মাইদুল ইসলাম, আবু বকর সিদ্দিক আহাদ।
কনভেনশনে গৃহীত ঘোষণায় ৮টি দাবী পেশ করা হয়। দাবীগুলো হলো ১. যুবকদের ইসলামী আদর্শে উজ্জীবিত করা ও দেশপ্রেমে উজ্জীবিত করার ব্যবস্থা করা ২. কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে রাষ্ট্রীয় বাজেটে অগ্রাধিকার থাকতে হবে। বেকার যুবকদের ভাতা দিতে হবে। ৩. যুব উদ্যোক্তাদের জন্য সুদমুক্ত ও জামানতবিহীন সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। ৪. সবধরণের মাদক নিষিদ্ধ করতে হবে, অশ্লীল বিনোদন বন্ধ করতে হবে। ৫. গ্রাম ও মসজিদভিত্তিক যুব তালিম ক্যাম্প চালু করতে হবে। ৬. সামাজিক ও রাজনৈতিক অসৎ উদ্দেশ্যে যুবকদের ব্যবহার বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। ৭. জাতীয় পলিসি নির্ধারণে যুবকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক ্ঐক্য ও কর্মকাঠামো নির্মাণ করতে হবে। ৮. শিক্ষিত, স্বল্পশিক্ষিত বেকার যুবকদের অবস্থাভেদে ত্যথ-প্রযুক্তি ও কর্মমুখী বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি তৈরি ও বিদেশে শ্রম বাজার বিস্তৃত করার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।