বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে খেলাফত আন্দোলনের বিক্ষোভ

ফিলিস্তিনে দখলদার ইসরাইল কর্তৃক চরম মানবাধিকার লংঘন, নারী-শিশু-বৃদ্ধসহ নির্বিচারে মানুষ হত্যা; কাশ্মীর, আরাকান, জিনজিয়াং-সহ আফ্রিকার দেশসমূহে মুসলিম নিধন; ভারতে হিন্দুত্ববাদীদের দ্বারা মুসলমানদের উপর নির্যাতন, নামাজ-রোজাসহ ধর্মীয় কার্যসম্পাদনে বাধা প্রদান; আলেম-উলামা ও ইসলামপন্থীদের উপর দমন-নিপীড়নসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আগ্রাসী শক্তি কর্তৃক ভয়াবহ মানবাধিকার লংঘনের প্রতিবাদে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন।

রবিবার, ১০ ডিসেম্বর বিকালে ৭৫তম বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইটে  এই কর্মসূচি পালিত হয়।

খেলাফত আন্দোলনের আমীরে শরীয়ত আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও ঢাকা মহানগর আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী,  সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী সুলতান মহিউদ্দিন, প্রচার সম্পাদক মাওলানা সাইফুল ইসলাম সুনামগঞ্জী, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মুফতী আফম আকরাম হোসাইন ও মাওলানা আখতারুজ্জামান আশরাফী। এসময় উপস্থিত ছিলেন, খেলাফত আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা সানাউল্লাহ হাফেজ্জী, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মাওলানা মাহবুবুর রহমান, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোফাচ্ছির হোসাইন, মাওলানা কামরুল ইসলাম ও মুফতী আবুল হাসান কাসেমী প্রমূখ।

সভাপতির বক্তব্যে আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী বলেন, সারাবিশ্বে মানবাধিকারের ফেরিওয়ালা দাবিদাররাই আজ দেশে দেশে চরম মানবাধিকার লংঘন করছে। ইসরাইল ফিলিস্তিনে চরম মানবাধিকার লংঘন করে যাচ্ছে কিন্তু বিশ্বমোড়লরা নীরব দর্শকের ভুমিকা পালন করছে। সারাবিশ্বে মানবাধিকার লংঘনের বিরুদ্ধে আজকে আমাদের এই সমাবেশ। 

দেশের বর্ষিয়ান এই আলেম আরও বলেন, মুসলিমবিশ্বকে সব ধরনের জুলুম-অত্যাচার ও মানবাধিকার লংঘনের বিরুদ্ধে গর্জে উঠতে হবে। মুসলমানরা গর্জে উঠলে এবং মাঠে নামলে প্রকৃত অর্থে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা হবে।

মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী বলেন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলামই একমাত্র কার্যকর ভুমিকা পালন করতে পেরেছে। ইসরাইলী বাহিনী ক্রমাগত মানবাধিকার লংঘন করে যাচ্ছে কিন্তু সারাবিশ্ব নীরব ভুমিকা পালন করছে। বদরের যুদ্ধে ৩১৩ জনের বাহিনীই মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় যথেষ্ট ছিল। আজ বিশ্বের ২০০ কোটি মুসলমান একসাথে ইসরাইলের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে ইসরাইলী বাহিনী ও তার দোসররা পালাবার পথ খুঁজে পাবে না। 

মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেন, আজ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। এই দিবসটি যারা প্রবর্তন করেছে তারাই আজ চরমভাবে মানবাধিকার লংঘন করছে। ইসরাইল প্রতি ঘন্টায়  ১০-১২ জন শিশুকে হত্যা করছে। হাসপাতালে, আশ্রয়শিবিরে, উদ্বাস্তু ক্যাম্পে হামলা চালাচ্ছে যা শুধু মানবাধিকার লংঘনই নয় বরং যুদ্ধাপরাধের শামিল। বিনা বিচারে মানুষ হত্যা, মিথ্যা মামলায় মানুষকে জেলে আটকে রাখাও মানবাধিকারের লংঘন। মানবাধিকার লংঘনকারীরা তাদের অত্যাচার না থামালে মজলুম জনতা একসময় জেগে উঠবে এবং জালেমদের কবর রচনা করবে।

মুফতী সুলতান মহিউদ্দীন বলেন, সারাবিশ্বের কোথাও প্রকৃত মুসলমানদের দ্বারা মানবাধিকার লংঘিত হচ্ছে না। যেখানেই মানবাধিকার লংঘিত হচ্ছে সেখানেই রয়েছে ইহুদী-খ্রিস্টানদের নাপাক হাত। তিনি বাংলাদেশে আলেম-উলামাদের উপর মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে আটকে রেখে তাদের মানবাধিকার লংঘন করা হচ্ছে উল্লেখ করে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে পল্টন মোড়, বিজয়নগর পানির ট্যাংক এলাকা প্রদক্ষিণ করে অত্যাচারিতদের মুক্তি এবং অত্যাচাকারীদের পতন কামনা করে মোনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।