রহমত নিউজ 13 February, 2024 10:34 PM
পাঠ্যপুস্তকে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক বিষয়বস্তু বরদাশত করা হবে না। মুসলমানদের দেশে শিক্ষা কারিকুলামে ভিনদেশি সংস্কৃতি জুড়ে দেয়ার পরিণাম শুভ হবে না। চক্রান্তকারীদের মাধ্যমে পাঠ্যপুস্তকে সুপরিকল্পিতভাবে ইসলামবিরোধী বিষয়বস্তুর অনুপ্রবেশ ঘটানো হয়েছে। ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত এক শ্রেণির ধর্মবিরোধী গোষ্ঠী দেশের মুসলিম প্রজন্মের মন থেকে ইসলামী ধ্যান-ধারণাকে মুছে দেয়ার নীল নকশা বাস্তবায়নে উঠে পরে লেগেছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় শিক্ষাক্রমের অধীনে সংকলিত পাঠ্যপুস্তককে তাদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর তোপখানা রোডস্থ ফেনী সমিতি মিলনায়তনে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব শায়েখ সাজিদুর রহমানের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২৪ প্রোগ্রামের আওতায় জাতীয় শিক্ষানীতি-২০২৩ এর উপর ভিত্তি করে সংকলিত পাঠ্যপুস্তক ইতোমধ্যেই দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। রাষ্ট্রের নাগরিকদের উপর সে দেশের জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা, শিক্ষানীতি বা শিক্ষাক্রমের বিপুল প্রভাব থাকে। নাগরিকদের চিন্তা-চেতনা, ধ্যানধারণা ও নীতি-নৈতিকতা গঠনে সে রাষ্ট্রের জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার সু-গভীর প্রভাবের বিষয়টি অনস্বীকার্য। এ কারণেই রাষ্ট্রের জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি সে দেশের সচেতন নাগরিকদের সজাগ দৃষ্টি ও অনেক প্রত্যাশা থাকে। বিশেষ করে আলেম সমাজ ও তৌহিদী জনতার প্রাণের দাবি থাকে, জাতীয় শিক্ষাক্রম কোনোভাবেই যেন রাষ্ট্রীয় ধর্ম ইসলাম এবং ইসলামি চিন্তা-চেতনার বিপরীত না হয়। জাতীয় শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে ইসলামি আদর্শ ও নীতি-নৈতিকতার সাথে সাংঘর্ষিক কোন চিন্তা যেন আমাদের সন্তান ও পরবর্তী প্রজন্মকে প্রভাবিত করতে সক্ষম না হয়।
তিনি বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছি, ইসলামফোবিয়ায় আক্রান্ত এক শ্রেণির ধর্ম বিরোধী গোষ্ঠী এদেশের মুসলিম প্রজন্মের মন ও মানস থেকে ইসলামি ধ্যান-ধারণাকে চিরতরে মুছে দেওয়ার নীল নকশা বাস্তবায়নে মরিয়া হয়েউঠে পরে লেগেছে। আর তারা এই হীন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় শিক্ষাক্রমের অধীনে সংকলিত পাঠ্যপুস্তক কে তাদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে। পাঠ্যপুস্তক থেকে ইসলাম ঘনিষ্ঠ বিষয়বস্তুকে বাদ তো দিয়েছেই, অধিকন্তু ইসলাম বিরোধী বিষয়বস্তুকে সুপরিকল্পিতভাবে অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে দিয়েছে।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, মহাসচিব শায়খ সাজিদুর রহমান, কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মহিউদ্দিন রাব্বানী, সহসভাপতি মুফতি আহমদ আলী কাসেমী, সহসভাপতি আবদুল কাইয়ুম সুবহানী, মাওলানা মাহফুজুল হক, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাবাদী, যুগ্ম মহাসচিব হারুন ইজাহার, যুগ্ম মহাসচিব মীর ইদ্রিস, মুজিবুর রহমান হামিদী, সহকারী মহাসচিব আতাউল্লাহ আমিন, অর্থ সম্পাদক মুনির হোসাইন, সহ অর্থ সম্পাদক কামাল উদ্দিনসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে ট্রান্সজেন্ডার মতাদর্শ ও বর্তমান জাতীয় শিক্ষা কারিকুলামে জাতির ভবিষ্যৎ শীর্ষক সেমিনারের ঘোষণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত দাবি সমূহ-
১. জাতীয় শিক্ষা কারিকুলাম থেকে ইসলামের সাথে সাংঘর্ষিক সকল বিষয় বাদ দিতে হবে।
২. ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তির অধিকার সুরক্ষা আইন ২০২৩ (খসড়া) প্রণয়ন করা যাবে না।
৩. পঞ্চগড়ে কাদিয়ানিদের সালানা জলসা বন্ধ এবং তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে।
৪. অবিলম্বে মাওলানা মামুনুল হকসহ সকল কারাবন্দি আলেমদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে এবং ২০১৩ সাল থেকে অদ্যাবধি হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতাকর্মীদের নামে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
৫. হেফাজতের ১৩ দফা বাস্তবায়নে দ্রুত কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে।